নিয়ম ভেঙে চাকরি দেওয়াই শুধু নয় ,যাঁরা চাকরি পাননি তাঁরা টাকা ফেরত চাওয়ায় গ্রেপ্তারির হুঁশিয়ারিও দিয়েছিলেন বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা, এমনটাই দাবি সিবিআইয়ের। এই প্রসঙ্গে এক চাকরিপ্রার্থীর সঙ্গে বিধায়কের চ্যাটও প্রকাশ্যে আনা হয়েছে সিবিআইয়ের তরফ থেকে।
জীবনকৃষ্ণ সাহাকে গ্রেফতার করা সময় থেকেই আলোচনায় উঠে আসে তাঁর মোবাইল। কারণ,সিবিআই জেরা চলাকালীন নিজের মোবাইল বাড়ি সংলগ্ন পুকুরে ছুড়ে ফেলে দিয়েছিলেন বিধায়ক। এরপর সেই পুকুরের জল বের করে ফোন উদ্ধার করেন সিবিআই আধিকারিকেরা। জল ছেঁচে ফেলতেই উদ্দার হয় দু -দুটি মোবাইল। জীবনকৃষ্ণ ভেবেছিলেন পুকুরের জলে পেলে দিলে মিলবে না কোনও তথ্য। তবে আদত তা হয়নি। ফরেন্সিক ল্যাবে পাঠানোর পর মোবাইল থেকে উদ্ধার হয় সব তথ্য। সামনে আসে চাকরিপ্রার্থীর সঙ্গে বিধায়কের চ্যাটও। আর এই চ্যাটেই দেখা যায়,দীপক নামে এক চাকরিপ্রার্থীর সঙ্গে কথা বলেছিলেন বিধায়ক। দীপক চাকরির জন্য টাকা দিয়েছিলেন। চাকরি বাতিল হয়ে যাওয়ায় ১২ লক্ষ টাকা ফেরত চান দীপক। উত্তরে জীবনকৃষ্ণ জানান, টাকা ফেরত দেবেন। প্রথমে ৬ লাখ,পরে বাকিটা। দীপক পালটা জিজ্ঞেস করেন,পরে কবে? জীবনকৃষ্ণ জানান,দেখে নিচ্ছেন,জমি বিক্রির চেষ্টা চলছে। এরপরই দীপক নির্দিষ্ট একটা সময় জানতে চান। বলেন,এক সঙ্গে ফেরতে কথা ছিল। তখনই কড়া ভাষায় জবাব দেন বিধায়ক। বলেন,’একবারে দেব বলেছিলাম। সবাইকে অর্ধেক করে দিচ্ছি। তোমারটা এমন কিছু নয়। তুমি ১২ দিয়েছ। একজন ১৭ পাবে। তাকে ৭ দিতে হবে। আসানসোল,সিউড়ি থেকে ১৭-১৮ করে সবাই দিয়েছিল। বেশি খিটমিট করলে কিছুই দেব না। যা পারবে করে নেবে।’ এখানেই শেষ নয়, তিনি এও জানান,’আমিই একমাত্র টাকা ফেরত দিচ্ছি। আর তো ওপরে কেউই দেয় না। আমি পুলিশের সঙ্গে কথা বলেছি। পুলিশ বলেছে আপনি তো টাকা নিতে যাননি। আপনার বাড়ি এসে টাকা দিয়ে গিয়েছে। আপনি চুপচাপ বসে থাকুন। এই নিয়ে বার বার ফোন করবে না। তাহলে অ্যারেস্ট হয়ে যাবে।’এই চ্যাট থেকে এটা স্পষ্ট যে, নিয়োগ দুর্নীতিতে বড় ভূমিকা ছিল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণের।