দীর্ঘদিন ধরেই স্থানীয়দের চায়ের আড্ডা ছিল গড়িয়া স্টেশন সংলগ্ন কয়লাপট্টির একটি ছোট চায়ের দোকান। কিন্তু সোমবার রাতে সেখানেই ঘটে যায় এক ভয়ংকর ঘটনা। আর এই চায়ের দোকানে চা খেতে এসে ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হন এক নার্স। দোকানি তাঁকে চায়ের সঙ্গে মাদক মিশিয়ে বেহুঁশ করে ধর্ষণের চেষ্টা করে বলে অভিযোগ। এরপরই এই ঘটনায় অভিযোগ দায়ের হয় নরেন্দ্রপুর পুলিশ স্টেশনে। অভিযোগ পেতেই তদন্তে নামে নরেন্দ্রপুর থানার পুলিশ। এরপরই গ্রেপ্তার করা হয় চায়ের দোকানের মালিক সোমনাথ পাণ্ডাকে।
পুলিশ সূত্রে খবর, এই নার্স থাকেন এই নরেন্দ্রপুরেই। সোমবার রাত প্রায় ১০টা নাগাদ তিনি ওই দোকানে চা খেতে যান। একইসঙ্গে ভিন্ রাজ্যে কর্মরত স্বামীর কাছে টাকা পাঠানোর ব্যাপারেও চায়ের দোকানের মালিক সোমনাথের সাহায্য দরকার ছিল তাঁর। দোকানে বসে নানা কথাবার্তার মাঝেই তাঁকে চা দেন সোমনাথ। নার্সের অভিযোগ, এই চায়ের মধ্যেই মিশিয়ে দেওয়া হয়েছিল মাদকজাতীয় কিছু। কারণ, চা পান করার কিছুক্ষণ পরেই অসুস্থ বোধ করতে শুরু করেন তিনি। এর একটু বাদেই চেতনাও হারান। দীর্ঘক্ষণ অচেতন অবস্থায় দোকানেই পড়ে ছিলেন ওই নার্স। প্রায় সাড়ে বারোটা নাগাদ যখন তার জ্ঞান ফেরে তখন নজের আসে শরীর থেকে উধাও পোশাক। কোনওরকমে শরীর ঢেকে, নিজেকে সামলে রাত আড়াইটা নাগাদ সেখান থেকে পালিয়ে আসেন তিনি। সঙ্গে পরিবারের সদস্যদের গোটা বিষয়টি জানান তিনি। এরপর মঙ্গলবার সকালেই নরেন্দ্রপুর থানায় দায়ের করা হয় লিখিত অভিযোগ। অভিযোগ পাওয়ার পরই দ্রুত অভিযানে নামে পুলিশ। গ্রেপ্তার করা হয় অভিযুক্ত সোমনাথ পাণ্ডাকে।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার রাতে অভিযুক্ত এবং নির্যাতিতার মোবাইল ফোন-সহ দোকান থেকে উদ্ধার করা হয়েছে একাধিক সামগ্রী। কীভাবে এবং কোন উপায়ে নার্সকে মাদক খাইয়ে অচেতন করা হয়েছিল তাও জানার চেষ্টা চলছে। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে চায়ের কাপ ও ব্যবহৃত জিনিসপত্রও। পাশাপাশি নির্যাতিতার শারীরিক পরীক্ষা এবং আদালতে গোপন জবানবন্দির আবেদনও করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। তদন্তে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে দোকানে থাকা সিসিটিভি ফুটেজ, মোবাইল ফোনের কল রেকর্ড ও ফরেনসিক পরীক্ষাতেও।