ওড়িশায় ১৫ বছরের ছাত্রীর গায়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় তোলপাড় সমাজ মাধ্যম থেকে রাজনৈতিক মহল। এই সাংঘাতিক ঘটনার সঙ্গে ‘বেটি বাঁচাও‘ স্লোগানকে কটাক্ষ করে বিজেপিকে বিঁধলেন মন্ত্রী শশী পাঁজা।
এমন ঘটনা ঘটেছে ওড়িশার নীমপড়ার বেয়াবারে। শনিবার সকাল সাড়ে ৮ টা নাগাদ বন্ধুর বাড়ি থেকে নিজের বাড়ি ফিরছিলেন বছর পনেরোর এক ছাত্রী। হঠাৎ তার রাস্তা আটকে গায়ে আগুন ধরিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায় তিন অজ্ঞাতপরিচয় যুবক।আশঙ্কাজনক অবস্থায় কিশোরীকে ভর্তি করানো হয় হাসপাতালে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান অনুযায়ী, মেয়েটির রাস্তা আটকে দাঁড়িয়েছিলেন তিনজন। কিছুক্ষণ বচসা হয় মেয়েটির সঙ্গে। তার পরেই মেয়েটির গায়ে আগুন ধরিয়ে দিয়ে চম্পট দেন তিনজন। দগ্ধ অবস্থায় রাস্তায় ছটফট করছিল মেয়েটি। কয়েক জন তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ পরে তাকে ভুবনেশ্বর এইমসে স্থানান্তর করে। শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী মেয়েটির হাত–পা এবং গলা পুড়ে গিয়েছে। শরীরের অন্যান্য অংশেরও বেশ খানিকটা ক্ষতি হয়েছে।
আর এই ঘটনাতেই বিজেপিকে বিঁধলেন মন্ত্রী শশী পাঁজা। বলেন, ‘বিজেপির ডবল–ইঞ্জিন রাজ্য ওড়িশায় ১৫ বছরের এক কিশোরীকে প্রকাশ্য রাস্তায় পেট্রোল ঢেলে জ্যান্ত জ্বালিয়ে দিল দুষ্কৃতীরা। মেয়েটা এখন হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। এটা বিজেপি–শাসিত রাজ্যের বাস্তব চিত্র, যেখানে একটা মেয়েও নিরাপদ নয়। ‘বেটি বাঁচাও‘ বলে যারা বুক ফুলিয়ে ভোট চায়, তাদের নিজেদের শাসিত রাজ্যেই মেয়েদের সুরক্ষা নেই। দুষ্কৃতীরা এখনও অধরা, জাতীয় মহিলা কমিশন পুরোপুরি চুপ। এই দ্বিচারিতার জবাব মানুষই দেবে।’
আহত কিশোরীর পরিবারের দাবি, এক বন্ধুকে বই দেওয়ার জন্য সকালে বেরিয়েছিল সে। বাড়ি ফেরার পথে এই ঘটনা ঘটে। তবে পারিবারিক বা ব্যক্তিগত শত্রুতার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছে তারা। তা ছাড়া প্রণয়ঘটিত কোনও কারণ নেই বলেই দাবি করেছে পরিবার। অন্যদিকে, পুলিশ এখনও পর্যন্ত অভিযুক্তদের চিহ্নিত করতে পারেনি। যে জায়গায় ওই ঘটনাটি ঘটেছে, সেখান থেকে থানা মাত্র দেড় কিলোমিটার দূরে। এখনও পর্যন্ত পুলিশের তরফে সরকারিভাবে কোনও প্রতিক্রিয়া দেওয়া হয়নি।
এদিকে ছাত্রীকে হেনস্থা এবং খুনের চেষ্টার অভিযোগ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিবৃতি দিয়েছেন ওড়িশার উপমুখ্যমন্ত্রী প্রবতী পারিদা। এই ঘটনাকে ‘অত্যন্ত দুর্ভগ্যজনক’ বলে আখ্যা দিয়ে মহিলা উপমুখ্যমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন অবিলম্বে অভিযুক্তদের ধরা হবে। আইনের মাধ্যমে তাঁদের কঠিনতম শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। পাশাপাশি তিনি ঘোষণা করেছেন, মেয়েটির চিকিৎসার যাবতীয় ব্যয়ভার বহন করবে ওড়িশা সরকার। তিনি হাসপাতালে দেখতে যাবেন ছাত্রীটিকে।