২০০ কিলোমিটার দীর্ঘ রেল ট্র্য়াকে বসানো হল মেটাল ফেন্সিং

মাত্র আট মাসেই তৈরি সম্পূর্ণ হলো পূর্ব রেলের অধীনে বাংলায় ২০০ কিলোমিটার দীর্ঘ রেল ট্র্যাকের আপ ও ডাউন এই দু’দিকের মেটাল ফেন্সিংয়ের কাজ। রবিবার সকালে পূর্ব রেলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, রেলের ট্র্যাককে যতটা সম্ভব নিরাপদ করার জন্য প্রাথমিক ভাবে বেছে নেওয়া হয়েছিল হাওড়া-খানা জংশন কর্ড লাইনের রুটকে। সেই রুটের দু’পাশ এখন মেটাল ফেন্সিংয়ে ঘিরে পুরোপুরি সুরক্ষিত বলে দাবি করেছেন রেলকর্তারা। বন্দে ভারতের মতো সেমি হাই স্পিড ট্রেনের পাশাপাশি হাওড়া রাজধানী এবং শতাব্দীর মতো প্রিমিয়াম ট্রেন নিত্যদিন চলে এই কর্ড লাইন ধরেই। ভারতীয় রেলের হিসেব বলছে, ট্রেনের লাইনে অজান্তে এসে পড়ার ফলে প্রতিদিনই দুর্ঘটনায় পড়ে, এমন গবাদিপশুর সংখ্যা নেহাত কম নয়। এর পাশাপাশি ‘শর্টকাট’ করতে গিয়ে ট্রেনের ট্র্যাকে উঠে দুর্ঘটনায় পড়েন এমন মানুষের সংখ্যাও যথেষ্ট বেশি। ‘ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো’র ২০২১-এর পরিসংখ্যান বলছে, ওই বছর দেশের বিভিন্ন প্রান্তে রেলওয়ে ক্রসিংয়ে বিভিন্ন ধরনের দুর্ঘটনার সংখ্যা ছিল ১৫০০-এর বেশি, যাতে প্রায় ১৮০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।’

এই প্রসঙ্গে পূর্ব রেলের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, এই ধরনের মোট দুর্ঘটনার ১০ শতাংশের বেশি ঘটেছে পশ্চিমবঙ্গে। এই জাতীয় দুর্ঘটনার প্রভাবে দূরপাল্লার ট্রেনের সময়ানুবর্তিতা ভীষণ ভাবে ক্ষতিগ্রস্তও হয়। প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প ‘গতিমান ভারত’ যাতে এমন ঘটনার জন্য কোনও ভাবেই গতি না হারায়, তার জন্য দেশের প্রতিটা রেলওয়ে জ়োনেই উদ্যোগ নিতে শুরু করেছে ভারতীয় রেল। পূর্ব রেলও এর ব্যতিক্রম নয়। হাওড়া-খানা জংশন কর্ড লাইন বরাবর অর্থাৎ যে রুটে সেমি হাই স্পিড ও অন্য দূরপাল্লার ট্রেন সবচেয়ে বেশি যাতায়াত করে, আট মাস আগে সেই রুটকে সুরক্ষিত করার কাজ শুরু হয়।

পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র বলেন, ‘আপ ও ডাউন, দু’টি লাইনের পাশেই মেটাল ফেন্সিং দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মাত্র আট মাসে আমরা আপ ও ডাউন লাইন বরাবর ২০০ কিলোমিটার দীর্ঘ পথকে বেড়া দিতে পেরেছি।’ পূর্ব রেলের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, এই ২০০ কিলোমিটার দীর্ঘ পথে অনেক জায়গাতেই রেলের ট্র্যাকের দু’পাশে জলা জমি রয়েছে। এই কারণেই সুবিধাজনক জায়গায় ফেন্সিংয়ের কাজটি যান্ত্রিক পদ্ধতিতে করা হয়েছে এবং অন্যত্র শ্রমিকটা হাতে-কলমে কাজটি করেছেন। এতে রেল ট্র্যাকে মানুষ ও গবাদিপশুর ঢুকে পড়ার সম্ভাবনা কমেছে বলে দাবি রেল কর্তৃপক্ষের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

13 + twenty =