ক্যান্সার সচেতনতা দিবসে অ্যাপোলো মাল্টিস্পেশিয়ালিটি হাসপাতালের কলকাতার সিনিয়র কনসালট্যান্ট – ইউরো-অঙ্কোলজি ডঃ তরুণ জিন্দালের বার্তা

এই নভেম্বরে যখন ভারত জাতীয় ক্যানসার সচেতনতা মাস পালন করছে এবং ৭ নভেম্বর ক্যানসার সচেতনতা দিবস হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, তখন রোগীদের ক্যানসার চিকিৎসা সম্পর্কে দৃষ্টিভঙ্গিতেও একটি বড় পরিবর্তন ঘটছে। তথ্য খতিয়ে দেখলে দেখা যাবে, বহু রোগী—বিশেষত অর্ধ-নগরায়ন ও ছোট শহরগুলোর—রোবট-সহায়তাধীন অস্ত্রোপচারের মতো উন্নত চিকিৎসা বিকল্প সম্পর্কে ভুল ধারণা রাখেন। এই জ্ঞানগত ফাঁক প্রায়ই সময়মতো ও কার্যকর চিকিৎসা সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিলম্ব ঘটায়।

এই প্রসঙ্গে অ্যাপোলো মাল্টিস্পেশিয়ালিটি হাসপাতাল, কলকাতার সিনিয়র কনসালট্যান্ট – ইউরো-অঙ্কোলজি ডঃ তরুণ জিন্দাল মনে করেন যে, ভারতের ক্যানসার সচেতনতার পরবর্তী পর্যায়ে রোগীদের উন্নত কলাকৌশল যেমন রোবটিক সার্জারির অনকোলজিকাল সুবিধা সম্পর্কে শিক্ষিত করা জরুরি—যা টিস্যু সংরক্ষণ, জটিলতা কমানো, দ্রুত সুস্থতা আর অপারেশনের পর জীবনের মান উন্নত করতে সহায়ক।

পাশাপাশি তিনি এও জানান, ‘পশ্চিমবঙ্গ ও উত্তর-পূর্বে ক্যান্সারের প্রাদুর্ভাব এখনও উচ্চ পর্যায়ে আছে, কিন্তু উন্নত চিকিৎসা বিকল্পগুলির বিষয়ে সচেতনতার মাত্রা ভীষণ রকমই আলাদা। আর তা নজরে আসে বিশেষ করে ছোট উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলিতে। কিছু রাজ্যে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে উৎসাহজনক অগ্রগতি দেখা গেলেও, এই অঞ্চলে জ্ঞানশূন্যতা এখনও ব্যাপকভাবে বিরাজমান। তাই লক্ষ্যভিত্তিক ক্যান্সার সচেতনতা উদ্যোগগুলি গুরুত্বপূর্ণ।’

এর পাশাপাশি তাঁর সংযোজন, ‘আমরা ক্রমবর্ধমান লক্ষ্য করছি যে উত্তর-পূর্বের রোগীরা উন্নত ক্যান্সার চিকিৎসার জন্য কলকাতায় ভ্রমণ করছেন, যেখানে দা ভিঞ্চির মতো উন্নত রোবটিক সার্জারি প্রযুক্তি অনকোলজিক ফলাফল উন্নত করতে এবং দ্রুত সুস্থতা ফিরিয়ে দিতে সক্ষম করে। বাস্তবে, মায়ানমারসহ প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে, যা কলকাতার উচ্চমানের, প্রযুক্তিনির্ভর ক্যান্সার চিকিৎসায় বিশ্বাসের প্রতিফলন।’

সঙ্গে তিনি এও জানান, রোবট-সহায়তাপ্রাপ্ত সার্জারি ক্যান্সার চিকিৎসায় মৌলিক পরিবর্তন এনেছে এবং দ্রুতই এটি চিকিৎসার মানদণ্ড হয়ে উঠছে। আমার প্রচর্চায় দেখেছি যে দা ভিঞ্চির মতো প্রমাণভিত্তিক প্রযুক্তি উচ্চ-নির্ভুলতার পদ্ধতি সম্ভব করে যা টিস্যু ক্ষতি কমায়, রক্তক্ষরণ কমায় এবং পুনরুদ্ধারের সময়কাল উল্লেখযোগ্যভাবে সংক্ষিপ্ত করে। রোগীরা অনেক দ্রুত তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসেন এবং প্রায়ই দুই দিনের মধ্যে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পান এবং প্রায় এক সপ্তাহের মধ্যে কাজে ফেরেন, যেখানে প্রচলিত অস্ত্রোপচারের পরে প্রায় এক মাস সময় লাগতো। এই ফলাফলগুলো শুধুমাত্র জীবনমান উন্নত করে না, তারা প্রকৃত সামাজিক-অর্থনৈতিক সুবিধাও দেয়। তবু, অনেকেই এখনও মনে করেন খোলা অস্ত্রোপচারই তাদের একমাত্র বিকল্প। উন্নত ক্যান্সার চিকিৎসায় সবার প্রবেশাধিকার বাস্তব করতে হলে আমাদের ধারাবাহিক সচেতনতা অভিযানের মাধ্যমে জ্ঞানের ফাঁক মেটাতে হবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

one × 4 =