মশার জ্বালয় কাহিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের পড়ুয়া থেকে স্টাফ কোয়ার্টারে থাকা লোকজনও। চারদিকে আবর্জনা, জল জমে থাকায় মশার আঁতুড়ঘর হয়ে উঠেছে এই যাদবপুর। মশা থেকে বাঁচার ফন্দি আঁটতে আঁটতেই ঘুম উড়ছে পড়ুয়াদের। সব মিলিয়ে পড়াশুনা লাটে।
খোদ ভিসি কোয়ার্টারের বাইরে দাঁড়ানো যাচ্ছে না এমনটাই সূত্রে খবর। এদিকে অনেকেই আক্রান্ত হচ্ছে জ্বরে। ফলে বাড়ছে উদ্বেগ। এ বিষয়ে যাদবপুরের নবনিযুক্ত উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউ জানান, ‘কেন হচ্ছে এটা দেখতে হবে। যাঁদের উপর এগুলো দেখার দায়িত্ব দেওয়া আছে তাঁদের সঙ্গে কথা বলব।’ তবে ঘুরপথে মশার দায়ও রাজ্যের ওপরই চাপালেন উপাচার্য। দেখভালের দায়িত্বে যে সমস্ত সরকারি দফতর রয়েছে তাঁদের কর্মীদের এ বিষয়ে বিশেষ কোনও কাজ করতেই দেখেন না তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃণমূল ছাত্র পরিষেদের নেতা সঞ্জীব প্রামাণিকের গলাতেও একই সুর। তবে তাঁর অভিযোগের আঙুল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দিকেই। এই প্রসঙ্গে তিনি জানান, ‘গোটা ক্যাম্পাসেই প্রচুর মশা। হস্টেলে কয়েকজনের ডেঙ্গি হয়েছে। বহু জায়গাতেই জঙ্গল, জল জমে রয়েছে। এসব দেখেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের হেলদোল নেই।’
এদিকে স্বাস্থ্য দফতর জানাচ্ছে, শুধু কলকাতাই নয়, রাজ্য জুড়ে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। এদিকে চিকিৎসকেরা বলছেন, ডেঙ্গিতে জ্বরের স্থায়িত্ব বেড়েছে। উপসর্গেও বাড়ছে শারীরিক জটিলতা, এমনটাই জানাচ্ছেন একাধিক চিকিৎসক। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, সারা রাজ্যে মোট ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ১৫ হাজার ২৭২ জন। গ্রামে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত ১০ হাজার ৩২১ জন। শহরে আক্রান্ত ৪ হাজার ৯৫১ জন। রানাঘাট, আমডাঙা, বনগাঁ, হরিনঘাটা, শান্তিপুর, হাবরা, চাকদহে বেড়েছে আক্রান্তের সংখ্যা। দমদম, আমডাঙা, হাঁসখালি, বনগাঁর মতো সমস্ত জায়গা খোলা ড্রেনের কারণেই মশার উপদ্রব বাড়ছে বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। এদিকে কলকাতা পুরসভার তরফে জানানো হয়েছে মশা ধ্বংস করার যথেষ্ট উপায় তাদের হাতে রয়েছে। এদিকে খোলা ড্রেনের সংখ্যাও খুবই কম। মশা মারার ব্যবস্থা পর্যাপ্ত থাকতেও খোদ কলকাতাতে আক্রান্তের সংখ্য়া কম নয়। এখানেই সাধারণ মানুষের অভিযোগ মশা মারার তেল বা ধোঁয়া ঠিকমতো দেওয়া হচ্ছে না পুরসভার তরফে। তাই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে ডেঙ্গি। যদিও কলকাতা পুরসভার তরফে জানানো হয়েছে, মশা নিধন পর্বের সঙ্গে চলছে আমজনতাকে সচেতন করার প্রচেষ্টা। ফলে ডেঙ্গি রুখতে প্রশাসনকে যেমন তৎপর হতে হচ্ছে ঠিক ততটাই পদক্ষেপ নিতে হবে জনগণকেও।