দক্ষিণ কলকাতা এক আইন কলেজের মধ্যে ছাত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগের ঘটনায় নাম জড়িয়েছে কলেজেরই দুই কর্মী ও প্রাক্তন পড়ুয়ার। পুলিশ সূত্রে খবর, ওই তিনজনকে গ্রেপ্তারও করেছে পুলিশ। তবে এই ঘটনায় তাত্পর্যপূর্ণ ঘটনা হল এই কসবা গণধর্ষণ কাণ্ডে মিলল তৃণমূল–যোগ। জানা গিয়েছে, ধৃতদের মধ্যে একজন কলেজেরই তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতা। শুধু তাই নয়, তিনি ওই আইন কলেজের প্রাক্তন পড়ুয়াও বটে। তবে বর্তমানে তিনি এই কলেজেই একজন অস্থায়ী কর্মী হিসেবে কাজ করেন। সঙ্গে কানাঘুষো এও শোনা গেছে, কলেজের ছাত্র সংগঠনের রাশও তার হাতে। শুধু তাই নয়, স্থানীয় সূত্রে এও জানা গিয়েছে, কলেজের ‘রাজনৈতিক মহলে’ তার আলাদা এক গুরুত্বও নাকি রয়েছে। এবার তারই নাম জড়াল গণধর্ষণ–কাণ্ডে।
এদিকে আরজি কর–কাণ্ডের পর রাজ্যের সরকারি প্রতিষ্ঠানে নারী নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েছিল প্রশাসন। তারপরই মুখ্যমন্ত্রীর উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় সাংবাদিক বৈঠক করে প্রশাসনিক তরফে নিরাপত্তার কথা ভেবে নেওয়া নানা পদক্ষেপের ঘোষণা করেছিলেন। সেই ঘটনার পর ফের রাজ্যের অন্যতম এক আইন কলেজে গণধর্ষণের অভিযোগ ওঠায় প্রশ্নের মুখে কলকাতার নারী নিরাপত্তা।
তবে গোটা ঘটনা ঘিরে উঠেছে বেশ কিছু প্রশ্ন। বুধবার থানায় গিয়ে নির্যাতিতা পুলিশকে জানিয়েছিলেন, সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১০টা ৫০–এর মধ্যে এই পৈশাচিক কাণ্ড ঘটে। কিন্তু সেই সময় কলেজের মধ্যে কী করছিলেন তিনি তা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন। কারণ, স্বাভাবিক ছন্দে রাজ্যের যে কোনও কলেজ বিকেল ৫টার মধ্যে বন্ধ হয়ে যায়। সেখানে কেন এবং কীভাবে একটি সরকারি আইন কলেজে ভর সন্ধেয় গিয়েছিলেন ওই ছাত্রী তা নিয়েও উঠেছে বড় প্রশ্নচিহ্ন। এদিকে পুলিশ সূত্রের খবর, নির্যাতিতা জানিয়েছেন শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের জিএস পদ দেওয়া টোপ দিয়েই ওই ছাত্রীকে কলেজে ডেকে এনেছিলেন অভিযুক্তরা। তবে কি যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাদের সঙ্গে বেশ পরিচয় ছিল ওই ছাত্রীর, উঠছে সে প্রশ্নও।
এই ঘটনায় তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য জানান, তিনি এই ঘটনা সম্পর্কে কিছু জানেন না। তবে এর পাশাপাশি তিনি এও জানান, এটা যদি সত্যি হয়ে থাকে, সে যেই হোক না কেন, তৃণমূল নেতা থাক বা না থাক, সে অপরাধী।’ এছাড়াও অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা প্রসঙ্গে তৃণাঙ্কুর এও জানান, উনি ওই কলেজেই কাজ করেন। তবে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের কোনও পদে নেই। এই ঘটনা যদি সত্যিই হয়ে থাকে, তা হলে এমন শাস্তি দেওয়া হবে যেন কেউ আর কখনওই এই রকম কাজের কথা ভাবতে পর্যন্ত না পারেন।