দিল্লি থেকে গ্রেফতার তৃণমূল নেতা। আন্তঃরাজ্য জাল নোট পাচার চক্রের পাণ্ডার হিসাবে পুলিশের হাতে নাম উঠে আসে ওই তৃণমূল নেতা আশাদুল্লাহ বিশ্বাসের। এরপরই দিল্লি থেকে গ্রেফতার করা হয় মালদহের কালিয়াচকের এই তৃণমূল নেতাকে। দিল্লি পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দিল্লি পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (সেন্ট্রাল) এম হর্ষবর্ধনের নেতৃত্বে একটি বিশেষ দল বৃহস্পতিবার গোপন ডেরা থেকে আশাদুল্লাহকে গ্রেফতার করে। দিল্লি পুলিশের দাবি, ধৃত আশাদুল্লাহ বিশ্বাস আন্তঃরাজ্য জাল নোট পাচারের অন্যতম পাণ্ডা। পশ্চিমবঙ্গের মোস্ট ওয়ান্টেড ক্রিমিনাল হিসাবে পুলিশের খাতায় নামও রয়েছে তার।
জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ, নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো, ইডি’র খাতায় আশাদুল্লাহ বিশ্বাসের নামে অন্তত ৫০ টি মামলা নথিভুক্ত রয়েছে বলে দাবি দিল্লি পুলিশের। শুধু তাই নয়, এর পাশাপাশি এও জানা গিয়েছে, চলতি বছরের ১৮ অগাস্ট মালদহের কালিয়াচকের মোজমপুরে একটি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। অভিযোগ ওঠে, ওই ঘটনায় পুলিশের সামনেই অহেদুল শেখ নামে স্থানীয় এক যুবক খুন হন। পুলিশের দাবি, সেই সংঘর্ষ ও খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত আশাদুল্লাহ বিশ্বাস গ্রেফতারি এড়াতে দিল্লিতে গিয়ে আত্মগোপন করেছিলেন। ওই খুনের ঘটনায় ইতিমধ্যে আশাদুল্লাহ’র ছেলে সরফরাজ বিশ্বাস-সহ মোট আটজনকে গ্রেফতার করে কালিয়াচক থানার পুলিশ। ধৃতদের মধ্যে রয়েছে মোজমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের প্রধান মহাম্মদ সারিউলও। ঘটনায় সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে পুলিশ তদন্ত শুরু করে। সেই এফআইআরে মূল অভিযুক্ত হিসাবে নাম উল্লেখ রয়েছে তৃণমূল নেতা আশাদুল্লাহ বিশ্বাসের বলে পুলিশ সূত্রে খবর। তাঁকে পুলিশ খুঁজছিল। কালিয়াচক থানা পোড়ানোর মামলায় গ্রেফতার হয়ে বছর তিনেক জেল হাজতেও ছিলেন আশাদুল্লাহ। এরপর আশাদুল্লাহ জামিনে মুক্ত হয়ে এলাকায় ফিরে আসেন। এবার দিল্লিতে আশাদুল্লাহ’র গ্রেফতার হওয়া নিয়ে মালদহের রাজনৈতিক মহলে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। যদিও মালদহ জেলার তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, আশাদুল্লাহ বিশ্বাস দলের একজন সমর্থক মাত্র। তাঁর নিকট আত্মীয় রাহুল বিশ্বাস তৃণমূলের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি এবং আর এক আত্মীয় তারেক বিশ্বাস দলের অঞ্চল সভাপতি পদে রয়েছেন। তবে আশাদুল্লাহ তৃণমূলের কোনও পদে নেই। তৃণমূল নেতার গ্রেফতারি প্রসঙ্গে মালদহের তৃণমূল মুখপাত্র আশিস কুণ্ডু বলেন, ‘দল যে কোনও অপরাধের বিরুদ্ধে। অপরাধীদের কোনও দল হয় না। আইন আইনের পথেই চলবে।’