বিজেপির চতুর্থ প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হল। ১৯টি কেন্দ্রে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে। বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ মেদিনীপুরের বদলে এবার লড়বেন বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্র থেকে। তবে ব্যারাকপুরের প্রার্থী অর্জুন সিং। কলকাতা উত্তরে তাপস রায়। তবে এই পর্বেও বিজেপি প্রার্থী দেয়নি ডায়মন্ড হারবার কেন্দ্রে। বাকি আসানসোল, ঝাড়গ্রাম, বীরভূম কেন্দ্রের প্রার্থীর নাম ঘোষণাও। বিজেপির এই তালিকায় রয়েছে আরেক চমক। সন্দেশখালির প্রতিবাদী মুখ রেখা পাত্র এবার বসিরহাটের প্রার্থী হয়েছেন।
শনিবার যে ১৯ প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয় তার তালিকা এক নজরে
জলপাইগুড়ি-জয়ন্ত রায়
দার্জিলিং-রাজু বিস্তা
রায়গঞ্জ-কার্তিক পাল
জঙ্গিপুর-ধনঞ্জয় ঘোষ
কৃষ্ণনগর-রাজমাতা অমৃতা রায়
ব্যারাকপুর-অর্জুন সিং
দমদম-শীলভদ্র দত্ত
বারাসত-স্বপন মজুমদার
বসিরহাট-রেখা পাত্র
মথুরাপুর-অশোক পুরকাইত
কলকাতা দক্ষিণ-দেবশ্রী চৌধুরী
কলকাতা উত্তর-তাপস রায়
উলুবেড়িয়া-অরুণ উদয় পাল
শ্রীরামপুর-কবীরশঙ্কর বোস
আরামবাগ-অরূপকান্তি দিগর
তমলুক-অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়
মেদিনীপুর-অগ্নিমিত্রা পল
বর্ধমান পূর্ব-অসীমকুমার সরকার
বর্ধমান দুর্গাপুর-দিলীপ ঘোষ
১৯ আসনের প্রার্থী তালিকায় সবথেকে বড় চমক বোধহয় বসিরহাটের প্রার্থী। ন্দেশখালির প্রতিবাদী মুখ রেখা পাত্রকে এখানে প্রার্থী করেছে বিজেপি। প্রার্থী হয়েই রেখা পাত্র নরেন্দ্র মোদিকে ধন্যবাদ জানান। বলেন, ‘উনি আমার মত একজন গ্রামের মহিলাকে প্রার্থী করেছেন। সন্দেশখালি-বসিরহাট জেলার মা বোনেদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য সবসময় থাকব। ওঁনাদের হয়ে আমি প্রতিবাদ করব।’
এদিন বিজেপি তালিকা প্রকাশের পর এ রাজ্যের ৪২টি লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে বিশেষ নজরে উঠে এল একাধিক কেন্দ্র। নিঃসন্দেহে ‘নজরকাড়া’ হবে বেশ কয়েকটি কেন্দ্র। দিলীপ ঘোষকে মেদিনীপুর থেকে সরিয়ে আনা হল বর্ধমান দুর্গাপুরে। যেখানে তৃণমূল প্রার্থী করেছে কীর্তি আজাদকে। দ্বিতীয় চমক নিঃসন্দেহে ব্যারাকপুর। মন্ত্রী পার্থ ভৌমিকের সঙ্গে লড়াই হবে সদ্য তৃণমূল থেকে অভিমান করে বেরিয়ে আসা ব্যারাকপুরেরই প্রাক্তন সাংসদ অর্জুন সিংয়ের। একদিকে শাসক দলের মন্ত্রীর সঙ্গে প্রাক্তন সাংসদের টক্কর যে হবে নজরকাড়া তা বুঝছেন সবাই-ই। অপর চমক প্রাক্তন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরী। রায়গঞ্জ থেকে তাঁকে নিয়ে আনা হল মালা রায়ের বিরুদ্ধে দক্ষিণ কলকাতায় লড়তে। অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এবার ভোটে লড়বেন তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। এমনও ইঙ্গিত ছিল তমলুক থেকে লড়বেন। সেই জল্পনায় সিলমোহর পড়ল। তৃণমূলের যুবনেতা দেবাংশু ভট্টাচার্যের সঙ্গে প্রাক্তন বিচারপতির লড়াই এ কেন্দ্রে। লড়াই জমে যাবে বলেই মনে করছেন অনেকে।
আরও একটি কেন্দ্রে এবার চমক। সৌগত রায়ের কেন্দ্র দমদমে শীলভদ্র দত্ত বিজেপির মুখ। এই প্রথমবার লোকসভার ভোটে লড়ছেন শীলভদ্র। এক সময় তৃণমূলে ছিলেন, পরে দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন। তৃণমূলের শক্তি কিংবা দুর্বলতা দুই-ই জানেন তিনি। ভোটের বাক্সে বিজেপিকে তা সুবিধা দেবে বলেই প্রাথমিকভাবে মনে করছেন অনেকে।
এছাড়াও এবারের প্রার্থী তালিকায় চমক হরিণঘাটার বিধায়ক অসীম সরকার। তাঁকে বর্ধমান পূর্বে নিয়ে গিয়েছে দল। মতুয়াদের সিএএ নিয়ে বারবার সরব হয়েছেন অসীম। এছাড়া কলকাতা উত্তরে তাপস রায়ও চমক। যে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ‘বিদ্রোহ’ করে দল ছেড়েছিলেন তাপস। ভোটের ময়দানে সেই সুদীপেরই মুখোমুখি হবেন তিনি। অনেকে বলছেন, এ লড়াই তাপসের মানরক্ষার লড়াই।
এর আগে ২ মার্চ বিজেপি প্রথম প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে। বাংলার ২০ আসনে প্রার্থী দিয়েছিল বিজেপি। যদিও আসানসোলের প্রার্থী পরদিন জানান তিনি লড়ছেন না।
২ মার্চ ঘোষিত তালিকা
যাদবপুর-অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায়, জয়নগর-অশোক কাণ্ডারী, কোচবিহার-নিশীথ প্রামাণিক, আলিপুরদুয়ার-মনোজ টিগ্গা, বালুরঘাট-সুকান্ত মজুমদার, মালদহ উত্তর-খগেন মুর্মু, মালদহ দক্ষিণ-শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী, বনগাঁ-শান্তনু ঠাকুর, হুগলি-লকেট চট্টোপাধ্যায়, বাঁকুড়া-সুভাষ সরকার, বিষ্ণুপুর-সৌমিত্র খান, পুরুলিয়া-জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো, বোলপুর-পিয়া সাহা, হাওড়া-রথীন চক্রবর্তী, রানাঘাট-জগন্নাথ সরকার, মুর্শিদাবাদ-গৌরিশঙ্কর ঘোষ, বহরমপুর-নির্মল কুমার সাহা, ঘাটাল-হিরণ, কাঁথি সৌমেন্দু অধিকারী।