যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকের রহস্যমৃত্যু। শুক্রবার উত্তরাখণ্ডের একটি হোটেল থেকে উদ্ধার হয় মৈনাক পাল নামে এক অধ্যাপকের রক্তাক্ত দেহ। হাতের শিরা কাটা ছিল বলে সূত্র মারফত খবর। মৃত্যুর কারণ ঘিরে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা। আত্মহত্যা নাকি খুন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এদিকে ঘটনার তদন্তে নেমেছে উত্তরাখণ্ডের পুলিশ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে পরিবার। মৈনাকের পরিবার সূত্রে খবর, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ছিলেন তিনি। বরাহনগরের বাসিন্দা মৈনাকের ছিল পাহাড়ে ঘোরার নেশা। দিনকয়েক আগে দুই বন্ধুর (তারা কেউই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত নন) সঙ্গে উত্তরাখণ্ডের আলমোড়ায় বেড়াতে গিয়েছিলেন।বাঘ এক্সপ্রেসে তাঁর বাড়ি ফেরার কথা ছিল।সেইকারণে স্টেশনের কাছে ছিলেন তিনি।এরপর শুক্রবার রাতে সেই হোটেলের একটি ঘর থেকে তাঁর রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়।সূত্রে খবর,শনিবার দেহের ময়না তদন্ত করা হয়। দেহ ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়াও শুরু হয়।পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
পুলিশের প্রাথমিক অনুমান,আত্মহত্যা করেছেন অধ্যাপক।তবে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত না হলে কোনও কিছুই বলা সম্ভব নয় বলেও জানানো হয়েছে পুলিশের তরফ থেকে।এদিকে মৈনাকবাবুর পরিবারের সদস্যরা জানান, তাঁর পক্ষে আত্মহত্যার মতো সিদ্ধান্ত কখনওই নেওয়া সম্ভব নয়।
সূত্রে খবর, মেধাবী এই অধ্যাপক প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর পাশ করেন। সেখানেই অধ্যাপনা শুরু করেন। তার পর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চশিক্ষা সম্পূর্ণ করেন। ২০২২ সাল থেকে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করছিলেন তিনি। অত্যন্ত হাসিখুশি স্বভাবের অধ্যাপকের রহস্যমৃত্যুতে অবাক সহকারীরা।
এ প্রসঙ্গে জুটার সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় বলেন, ‘আমরা শুনেছি উনি বন্ধুদের সঙ্গে বেড়াতে গিয়েছিলেন। একটি হোটেল থেকে দেহ উদ্ধার হয়েছে। মৈনাক খুব ঠাণ্ডা মাথার ভদ্র ছেলে। ও এই বিশ্ববিদ্যালয়েরই প্রাক্তন ছাত্র। এত ভাল ছেলেটার কী হয়ে গেল জানি না।’
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য ভাস্কর গুপ্ত বলেন, ‘মৈনাকের চলে যাওয়াতে আমরা মর্মাহত, শোকাহত। শুধু অধ্যাপক নয় একজন উজ্জ্বল গবেষক, শিক্ষককে আমরা হারালাম। বুঝতে পারছি না কীভাবে এই ঘটনা ঘটল।’ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসু বলেন, ‘রবিবার সকাল পর্যন্ত অফিসিয়ালি কিছু জানতে পারিনি। তবে শুনেছি অধ্যাপক মৈনাক পালের মৃত্যু হয়েছে।’ দর্শন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক দীপায়ণ পট্টনায়ক বলেন, ‘মেধাবী অধ্যাপক ছিলেন মৈনাক। শনিবার দুপুরে ঘটনাটি শোনার পর বিশ্বাস করতে পারিনি। আমরা ছাত্র, শিক্ষকরা প্রত্যেকেই মর্মাহত।’