অনুব্রত কাণ্ডে এসপি-কে তলব মহিলা কমিশনের

বোলপুরের আইসিকে কদর্য ভাষায় তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলের আক্রমণের ঘটনায় এবার বীরভূমের এসপিকেই একেবারে দিল্লিতে হাজিরার নির্দেশ দিল জাতীয় মহিলা কমিশন।  ১ জুলাইয়ের মধ্যে তাঁকে এই হাজিরা দিতে হবে বলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে পুলিশ সুপার আমনদীপকে এর এক বিকল্পও দেওয়া হয়েছে। তিনি হাজিরা দিতে না পারলে তদন্তকারী আধিকারিককে হাজিরা দিতে হবে। তবে এই দুজনের কেউই হাজিরা না দিলে ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে কমিশন। 

অনুব্রত কাণ্ডে জাতীয় মহিলা কমিশনের তরফ থেকে জানতে চাওয়া হয়েছিল, কেন থানার সাইটে এফআইআরএর কপি আপলোড করা হয়নি সে ব্যাপারে। কারণ,  এরফলে মানুষ জানতে পারবে, পুলিশ এই ঘটনায় কোন কোন ধারায় কী কী মামলা রুজু করেছে।  কিন্তু পুলিশের তরফ থেকে যে রিপোর্ট দেওয়া হয়েছিল, তাতে এই উত্তর এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে বলে মহিলা কমিশন সূত্রে  খবর। আর সেই কারণেই একেবারে দিল্লিতে তলব করা হল বীরভূম পুলিশ সুপারকে। এদিকে সূত্র মারফত্ এও জানা যাচ্ছে,  কেন অনুব্রত মণ্ডলের ফোন বাজেয়াপ্ত করা হয়নি, সেই প্রশ্নেরও উত্তর চায় কমিশন। এই ঘটনার পরও অনু্ব্রত কোনও আদালতেই আগাম জামিনের আবদেনও করেননি। কিন্তু তারপরও কেন পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করল না, সেই প্রশ্নেরও উত্তর পেতে চায় কমিশন। এদিকে সূত্রের খবর, একাধিক প্রশ্নের উত্তর দিয়ে পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, অনুব্রত তদন্তে সাহায্য করছেন। আইসির ফোন পরীক্ষা করা হচ্ছে সেই রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে।

এদিকে এই ঘটনায় কটাক্ষ করা হয়েছে বিরোধী শিবির বিজেপির তরফ থেকে। বিজেপি নেতা জগন্নাথ সরকার এই প্রসঙ্গে জানান,  আসলে পুলিশ সুপারের শ্যাম রাখি না কূল রাখি অবস্থা। একদিকে অনুব্রতর গালি খেতে হচ্ছে, অন্যদিকে ব্যবস্থা নিতে পারছেন না। তবে জাতীয় মহিলা কমিশনের কঠোর পদক্ষেপ করার সুযোগ রয়েছে। একাধিকবার ডাকার পরও যদি পুলিশ কমিশনার সাহায্য না করেন, তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা, তাঁর সার্ভিস বুকে লাল কালির দাগ দেওয়ার ক্ষমতা কমিশনের রয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত ২৯ মে একটি অডিও প্রকাশ্যে আসে। যেখানে বীরভূমের প্রাক্তন জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের নাম করে এক ব্যক্তি বোলপুরের আইসি লিটন হালদারের সঙ্গে অকথ্য ভাষায় কথা বলছিলেন। অডিওটিতে আইসির মাস্ত্রীকে নিয়ে কুকথা করতে শোনা যায় সেই ব্যক্তিকে। ওই কাণ্ডে জাতীয় মহিলা কমিশন জেলা পুলিশের কাছে রিপোর্ট চেয়ে পাঠায়। এরপর এই নির্দেশ অনুসারে জেলা পুলিশ সুপার রিপোর্টও পাঠান। তবে তাতে সন্তুষ্ট হয়নি মহিলা কমিশন। ফের চিঠি পাঠানো হয মহিলা কমিশনের তরফ থেকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

thirteen + 12 =