ডিভিসি-র জল ছাড়া নিয়ে এ বার কড়া অবস্থান নিতে চলেছে নবান্ন। শনিবারের বৈঠক থেকে স্পষ্ট ইঙ্গিত মিলেছে, ডিভিসি রাজ্যকে না জানিয়ে জল ছাড়লে রাজ্য সরকার তার তীব্র বিরোধিতা করবে বলেই প্রশাসনিক সূত্রের ইঙ্গিত মিলেছে। বরাবরই বর্ষার সময়ে কিংবা অতি বৃষ্টির সময়ে ডিভিসি জল ছাড়াটাই দস্তুর। এবারও তার ব্যতিক্রম নেই। কিন্তু, অনিয়ন্ত্রিতভাবে যাতে জল না ছাড়া হয় তার জন্য রাজ্য সরকার প্রতিবারই সরব হয়। খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বারবার এ নিয়ে সোচ্চার হতে দেখা যায়।
প্রশাসনিক সূত্রে খবর, জল ছাড়ার আগে রাজ্য সরকারকে জানানোর জন্য ডিভিসি-কে অনুরোধ করা হয়। কিন্তু সেই অনুরোধ মানা হয় না বলেই রাজ্যের তরফ থেকে বারবার অভিযোগ উঠে আসে। অনিয়ন্ত্রিতভাবে জল ছাড়ার জন্যই বেশ কিছু জেলায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয় বলেও প্রায়শই অভিযোগ করে রাজ্য। যদিও ডিভিসি সূত্রে খবর, জল ছাড়া নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্যের প্রতিনিধিদের নিয়ে ডিভিআরসি কমিটি আছে। সেই কমিটির বৈঠকের পরেই জল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মূলত আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভস দেখে চলে পর্যালোচনা। জলাধার কতটা জল ধরে রাখতে পারবে, কত সময় পর্যন্ত সেই জল রাখা সম্ভব হবে সবটাই আলোচনা করা হয়। সেই অনুযায়ী ছাড়া হয় জল।
এদিন সব জেলা শাসকদের পাশাপাশি ডিভিসি -র চেয়ারম্যানকে নিয়ে বৈঠক করেন রাজ্যের মুখ্যসচিব। আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, কোচবিহারে অতিবৃষ্টির পূর্বাভাস আছে। এই তিনটি জেলার জেলাশাসকদের সতর্ক থাকার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
এদিকে গত সপ্তাহের পর এদিনও দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে জল ছেড়েছে ডিভিসি। বৃষ্টি চলছিলই। সঙ্গে ডিভিসির জল ছাড়ায় মাথায় হাত চাষীদের। ডুবেছে পূর্ব বর্ধমান, হুগলী, হাওড়ার বিস্তীর্ণ এলাকার চাষের জমি। তা নিয়ে রাজনৈতিক তরজাও শুরু হয়ে গিয়েছে। হরিপাল পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি তথা ব্লকের তৃণমূলের নেতা বাবলু গায়েন জানান, ‘ডিভিসি বেশি পরিমাণ জল ছাড়ার কারণে বন্য পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। হরিপালেও চাষের জমি ডুবে গিয়েছে।’
এদিকে আবার এরইমধ্যে আবার আরামবাগে দ্বারকেশ্বর নদে জলস্তর বেড়েছে। নদীর ভেতরে বসবাসকারী মানুষজন বাড়িঘর ছেড়ে নদীবাঁধের উপর তাবু তৈরি করছেন। এদিকে এদিনই আবার দুর্গাপুর ব্যারেজের পাশাপাশি মাইথন জলাধার থেকে ১২ হাজার কিউসেক ও পাঞ্চেত জলাধার থেকে ৩৬ হাজার কিউসেক জল ছেড়েছে ডিভিসি।