বাজি নিয়ে এবার কড়া পদক্ষেপ নবান্নর। কারণ, উৎসবের মরসুম শুরু হচ্ছে ফলে বাজির চাহিদা বাড়বেই। তবে এবার চিরাচরিত বাজিতে রাশ পড়াল প্রশাসন। এমনকী পরিবেশ বান্ধব বাজিও যত্রতত্র বিক্রি করার অনুমতি দিতে নারাজ রাজ্য। এই ধরনের বাজি বিক্রি নিয়ে যে নির্দেশিকা তৈরি হয়েছে অনুমতি দেওয়ার আগে তা যথাযথ মানা হচ্ছে কিনা পরীক্ষা করে দেখার নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন। এর ফলেই পরিবেশ বান্ধববাজি বিক্রির স্থায়ী ও অস্থায়ি দোকান তৈরির লাইসেন্স চেয়ে আবেদন জমা পড়ে ১৩৭২টি। এদিকে নবান্ন নবান্ন সূত্রে খবর, এই লাইসেন্স দেওয়া যাবে কী যাবে না তা খতিয়ে দেখতে গিয়ে এর মধ্যেই ৯২টি আবেদন বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। রেহাই পাচ্ছে না পুরনো দোকানের লাইসেন্স পুর্ননবীকরণও।পুরনো আটটি দোকানেরও লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে।
কারণ, হিসেবে অনেকেই মনে করছেন রাজ্যে একের পর এক বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের পর উৎসবের মরশুমের শুরুতেই বিশেষ সতর্ক হয়েছে নবান্ন। তাই প্রতিটি আবেদন জয়েন্ট ইন্সপেকশন করে তারপর স্থায়ী ও অস্থায়ী লাইসেন্স দিতে বলা হয়েছে। ৭১২টি আবেদন জয়েন্ট ইন্সপেকশনে পাঠানো হয়েছে। ১১৬টি আবেদন ফেরত পাঠানো হয়েছে আবেদনকারীর কাছে তথ্য অসম্পূর্ণ থাকার জন্য।
এরই পাশাপাশি কলকাতা পুলিশ ও বাজি ব্যাবসায়ী সংগঠনগুলির সঙ্গে বৈঠক করেন বলেও জানা গেছে। কলকাতার তিনটি বাজি ব্যবসায়ী সংগঠনের যাদের মধ্যে ছিলেন টালা গ্রিন বাজি বাজার, কালিকাপুর বাজি বাজার এবং বেহালা বাজি বাজারের মুখ্য পৃষ্ঠপোষকরা। এই তিন বাজি বাজারের কর্তারা এই বছর থেকে পশ্চিমবঙ্গ বাজি শিল্প উন্নয়ন সমিতির ছাতার তলায় এসে একযোগে ব্যবসা করবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন। এই প্রসঙ্গে বাজি ব্যবসায়ী সমিতির রাজ্য সম্পাদক শুভঙ্কর মান্না জানিয়েছেন ‘উপনগরপাল এবং নগরপালের সঙ্গে বৈঠক ফলপ্রসূ হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই তিনটি জায়গাতেই কালীপুজো বা দীপাবলীর ঠিক আগেই আগামী সাত দিনের জন্য গ্রিন বাজির বিপণনে অস্থায়ী দোকান বসতে চলেছে।’
এদিকে কলকাতার বাজি ব্যবসায়ীদের সবথেকে বড় প্রশ্ন ছিল গ্রিন ক্র্যাকার্স মজুত কোথায় হবে তা নিয়েই। এতে নগরপাল বিনীত গোয়েল বাজি ব্যবসায়ীদের আশ্বস্ত করে জানান, কলকাতা পুলিশ-সহ সমিতির সদস্যরা একযোগে বাজি মজুদের জন্য কোন পরিত্যক্ত বাড়ি অথবা কর্মতীর্থের খোঁজ চালাবে। ফলে গত কয়েকদিন ধরে কলকাতায় বাজি বাজার নিয়ে যে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছিল সে সমস্যার সমাধান মিলেছে। এদিকে এও জানা যাচ্ছে, এ বছর কলকাতা পুলিশের নির্দেশ মেনে দু’টি স্টল বা অস্থায়ী দোকানের মধ্যে ১০ ফুটের ব্যবধান থাকবে। ফলে তিনটে অস্থায়ী গ্রিন বাজি বাজারে দোকান সংখ্যাও কমতে পারে। অন্য দিকে জেলাশাসকদের ইতিমধ্যেই বাজি বিক্রি করা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ নবান্নের তরফে দেওয়া হয়েছে। সেখানে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে লাইসেন্স ছাড়া কোনও ভাবেই বাজি বিক্রি করা যাবে না।