চিকিৎসার জন্য বরাদ্দ ওষুধের টাকা লুটের অভিযোগ নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজে

ওষুধ সরবরাহকারী সংস্থার সঙ্গে হাসপাতালের কর্মীদের আঁতাতের অভিযোগ। আর সেখানেই সাধারণ মানুষের চিকিৎসার জন্য বরাদ্দ ওষুধের টাকা লুটের অভিযোগ উঠল খাস কলকাতায় নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজে। ভুয়ো বিল তৈরি করে হেমাটোলজি, মাইক্রোবায়োলজি, স্ত্রীরোগ বিভাগের ওষুধ গায়েব করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। আর এই চক্রে নাম উঠে আসছে হাসপাতালের‌ কর্মীদের একাংশের।

অভিযোগ উঠেছে, ডেটা এন্ট্রি অপারেটরের লগ-ইন আইডি হাতিয়ে ওষুধ সরবরাহকারী সংস্থার নামে ভুয়ো বিল তৈরি করে টাকা লুট করা হত। এদিকে এন‌আর‌এস-এর এই ঘটনা কোন‌ও কেলেঙ্কারির থেকে কম নয় বলে দাবি বিরোধী চিকিৎসক সংগঠনগুলির।

ঘটনার সূত্রপাত গত শনিবার। এন‌আর‌এস-এর স্ত্রীরোগ বিভাগের নামে ‘গুডস রিসিভ নোট’ দেখতে পান স্টোরের কর্মীরা। তাতেই সন্দেহ হয় কর্মীদের। কারণ গত কয়েক বছর ধরে স্ত্রী রোগ বিভাগ ওই ওয়ার্ডের‌‌ই কোন‌ও অস্তিত্ব‌ নেই। এরপর সেই দেখা যায় বিল তৈরির পদ্ধতির মধ্যেই গলদ রয়েছে। হাসপাতালের ডেটা এন্ট্রির লগ-ইন পাস‌ওয়ার্ড হাতিয়ে ওই কাজ করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে হাসপাতালেরই দুই গ্রুপ ডি কর্মীর বিরুদ্ধে। ওষুধ সরবরাহকারী সংস্থার নামে বিল তৈরি করে পরে ওই সংস্থার কাছ থেকে অভিযুক্তরা কমিশন পেত বলে অভিযোগ উঠছে। আর এখানেই প্রশ্ন, তাহলে এই পথেই দীর্ঘদিন ধরে সরকারের কোটি কোটি টাকা লুট হচ্ছিল কি না তা নিয়েই।

এদিকে এন‌আর‌এস-এর এই ঘটনায় বেশ‌ কিছু প্রশ্ন সামনে এসেছে। যার মধ্যে সর্বপ্রথম প্রশ্ন, পোর্টালের লগ-ইন পাস‌ওয়ার্ড গ্রুপ ডি কর্মীদের হাতে গেল কী ভাবে গেল তা নিয়ে। আর এখানেই অনেকের ধারনা, মাথায় বড় হাত না থাকলে গ্রুপ ডি কর্মীর পক্ষে এই চক্র চালানো সম্ভব নয়। এরই পাশাপাশি খুহব স্বাভাবিকভাবে যে প্রশ্ন আসছে তা হল, কতদিন ধরে চলছে এই চক্র। এদিকে, ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা পুরো অভিযোগ অস্বীকার করেছে। অথচ সেই সংস্থার নামেই তৈরি হয়েছে ভুয়ো বিল। এন‌আর‌এস কর্তৃপক্ষ এই বিষয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে। সে ক্ষেত্রে কাউকে আড়াল করা হচ্ছে কি না, সেই প্রশ্নও উঠেছে।

এদিকে রোগীদের তরফ থেকে জানানো হচ্ছে, সরকার বলছে ওষুধ জোগান দিচ্ছে, অথচ স্টোরে গেলে ওষুধ পাওয়া যাচ্ছে না। এই ঘটনায় সাধারণ রোগীরা সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলেই দাবি করা হচ্ছে। এই প্রসঙ্গে চিকিৎসক সংগঠনের সম্পাদক মানস গুমটা জানান, ‘হাসপাতালে ঢুকছে না’ ওষুধ। তৈরি হয়ে যাচ্ছে ভুয়ো বিল।’ অন্যদিকে, ওষুধ সরবরাহকারী সংস্থার মালিক রাজদীপ সরকার জানান, ‘এর পিছনে কোনও চক্রান্ত থাকতে পারে।’ সঙ্গে তিনি এও জানান, এইসব ঘটনার সঙ্গে তিনি যুক্ত নন। এদিকে এই ঘটনায় চিকিৎসক তথা তৃণমূল নেতা শান্তনু সেন জানান, ‘বিষয়টা খতিয়ে দেখতে হবে। সত্যতা আছে কি না দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিষয়টির সত্যতা প্রমাণিত হলে কেউ ছাড় পাবে না।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

two − one =