উত্তরবঙ্গে পৌঁছালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাগডোগরায় নেমে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন, ৫ জন মারা গিয়েছেন দুর্যোগে। মমতা বলেন, ‘আমি দেখলাম ভয়াবহ ঝড়টা এসেছিল। খুব ক্ষণিকের জন্য। ক্ষতি কোচবিহারেও হয়েছে, আলিপুরদুয়ারেও হয়েছে। কিন্তু জলপাইগুড়ির ক্ষতিটা হল ৫ জন মারা গিয়েছেন। একটি বাচ্চাকে নিয়ে আসা হচ্ছে রাতেই। আরেকজনকে উত্তরবঙ্গ হাসপাতালে শিফট করা হচ্ছে। সোমবার বিকালে অভিষেক আসবে, দেখে নেবে। রাজ্য সরকার সম্পূর্ণ পাশে আছে। তবে এখন যেহেতু এমসিসি কোড চলছে প্রশাসন দায়িত্ব নিয়ে যা যা করার সব করবে।’ এরপরই আহতদের দেখতে রাতেই জলপাইগুড়ি রওনা হন তিনি।
এদিন জলপাইগুড়ি হাসপাতালে যাওয়ার পথে প্রথমে গোশালা মোড়ে নামেন তিনি। যান মৃত অনিমা বর্মনের বাড়িতে। পরিবারের সঙ্গে দেখা করার পর এলাকার বেশ কয়েকটি ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি পরিদর্শন করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভিডিও কলে ত্রাণ শিবিরে থাকা বেশ কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। এর পর চলে যান কালীতলা রোডে। সেখানে আরেক মৃত দ্বিজেন্দ্রনারায়ণ সরকারের বাড়িতে যান তিনি। বেশ কিছুক্ষণ সেখানে ছিলেন তিনি। কথা বলেন পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে। সমবেদনা জানানোর পাশাপাশি আশ্বাস দেন পাশে থাকার।
ঘড়ির কাঁটায় রাত সাড়ে ১২ টায় হাসপাতালে প্রবেশ করেন তিনি। আহতরা ভর্তি পাঁচতলায়। ফলে মুখ্যমন্ত্রী সোজা চলে যান পাঁচতলায়। আহতদের সঙ্গে গিয়ে কথা বলেন তিনি। কার কী সমস্যা আছে তা শোনেন। কোথায় লেগেছে জিজ্ঞেস করেন। কথা বলেন চিকিৎসকদের সঙ্গেও। মুখ্যমন্ত্রীকে পাশে পেয়েই অনেকেই বলেন, ঝড়ে তাঁদের বাড়ি ভেঙে গিয়েছে। নির্বাচনী বিধি লাগু হওয়ায় তিনি কোনও আর্থিক সাহায্য ঘোষণা না করলেও সকলের পাশে থাকার আশ্বাস দেন। হাসপাতাল থেকে বেরনোর সময় হাসপাতাল কর্মীদের প্রশংসা করেন তিনি। জানান উদ্ধারকাজ শেষ হয়েছে। সঙ্গে এও জানান, ‘দলের সকলে কাজ করেছে। প্রশাসন ভাল করেছে। এখন রাজনীতির সময় নয়।’
এদিকে যে ঝড় রবিবার বিকালে হয়েছে তা কালবৈশাখী নাকি টর্নেডো তা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। ময়নাগুড়ির একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে। যার সঙ্গে মিল রয়েছে টর্নেডোর। কয়েক মিনিটের ঝড় উড়িয়ে নিয়ে গিয়েছে সবকিছু। আলিপুরদুয়ার ১- ব্লক ও কুমারগ্রামে ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তবে প্রাণহানির কোনও খবর নেই। আলিপুরদুয়ার-১ নম্বর ব্লকের তিনটি গ্রামপঞ্চায়েত এলাকা বিদ্যুৎ বিহীন। অন্ধকারে এলাকা। জেলাশাসক আর বিমলা জানিয়েছেন, বিদ্যুৎ দফতর কাজ শুরু করেছে। মাথাভাঙায় কয়েক মিনিটের ঝড়ে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত বেশ কয়েকটি এলাকা। এখনও পর্যন্ত বেশ কয়েকজন আহত হয়ে চিকিৎসাধীন বলে খবর পাওয়া গিয়েছে। মহকুমাজুড়ে অসংখ্য বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত বলে খবর। মাথাভাঙা-১ ব্লকের কুর্শামারি পচাগড় গ্রামপঞ্চায়েতের বড় কাঊওয়ারডারা এলাকায় ব্যাপক ঝড়ের তাণ্ডব চলে বলে জানা গিয়েছে।