শুক্রবার ২৬ জুলাই, কার্গিল বিজয় দিবসের ২৫ বছর পূর্তি। এই উপলক্ষে এদিন লাদাখে কার্গিল যুদ্ধের স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এরপরই পাকিস্তানের উদ্দেশ্যে দিলেন এক কড়া হুঁশিয়ারি। মোদি বলেন, ‘ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেয়নি পাকিস্তান। সব সন্ত্রাসবাদী হামলা ব্যর্থ করে দেব আমরা।’ তার আগে, ২৫ বছর আগে, কার্গিল যুদ্ধের সময় যে বীর সেনা সদস্যরা প্রাণ দিয়েছিলেন, সাহসের সঙ্গে লড়াই করেছিলেন, সেই সকল সৈন্যদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘আমি সন্ত্রাসবাদের প্রভুদের বলব, ওদের অপচেষ্টা কখনই সফল হবে না। শত্রুদের যোগ্য জবাব দেব। লাদাখ বা জম্মু ও কাশ্মীরের উন্নয়নের পথে আসা প্রতিটি চ্যালেঞ্জকে হারাবে ভারত। পাকিস্তান তার ইতিহাস থেকে কিছুই শিক্ষা নেয়নি। তারা সন্ত্রাসবাদ এবং ছায়া যুদ্ধ ব্যবহার করে। আমি আজ এমন একটি জায়গা থেকে কথা বলছি, যেখানে সন্ত্রাসবাদীরা সরাসরি আমার কথা শুনবে। আমি তাদের বলতে চাই, তাদের পরিকল্পনা কখনই সফল হবে না। লাদাখ হোক বা জম্মু ও কাশ্মীর, আমরা উন্নয়ন চালিয়ে যাব। ৫ আগস্ট, ৩৭০ ধারা বাতিলের ৫ বছর পরে, জম্মু ও কাশ্মীর এবং লাদাখ উন্নয়নের পথে এগিয়ে চলেছে। পরিকাঠামো ও পর্যটন খাত দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। কয়েক দশক পর কাশ্মীরে সিনেমা হল খুলেছে। কয়েক দশক পর শিয়া সম্প্রদায় শ্রীনগরে তাকিয়া পালন করেছে।’
এদিকে সূত্রে খবর, এদিন সকাল সাড়ে ৯টায় কার্গিল যুদ্ধের স্মৃতিসৌধে পৌঁছন প্রধানমন্ত্রী। তার আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রধানমন্ত্রী মোদি লেখেন, কার্গিল বিজয় দিবস প্রত্যেক ভারতীয়র জন্য এক বিশেষ দিন। তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশকে যাঁরা রক্ষা করেছেন, তাঁদের সকলকে আজ শ্রদ্ধা জানানোর দিন। শিনকুন লা টানেল প্রকল্পের কাজও আজ শুরু হবে। বিশেষ করে খারাপ আবহাওয়ার সময় লেহ-র সঙ্গে যোগাযোগ উন্নত করতে, এই প্রকল্পটি গুরুত্বপূর্ণ।’
এর পাশাপাশি শহিদদের স্ত্রীদের সঙ্গেও কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এছাড়া ভার্চুয়াল মাধ্যমে শিনকুন লা টানেল প্রকল্পের প্রথম ব্লাস্ট ঘটাবেন। এই প্রসঙ্গে বলে রাখা শ্রেয়, শিনকুন লা টানেল প্রকল্পটি ৪.১ কিলোমিটার লম্বা টুইন টিউব টানেল নিয়ে গঠিত। এই টানেল তৈরি হয়ে গেলে সারা বছরই লেহ উপত্যকার সঙ্গে যোগাযোগ করা যাবে। নিমু-পদুম-দারচা সড়কে প্রায় ১৫,৮০০ ফুট উচ্চতায় তৈরি হবে এই টানেল। টানেলটি হিমাচল প্রদেশের লাহুল উপত্যকাকে লাদাখের জান্সকার উপত্যকার সঙ্গে সংযুক্ত করবে। বর্তমানে, লেহ যাওয়ার দুটি রাস্তা আছে। শ্রীনগর-জোজিলা-কারগিল-লেহ এবং মানালি-অটল টানেল-সারচু-লেহ – এই দুই পথে লেহ উপত্যকায় যাওয়া যায়। তবে, নতুন টানেলটি তৈরি হয়ে গেলে যোগাযোগ অনেকটাই সহজ হয়ে যাবে।
এদিন কার্গিল যুদ্ধের বীরদের শ্রদ্ধা জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং-ও। তাঁর মতে, ১৯৯৯ সালের যুদ্ধে সাহসী সৈন্যদের অদম্য সাহস এবং আত্মত্যাগের কাহিনি আগামী প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে। সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি লেখেন, ‘আজ কার্গিল বিজয় দিবসের ২৫তম বার্ষিকীতে, আমরা ১৯৯৯ সালের যুদ্ধে বীর সৈনিকদের অদম্য চেতনা এবং সাহসের কথা স্মরণ করছি। তাঁদের অটল প্রতিশ্রুতি, বীরত্ব এবং দেশপ্রেম আমাদের দেশকে নিরাপদ ও সুরক্ষিত রেখেছে। তাঁদের সেবা এবং আত্মত্যাগ প্রত্যেক ভারতীয় এবং আমাদের আগামী প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে।’