মঞ্চে একাধিক বিতর্কিত মন্তব্য, দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে দিন তিনেক আগে শোকজের চিঠি পেয়েছিলেন অশোকনগরের তৃণমূল বিধায়ক নারায়ণ গোস্বামী। সাতদিনের মধ্যে তাঁর জবাব দেওয়ার কথা। তার মধ্যে অবশ্য অন্য পথে দলের মানভঞ্জনের চেষ্টা করলেন বিধায়ক। এর মধ্যেই তিনি দেখা করেন কৃষি মন্ত্রী তথা বিধানসভার শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির প্রধান শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে। সূত্রের খবর, নিজের বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন নারায়ণ গোস্বামী। একইসঙ্গে এও খবর, ভুল শোধরানোর ইচ্ছাপ্রকাশও নাকি করেছেন তিনি। তেব এ নিয়ে নারায়ণ গোস্বামীর মুখে কুলুপ। তাঁর সংক্ষিপ্ত মন্তব্য, ‘সময়ের মধ্যেই যা জবাব দেওয়ার, দেব।’
গত ২৪ জানুয়ারি দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে অশোকনগরের তৃণমূল বিধায়ককে নবান্নে ডেকে শোকজ লেটার হাতে ধরিয়ে দেন বিধানসভার শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির প্রধান শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। এর আগে ডিসেম্বরে মুখ্যমন্ত্রী উত্তর ২৪ পরগনা সফরে গিয়ে বিধায়ক নারায়ণ গোস্বামীকে সতর্ক করেছিলেন। তিনি যেন অন্য বিধানসভা এলাকায় নজর না দেন, স্পষ্ট সেই নির্দেশ দেন মমতা। কিন্তু তারপরও সতর্ক হননি বিধায়ক। সম্প্রতি অশোকনগরের এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মঞ্চে অপ্রকৃতিস্থ অবস্থায় দেখা যায় নারায়ণ গোস্বামীকে। শুধু তাই ময়, মঞ্চে দাঁড়িয়ে একের পর এক ‘চটুল’ রসিকতাও করতে থাকেন তিনি। দর্শকাসনে থাকা তরুণীদের উদ্দেশে নানা ধরনের কুকথা বলতে শোনা যায় তাঁকে। সেই ভিডিও ভাইরাল হতেই সোশাল মিডিয়ায় আলোচনা শুরু হয়। এরপরই শাসক দলের অন্দরেও এনিয়ে আলোচনা হয়। শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে শোকজ করা হয় নারায়ণ গোস্বামীকে। এর মধ্যে সোমবার খড়দহের এক অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পেয়ে গিয়েছিলেন অশোকনগরের বিধায়ক। সেখানে তাঁর সঙ্গে শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের দেখা হয়। সূত্রের খবর, সেখানেই নিজের আচরণের জন্য ক্ষমা চান নারায়ণ গোস্বামী। জানান, আবেগের বশেই তিনি নানা সময়ে নানা বেফাঁস কথা বলে ফেলেন, যা বিতর্ক তৈরি করেছে। এর জন্য তিনি দুঃখপ্রকাশও করেছেন। এরপর সতর্ক হবেন বলে জানান। আগেও অবশ্য ঘনিষ্ঠ মহলে একই সাফাই দিয়েছিলেন নারায়ণ গোস্বামী। কিন্তু শোভনদেব তাঁকে স্পষ্ট জানিয়ে দেন, এসব বলে লাভ নেই। শোকজ চিঠির লিখিত জবাব দিতে হবে। অশোকনগরের বিধায়কের নানা মন্তব্য বারবার দলকে বিড়ম্বনায় ফেলেছে। জনমানসে তা বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করতে পারে, সেকথা মাথায় রেখেই ছাব্বিশের ভোটের আগে নারায়ণে কড়া পদক্ষেপ তৃণমূলের।