নাগের বাজারের কাছে নয়াপট্টির বৃদ্ধের খুনের যে রহস্য দানা বেঁধেছিল তার কিনারা করল পুলিশ। ঘটনার দুদিনের মাথায় কল্যাণ ভট্টাচার্যের খুনের ঘটনায় গ্রেফতার করা হল ওই বৃদ্ধেরই গাড়ি চালক সৌরভ মণ্ডলকে। আর তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই জানা গেল কল্যাণবাবুকে খুন করার প্রকৃত কারণ।
ধৃত সৌরভ মণ্ডল জানিয়েছে, দামি গাড়ি চড়ে দিঘা যাওয়ার ইচ্ছা ছিল তাঁর। তবে তা কল্যাণবাবুর কাছে চাওয়ায় তা তিনি দিতে কোনওভাবেই রাজি হননি। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয় সৌরভ। গাড়ি নিয়ে দিঘায় ঘুরতে যাওয়ার জেদে কল্যাণবাবুর সঙ্গে তাঁর বচসাও হয়। কিন্তু নিজের দামি গাড়ি কোনওভাবেই দিতে রাজি না হওয়ায় রাগের বশে খুন করেন কল্যাণবাবুকে। পুলিশ সূত্রে খবর, মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন ট্র্যাক করে বেলঘড়িয়া এক্সপ্রেসওয়ে থেকে গ্রেপ্তার করা হয় বৃদ্ধের গাড়িচালককে।
এরপর সৌরভকে জিজ্ঞাসাবাদে সামনে আসে প্রকৃত ঘটনা। ধৃত সৌরভ পুলিশকে জানিয়েছে, সৌরভ বন্ধুদের সঙ্গে দিঘা বেড়াতে যাওয়ার জন্য বৃদ্ধের থেকে বিএমডব্লিউ গাড়িটি চেয়েছিল। এরপর বৃদ্ধ তাকে ১৫ সেপ্টেম্বর আসতে বলেন। সেই মতো সে বৃদ্ধের বাড়িতে যায়। তখন দেখে বৃদ্ধের বাড়ির সদর দরজা ভিতর থেকে তালাবন্ধ। বাধ্য হয়ে সে পাঁচিল টপকে ভিতরে ঢোকে। গাড়ি নিয়ে বৃদ্ধের সঙ্গে বচসা বাঁধে। অভিযোগ, তারই মাঝে চালক সৌরভ প্রথমে বৃদ্ধকে ধাক্কা মারে। তাতে তাঁর মাথায় আঘাত লাগে। মৃত্যু নিশ্চিত করতে বৃদ্ধকে শ্বাসরোধ করে খুন করে সে। খুনের পর গাড়ির চাবি নিয়ে গ্যারেজ থেকে গাড়ি নিয়ে চলে যায়। প্রথমে সে গাড়ি নিয়ে বারাসতের বাড়িতে যায়। তারপর বন্ধুদের নিয়ে দিঘায় যায়। এদিকে গাড়ির চালকের খোঁজ করা হচ্ছিল ব্যারাকপুর কমিশনারেটের তরফ থেকে। তাঁর সন্ধান না মেলায় মোবাইল টাওয়ার লোকেশন ট্র্যাক করা হতে থাকে। এরপর দিঘা থেকে ফেরার পথে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। বৃদ্ধের পোষ্য কুকুরটিকেও ওই বাগানবাড়ির একটি অব্যবহৃত ঘর থেকেই উদ্ধার করে নাগেরবাজার থানার পুলিশ।