ভূপতিনগর কাণ্ডে কোনও এনআইএ আধিকারিককে গ্রেফতার নয়, কড়া নির্দেশ হাইকোর্টের

ভূপতিনগরের মামলায় কড়া নির্দেশ হাইকোর্টের। বুধবার শুনানিতে স্পষ্ট জানিয়ে দেওযা হয়, ভূপতিনগর কাণ্ডে এনআইএ অফিসারদের গ্রেফতার নয়৷ অর্থাৎ, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকদের  রক্ষাকবচ দিলেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। একইসঙ্গে এদিন আরও একবার বিচারপতির ভর্ৎসনার মুখে পড়ে রাজ্য পুলিশ। এদিকে আদালত সূত্রে খবর, আদালতের তরফ থেকে এদিন রাজ্য পুলিশ প্রশাসনকে প্রশ্ন করা হয়, যেখানে তল্লাশিতে গিয়ে এনআইএ আধিকারিকদের নিগ্রহ করার অভিযোগ উঠেছে, সেখানে অফিসারদের বিরুদ্ধেই কেন অভিযোগ তা নিয়ে। একইসঙ্গে বিচারপতি সেনগুপ্ত এদিন জানতে চান, ‘কোনও প্রমাণ ছাড়া অফিসারের বিরুদ্ধে গুরুতর আহত করার ধারা কেন যুক্ত করলেন তা নিয়েও। কারণ, কেস ডায়েরিতে আঁচড় বা গুরুতর আঘাতের কোনও উল্লেখ নেই। আর সেক্ষেত্রে কীভাবে ৩২৫ ধারায় মামলা হল তা নিয়েই প্রশ্ন করেন বিচারপতি। সঙ্গে জানতে চান,  কে এই ঘটনার তদন্ত করছিলেন তাও। এরই পাশাপাশি বিচারপতির প্রশ্ন ছিল, প্রাথমিক তদন্তের প্রয়োজন অনুভব করেছিলেন কি না রাজ্য পুলিশের তদন্তকারী আধিকারিক তাও।

উল্লেখ্য, ধৃত মনোব্রত জানার স্ত্রীর অভিযোগের ওপর ভিত্তি করেই গুরুতর আঘাত করার অভিযোগে মামলা হয়েছে এনআই অফিসারদের বিরুদ্ধে। এদিকে এনআইএ-র তরফের আইনজীবী এদিন আদালতে দাবি করেন, সন্দেশখালিতে যা হয়েছিল ভূপতিনগরেও তাই হয়েছে। তিনি আরও জানান, হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির নির্দেশ অনুযায়ী ওই এলাকায় কাজ করতে যায় এনআইএ। অন্তত পাঁচজন জড়িত ছিলেন বলে দাবি এনআইএ-র। এরমধ্যে চার জনকে তলব করা হয়েছিল দু’বার। এরপরও তাঁরা যাননি। তদন্তে তাঁদের বিরুদ্ধে প্রমাণ উঠে আসায় তল্লাশিতে যায় এনআইএ। সঙ্গে এও জানানো হয়, ৬ এপ্রিল ভোর সাড়ে চারটেয় সাহায্য চাওয়া হয় পুলিশের কাছে। এরপর গ্রেফতার হন মনোব্রত। সে সময় অন্তত ১০০ মহিলা উপস্থিত ছিলেন বলে দাবি তদন্তকারী সংস্থার। মনোব্রত জানার স্ত্রীর অভিযোগ, ঠিক নয় বলেও দাবি করেন এনআইএ-র আইনজীবী। এনআইএ আধিকারিকদের বিরুদ্ধে যে এফআইআর করা হয়েছে, তার ভিত্তিতে যাতে কোনও পদক্ষেপ না করা হয় সেই আর্জিও জানানো হয় আদালতে।

এদিকে, রাজ্যের দাবি পুলিশের সঙ্গে সঠিকভাবে যোগাযোগই করা হয়নি। আইনজীবী অমিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, কলকাতাতেও কেউ যদি ভোর তিনটেয় আসে, তাহলে থানা কী করবে সন্দেহ আছে। রাজ্যের দাবি, পুলিশ প্রস্তুত ছিল, কিন্তু সকাল ৬ টা ২৫ পর্যন্ত কোনও ফোন যায়নি। পাশাপাশি রাজ্যের যুক্তি হল, কোনও মহিলা যদি এসে ধর্তব্যযুক্ত অভিযোগ করেন থানায়, তাহলে সেটা পুলিশ গ্রহণ করতে বাধ্য। অভিযুক্তের স্ত্রীর অভিযোগ নিয়ে কেন পুলিশ এত উদ্বিগ্ন হয়ে উঠল, সেই প্রশ্নই তুলেছেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত।  এদিকে ডেপুটি সলিসিটর জেনারেল এদিন দাবি করেন, রাজ্যে বারবার কেন্দ্রীয় সংস্থার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। সন্দেশখালির ঘটনার পাশাপাশি তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন, ২০১৯ আয়কর দফতরের অফিসারদের উপরেও হামলা হয়েছিল। হেয়ার স্ট্রিটে গেলে উলটে তাঁদের বিরুদ্ধেই মামলা করে পুলিশ। আদালত সেই ঘটনাকে দুর্ভাগ্যজনক বলে আখ্যাও দিয়েছিল।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

2 × 5 =