ঘোষিত কর্মসূচি অনুসারে বুধবার ঠিক রাত ৯ টায় তা শুরু করেন আরজি করের আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসকরা। হাসপাতালে ধর্নামঞ্চের সামনে আলো নেভানো হয়, জ্বালানো হয় মোমবাতি এবং প্রদীপ। এরপর আরজি করে নির্যাতিতার স্মরণে নীরবতা পালন করা হয়। দু’মিনিট নীরবতা পালন করেন চিকিৎসকেরা। ‘আগুনের পরশমণি’ গান ধরেন প্রতিবাদীরা। বিচার পেতে আলোর পথে, প্রদীপ জ্বালিয়ে অভিনব প্রতিবাদে আরজি করের পড়ুয়ারা। নাগরিক সমাজকেও প্রতিবাদ করার আবেদন জানিয়েছিলেন জুনিয়র চিকিৎসকদের। আর তাতে সাড়া দিয়েছ তিলোত্তমাবাসী। আরজি কর হাসপাতালে প্রতিবাদে শামিল হয়েছেন নির্যাতিতার বাবা, মা এবং পরিবারের সদস্যেরা। মোমবাতি হাতে নিয়ে ‘বিচার চাই’ স্লোগানে গলা মেলান তাঁরাও। নির্যাতিতার মা জানান, ‘আর জি কর যেমন আমার একটা মেয়েকে কেড়ে নিয়েছে, তেমনি লাখ-লাখ ছেলেমেয়েকে আমার কাছে এনে দিয়েছে। আমাকে অনেক শক্ত করেছে। আমি বিচার চাই। আমার যেমন প্রতিটা দিন, প্রতিটা রাত্রি ঘুমহারা, দোষীদের-ও যেন সেই অবস্থাই হয়।’ অস্বীকার করার উপায় নেই ১৪ অগাস্ট পথ দখল করেছিল তামাম রাজ্য। চাহিদা একটাই, আরজি করের নিহত চিকিৎসক-পড়ুয়ার খুনের বিচার চাই। গর্জে উঠেছিলেন সর্বস্তরের মানুষ। মধ্যরাতে রাস্তায়-রাস্তায়, মোড়ে-মোড়ে মানুষের ঢল নামে। কার-ও হাতে ছিল মোমবাতি,কারও হাতে মশাল। মুখে স্লোগান। কোথাও বা অনুষ্ঠিত হয়েছিল পথ-নাটিকা, কোথাও বা রাস্তা জুড়ে আঁকা হয়েছিল গ্র্যাফিটি। ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’। এই কর্মসূচির ডাক ছিল সমাজমাধ্যমে হওয়া পোস্টের মাধ্যমে।
এবার সরাসরি কর্মসূচির ডাক দেয় জুনিয়র ডাক্তারদের সংগঠন।‘ বিচার পেতে আলোর পথে’ নামে কর্মসূচি পালিত হয় আরজি করে। প্রথমে বলা হয়, শহরবাসী যেন ঘরের আলো নিভিয়ে মোমের আলোয় প্রতিবাদ জানান। কিন্তু বিভিন্ন মহল থেকে বলা হয়, মোমের আলোয় আলোর পথ তৈরি হোক। রাজি হন জুনিয়ার চিকিৎসকদের দলও।
আরজি কর থেকে যাদবপুর, কলেজ স্ট্রিট থেকে ধর্মতলা- গোটা শহর জুড়ে চলে এই প্রতিবাদ মিছিল। বর্ধমানের কার্জন গেটে রাত দখল পালন করেন মানবীরা। রাত নটা থেকে ঘণ্টা খানেক জিটিরোডে অবস্থান করেন তাঁরা। উই ওয়ান্ট জাস্টিস স্লোগান দেন তাঁরা। গানের মাধ্যমে আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদ জানান জুনিয়র ডাক্তাররা।
আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে মোমবাতি মিছিল ধূপগুড়িতে। মিছিলে পা মেলান আট থেকে আশি সকলেই। মিছিল গোটা শহর পরিক্রমা করে। ধূপগুড়ি বাসস্ট্যান্ড চৌপতি এলাকায় নাগরিক মঞ্চের তরফে মোমবাতি হাতে প্রতিবাদ জানানো হয়। রায়গঞ্জের দেহশ্রী মোড়ে মোমবাতি জ্বালিয়ে আরজি করের ঘটনা নিয়ে প্রতিবাদের শামিল হলেন সাধারণ মানুষ।