ঘনীভূত নিম্নচাপ, প্রবল দুর্যোগের আশঙ্কায় সতর্ক নবান্নও

বঙ্গোপসাগরের উপর তৈরি নিম্নচাপ ক্রমেই ঘনীভূত হয়ে উঠছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে নিম্নচাপটির অবস্থান ছিল উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে, সাগরদ্বীপ থেকে মাত্র ১০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পূর্বে এবং দিঘা থেকে ১৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে। এরপর  এটি পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের উপকূলবর্তী অঞ্চলে স্থলভাগে প্রবেশ করবে বলেই জানানো হয় আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের তরফ থেকে। একইসঙ্গে এও জানানো হয়েছে, এই নিম্নচাপটি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়ে উত্তর দিকে এগিয়ে যাবে এবং সাগরদ্বীপ ও বাংলাদেশের খেপুপাড়ার মাঝামাঝি উপকূলে আছড়ে পড়বে। এর প্রভাবে দক্ষিণবঙ্গ ও উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এদিকে বৃহস্পতিবার ১২ জেলায় অতি ভারী বৃষ্টির কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৬০ কিমি বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে বলে সতর্ক করা হয়েছে আবহাওয়া দপ্তরের তরফ থেকে। বাংলায় প্রবল দুর্যোগের আশঙ্কায় সতর্ক করল নবান্নও। সমস্ত জেলা এবং ব্লক স্তরে সবাইকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। ব্লক স্তর, জেলা স্তর ও নবান্নে কন্ট্রোল রুম প্রস্তুত রয়েছে। মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই উপকূলবর্তী ও নিচু এলাকার বাসিন্দাদের অন্য জায়গায় সরানো হচ্ছে,ত্রাণ শিবির‌ও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
পাশাপাশি আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের তরফ থেকে এও জানানো হয়েছে, কেরলে বর্ষা ঢুকে পড়লেও পশ্চিমবঙ্গে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে বর্ষা প্রবেশ করেনি। আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, এই নিম্নচাপের গতিপথ এবং শক্তি অনেকাংশেই নির্ধারণ করবে বর্ষা ঠিক কবে থেকে রাজ্যে প্রবেশ করবে।
এদিকে এই নিম্নচাপের প্রভাবে কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, দুই ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, পূর্ব বর্ধমান, নদিয়া ও মুর্শিদাবাদে বৃহস্পতিবার ভারী অর্থাৎ ৭–১০ সেমি ও অতি ভারী অর্থাৎ ১২–২০ সেমি বৃষ্টির সম্ভাবনা বলেই জানানো হয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের তরফ থেকে।  একইসঙ্গে শুক্রবার দক্ষিণবঙ্গের অধিকাংশ জেলাতেই ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনার কথাও জানিয়েছে আলিপুর। এরপর থেকে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও সতর্কতা বজায় থাকবে।
দক্ষিণবঙ্গের পাশাপাশি উত্তরবঙ্গের আলিপুরদুয়ারে শুক্রবার লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে। প্রবল বর্ষণ হতে পারে দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কালিম্পং ও কোচবিহারেও। উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর এবং মালদহ জেলাতেও ভারী বৃষ্টি ও ঘণ্টায় ৪০ থেকে ৬০ কিমি বেগে ঝোড়ো হাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে খবর,বৃহস্পতিবার কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৫.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস (স্বাভাবিকের চেয়ে ১.৪ ডিগ্রি কম) এবং সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩১.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস (স্বাভাবিকের চেয়ে ৩.৭ ডিগ্রি কম)।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five × one =

preload imagepreload image