কেষ্টপুরের বেআইনি কাজের প্রতিবাদ করায় কাউন্সিলরের পা ধরতে হল মেয়ে-মাকে

কেষ্টপুরে বেআইনি কাজের প্রতিবাদ করায় শেষ পর্যন্ত কাউন্সিলরের পা ধরতে হল মেয়ে ও মাকে। এমনকি কাউন্সিলরের সামনে কানও ধরতে হয় তাঁদের। সমগ্র ঘটনায় ফের প্রশ্নের মুখে শাসকদলের কার্যকলাপ।

সূত্রে খবর, বিধাননগর পৌর নিগমের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কেষ্টপুর প্রফুল্লকানন অঞ্চলে বেআইনি কাজের প্রতিবাদ করেছিলেন মেয়ে ও মা। অভিযোগ, সেই কারণেই ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আশুতোষ নন্দীর পা ধরার পাশাপাশি কানও ধরে ক্ষমা চাইতে হয়। শুধু তাই নয়, কাউন্সিলর ঘনিষ্ঠরা তাঁদের মারধরও করেন বলে খবর। কেষ্টপুর প্রফুল্ল কাননের বাসিন্দা নিগৃহীতা মা ও মেয়ের দাবি, বাড়ির পাশে গড়ে একটি বহুতল তৈরি হচ্ছে। সেই বহুতল নির্মাণের প্রতিবাদ করায় কাউন্সিলর আশুতোষ নন্দী ওই তরুণী ও তাঁর মাকে ডেকে পাঠান তাঁর কার্যালয়ে। নিগৃহীতার অভিযোগ, তাঁকে কার্যালয়ের একটি ঘরে বন্ধ করে মারধর করা হয়। কাউন্সিলরের ঘনিষ্ঠ মহিলারা তাঁর ওপর শারীরিক নির্যাতন চালান বলেও অভিযোগ। এরপর কাউন্সিলরের সামনে কানও ধরতে হয় তাঁকে।

এমনকি অভিযোগ, কেন তিনি প্রতিবাদ করেছেন, তার জন্য কাউন্সিলরের পা ধরতে বাধ্য করা হয় তাঁকে। ওই তরুণী দাবি করেন, কাউন্সিলর জোর গলাতেই বলতে থাকেন, এলাকায় বেআইনি কাজ হবে এবং কাউন্সিলরের মদতেই তা সম্পন্ন হবে। ওই ঘটনার পর থেকে তাঁদের অনবরত হুমকির মুখে পড়তে হচ্ছে বলে দাবি।

নিগৃহীতা তরুণীর বক্তব্য, ‘কাউন্সিলর প্রকাশ্যে দাঁড়িয়ে বলেছেন, আমাকে টাকা দিলে বেআইনি নির্মাণ আইনি হয়ে যাবে, আইনি নির্মাণ বেআইনি। একদম বুক বাজিয়ে বলেছেন। ওঁর মেয়ে হাইকোর্টের উকিল। সেটাই ওঁর জোর।’

নিগৃহীতা জানান, ঘটনার সূত্রপাত গত বছর মে মাস থেকে। বাড়ির পাশে ওই বিল্ডিং নির্মাণ শুরু হয়। অভিযোগ, প্রথম থেকেই ইট-বালি-সিমেন্ট, বর্জ্য সবই তাঁদের বাড়িতেই ফেলা হত। মাটি খোঁড়ার সময়ে বোঝা যায়, কোনও ছাড় না দিয়ে সীমানা বরাবর ভবনটি তৈরি হচ্ছে। তখনই তাঁরা কাউন্সিলরকে ডেকেছিলেন। কিন্তু কাউন্সিলর প্রথমেই তাঁর মাকে হেনস্থা করেন। তখন থেকেই ঝামেলার সূত্রপাত। তারপর দীর্ঘদিন ধরেই চলছে টানাপোড়েন। এরপর নিগ্রহের ঘটনা ঘটে গত মার্চের ৩ তারিখ। এতদিন ভয়ে চুপ থাকলেও এখন মুখ খুলেছেন তাঁরা।

কেবল এই মা-মেয়ে নন, এলাকার অন্য বাসিন্দারাও কাউন্সিলরের ভূমিকায় অসন্তুষ্ট। এবিষয়ে কাউন্সিলরের প্রতিক্রিয়া নিতে গেলে এড়িয়ে যান প্রসঙ্গ।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

four × 1 =