লোকসভা ভোটের পর বঙ্গ বিজেপির প্রথম বড় বৈঠকে আলোচনা হয় আসন্ন বিধানসভা উপনির্বাচন নিয়েই। ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে বাংলা থেকে আশানুরূপ ফল হয়নি বিজেপির। যতটা আশা ছিল, তা তো হয়ইনি, উল্টে জেতা আসনও হাতছাড়া হয়েছে। তবে সেদিকে এখন আর না তাকিয়ে সামনে এগিয়ে চলাই বঙ্গ বিজেপির প্রধান লক্ষ্য।
বঙ্গ বিজেপির অন্দরের খবর, এদিনের বৈঠকে অনেক বেশি ফোকাস পেল আসন্ন চার বিধানসভা উপনির্বাচনের প্রার্থী বাছাই। বাগদা, মানিকতলা, রানাঘাট দক্ষিণ ও রায়গঞ্জ- চার আসনের জন্য প্রতিটিতে তিন জন করে সম্ভব্য প্রার্থী বাছাই করা হয়েছে। সব মিলিয়ে চার বিধানসভা কেন্দ্রের উপভোটের জন্য ১২টি প্রস্তাবিত নাম পাঠানো হচ্ছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে। উপনির্বাচনে অন্তত তিনটি আসনে জয়ের ব্যাপারে আত্মপ্রত্যয়ী বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। এমনকী চারে চার হওয়ায় সম্ভাবনাও খোলা রাখছেন তিনি।
একুশের বিধানসভা নির্বাচনে এই চার আসনের মধ্যে তিনটিই ছিল বিজেপির দখলে। বাগদা থেকে বিজেপির টিকিটে জিতেছিলেন বিশ্বজিৎ দাস। রানাঘাট দক্ষিণে বিজেপির থেকে জিতেছিলেন মুকুটমণি অধিকারী। রায়গঞ্জে বিজেপির টিকিটে জিতেছিলেন কৃষ্ণ কল্যাণী। কিন্তু বিধানসভা নির্বাচন পরবর্তী সময়ে বিশ্বজিৎ দাস ও কৃষ্ণ কল্যাণী যোগ দেন তৃণমূলে। আর এবারের লোকসভা ভোটের আগে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন মুকুটমণিও। উপনির্বাচনে আবার মুকুটমণি ও কৃষ্ণ কল্যাণীকে পুরনো আসন থেকেই প্রার্থী করেছে তৃণমূল। তবে এবারের উপনির্বাচন নিয়ে যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী বঙ্গ বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।
শনিবার বঙ্গ বিজেপির সান্ধ্য-বৈঠকের পর সুকান্ত মজুমদার বললেন, ‘এবারও অন্তত তিনটি আসন বাগদা, রানাঘাট দক্ষিণ ও রায়গঞ্জ দখলে রাখব। চারটি আসনেও জিততে পারি। মানিকতলাতে আমরা মাত্র তিন হাজার ভোটে পিছিয়ে রয়েছি। সেটাও শুধুমাত্র হয়েছে শান্তিরঞ্জন কুণ্ডুর বদমায়েশি ও গুন্ডামির জন্য। শান্তিরঞ্জন কুণ্ডু টাইট হলে পরেই সব ঠিক হয়ে যাবে। তবে কুণ্ডুবাবুরও জেনে রাখা উচিত, একদিন না একদিন ওঁরও সময় আসবে।’
তবে এদিনের বৈঠকে ঠিক কী নিয়ে আলোচনা হয়েছে সে ব্য়াপারে বঙ্গ বিজেপি শিবিরের কাউকেই খুব একটা মুখ খুলতে দেখা যায়নি। মুখ খুলতে দেখা যায়নি প্রাক্তন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকেও। তবে লকেট অবশ্য জানান, সদ্য সমাপ্ত লোকসভা ভোটের ফল নিয়ে কোনও আলোচনাই হয়নি। এই প্রসঙ্গে লকেট এও বলেন, ‘এই বিষয় নিয়ে এত কম সময়ের মধ্যে আলোচনা হয় না। এটা নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা আছে, ভবিষ্যতে নিশ্চয়ই আলোচনা হবে।’
তবে লোকসভা নির্বাচন পরবর্তী সময়ে জেলায় জেলায় বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা গোলমাল ও অশান্তির শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠে আসছে। দলীয় সূত্রে খবর, এদিনের বৈঠকে বার্তা দেওয়া হয়েছে ভোট পরবর্তী অশান্তির পরিস্থিতিতে কর্মীদের পাশে দাঁড়াতে হবে প্রার্থীদের। পরাজয় হলেও কর্মীদের পাশে থাকার বার্তাই দেওয়া হয়েছে এদিনের বৈঠক থেকে। এদিনের বৈঠকে বঙ্গ বিজেপির প্রায় সব নেতানেত্রীদের উপস্থিত থাকতে দেখা গেলেও ছিলেন না বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি কোচবিহারে থাকলেও উপস্থিত ছিলেন সুকান্ত মজুমদার, দিলীপ ঘোষ, লকেট চট্টোপাধ্যায়, অগ্নিমিত্রা পালরা।