বাংলা ও বিহারের কয়েকটি জেলা নিয়ে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গঠনের দাবি জানালেন নিশিকান্ত

সংসদে দাঁড়িয়ে বাংলা ও বিহারের কয়েকটি জেলা নিয়ে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গঠনের দাবি তুললেন বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে। বাংলার মালদহ, মুর্শিদাবাদের সঙ্গে বিহারের কিষাণগঞ্জ, আরারিয়া, কাটিহার নিয়ে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গঠনের দাবি জানান তিনি।

বৃহস্পতিবার সংসদে বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে দাবি করেন, এই পাঁচ জেলার জনবিন্যাস পাল্টে গিয়েছে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের জন্য। কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল না করা হলে হিন্দুদের অস্তিত্ব থাকবে না বলে মন্তব্য করেন তিনি। এদিকে নিশিকান্তের এই দাবির কঠোর সমালোচনা করেন তৃণমূল নেতা শান্তনু সেন। বলেন, ‘বিজেপি বরারই বাংলা ভাগের রাজনীতি করছে। পাহাড় থেকে সাগর উন্নয়নের জোয়ার এনেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে বাংলার অখণ্ডতা রক্ষা করব। কোনও শক্তি নেই যারা বাংলাকে ভাগ করতে পারে।’

বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে এও বলেন, ‘ঝাড়খণ্ডের জনবিন্যাস বদলে গিয়েছে। রাজ্য স্থাপনের সময়ে যেখানে ঝাড়খণ্ডে ৩৬ শতাংশ আদিবাসী ছিল, তা বর্তমানে কমে দাঁড়িয়েছে ২৬ শতাংশের কম।’ আর এই প্রসঙ্গে নিশিকান্ত দুবের অভিযোগ, বিহারের পূর্ণিয়া, আরারিয়া, কাটিহার, কিষাণগঞ্জ ও পশ্চিমবঙ্গের মালদহ, মুর্শিদাবাদের হিন্দু গ্রামগুলিকে ধ্বংস করা হয়েছে। তাঁর নির্বাচনী এলাকার মধ্যে মধুপুর বিধানসভা এলাকায় দুই শতাধিক বুথে জনসংখ্যা ২০০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। অনেক বুথে মুসলিম জনসংখ্যা একশো শতাংশের বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের মালদহ, মুর্শিদাবাদ থেকে মুসলিমরা আসছেন।’ আর সেই কারণেই তাঁর দাবি, পূর্ণিয়া, আরারিয়া, কাটিহার, কিষাণগঞ্জ, মালদহ, মুর্শিদাবাদকে নিয়ে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল তৈরি করা হোক। নাহলে ওই সব জেলা থেকে হিন্দু সম্প্রদায় শূন্য হয়ে যাবে। তাঁর দাবি, এনআরসি লাগু হোক। প্রয়োজন হলে কেন্দ্র থেকে একটি টিম পাঠানো হোক। নিয়ম জারি হোক, যাতে ধর্ম বদল করে বিয়ের জন্য অনুমতি নিতে হয়।

বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে এদিন এও বলেন, ‘আমাদের এলাকায় আদিবাসী জনসংখ্যায় ক্রমশ কমছে। আদিবাসী মহিলাদের সঙ্গে বাংলাদেশিদের বিয়ে হচ্ছে। আদিবাসী জনসংখ্যা কমা নিয়ে জেএমএম চিন্তিতই নয়। নিশিকান্তের কথায়, ‘বর্তমানে সংবিধান বিপদের মধ্যে পড়েছে। গরিব, আদিবাসী, দলিত, মহিলাদের কথা বলছি আমরা। রাজ্য অথবা কেন্দ্রীয় সরকার সকলেরই উচিত প্রত্যেক নাগরিকের কাছে পৌঁছনো। আমি যে এলাকা থেকে নির্বাচিত হয়েছিল সেটি আদিবাসী অধ্যুষিত। এক সময়ে যা ছিল বিহারের অন্তর্গত। পরে রাজ্য ভাগ হলে এলাকাটি চলে যায় ঝাড়খণ্ডে। বিহারে থাকাকালীন আমার নির্বাচনী এলাকায় আদিবাসী জনসংখ্যা ছিল ৩৬ শতাংশ। মজার ব্যাপার হল, ঝাড়খণ্ডে চলে যাওয়ার পর সেখানকার আদিবাসী জনসংখ্য়া ২৬ শতাংশে নেমে এসেছে। এখন প্রশ্ন হল জনজাতিভুক্ত ১০ শতাংশ মানুষ গেলেন কোথায়?’ তাঁর সংযোজন, ‘গত কয়েক বছরে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের সংখ্য়া লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে। তাঁদের একাংশের সঙ্গে এই আদিবাসী জনজাতিভুক্ত মহিলাদের বিয়েও হচ্ছে। এ খুব চিন্তার বিষয়। আজকের দিনে দাঁড়িয়ে ওই এলাকাগুলির দিকে তাকালে দেখবেন যে আদিবাসী মহিলারা পঞ্চায়েত বা পুর নির্বাচনের মতো ক্ষেত্রগুলিতে রাজনীতি করছেন তাঁদের প্রত্যেকের স্বামীরা ইসলাম ধর্মাবলম্বী। আমি এখানে সাম্প্রদায়িক কথা বলতে আসিনি। এ এক জটিল সমস্যা, যা নিয়ে চোখ বন্ধ করে রয়েছে ঝাড়খণ্ডের ক্ষমতাসীন দল জেএমএম। ওরা শুধু ভোট ব্যাঙ্কের রাজনীতিই করে।’

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

1 × 4 =