অলোকেশ ভট্টাচার্য
সংসদকে মুড়ে ফেলা হচ্ছে নিরাপত্তার চাদরে। জোর। আজ থেকে ৩ হাজার ৩০০ জনেরও বেশি সিআইএসএফ কর্মী সংসদ চত্বরে সন্ত্রাসবাদ ও নাশকতা বিরোধী নিরাপত্তা প্রদানের দায়িত্ব নিজেদের কাঁধে তুলে নেবেন। উল্লেখ্য, পুরনো সংসদে হামলার পাশাপাশি নয়া ভবনে অনাহুত অতিথি ‘গণতন্ত্রের মন্দিরে’ নিরাপত্তার গলদের ছবি একাধিকবার দেখেছে দেশ। অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে সংসদ ভবনের নিরাপত্তায় এবার মাছি গলার মতোও ফাঁক রাখতে চাইছে না দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক।
প্রসঙ্গত, এতদিন সংসদ ভবনের নিরাপত্তার দায়িত্ব ছিল দিল্লি পুলিশ এবং সিআইএসএফের হাতে। এখন থেকে আর দিল্লি পুলিশের হাতে থাকছে না এই নিরাপত্তার দায়িত্ব। পুরোটাই তুলে দেওয়া হল কেন্দ্রীয় বাহিনীর হাতে। দিল্লিতে অবস্থিত পুরনো ও নতুন উভয় সংসদ ভবনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও মজবুত করতে মোট ৩ হাজার ৩১৭ জন সিআইএসএফ কর্মী নিয়োগ করছে কেন্দ্র। সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় সংসদ ভবনের নিরাপত্তার আরও আঁটোসাঁটো করার। এই সিদ্ধান্ত সংসদের নিরাপত্তা বিভাগকেও জানিয়ে দেওয়া হয়। ফলে এবার থেকে সংসদ ভবনে ঢোকার পাস থেকে শুরু করে গাড়ি নিয়ে ভিতরে যাওয়ার ছাড়পত্র দেওয়ার ক্ষমতাও থাকবে সিআইএসএফের হাতে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সংসদ ভবনের নিরাপত্তা নিয়ে একটি কমিটি গঠন করেছিল। সেই কমিটির সুপারিশ মেনেই যাবতীয় পদক্ষেপ করা হয়। অর্থাৎ এর থেকে স্পষ্ট, এখন থেকে সংসদ ভবনে যাওয়ার ক্ষেত্রে সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধি, ভিভিআইপি থেকে শুরু করে সাংসদদের সহায়ক সহ অন্যান্য বিভিন্ন ব্যক্তিদের অবাধ যাতায়াতে নিরাপত্তা বিভাগ লাগাম টানতে চলেছে। সংসদ ভবনে ঢোকার সমস্ত গেটে পাস পরীক্ষা করার প্রক্রিয়া সিআইএসএফ ইতিমধ্যেই শুরু করেছে। সকাল ৬টা থেকে এই পাস পরীক্ষার কাজ শুরু করে কেন্দ্রীয় বাহিনী। এদিকে সূত্রে খবর, বুধবার তারা ডগ স্কোয়াড, সিসিটিভি রুমের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। এরপর সোমবারের পাস ইস্যু করা থেকে শুরু করে যানবাহনের নিয়ন্ত্রণ সহ একাধিক প্রক্রিয়া নিজেদের হাতে নেবে সিআইএসএফ।
এই নিরাপত্তা বাড়ানোর ঘটনার পিছনে রয়েছে গত ডিসেম্বরের ঘটনা। এক যুবক লোকসভার কক্ষে ঝাঁপ দেওয়ার ঘটনায় সংসদের নিরাপত্তা প্রশ্নের মুখে পড়ে। এরপরই উভয় কক্ষের নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখে তা ঢেলে সাজানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সংসদে নিরাপত্তা লঙ্ঘনের ঘটনায় আট পুলিশ কর্মীকে বরখাস্ত করার পাঁচ মাস পরে, সংসদের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পার্লামেন্ট সিকিউরিটি সার্ভিসেসের তরফে ফের সেই সকল পুলিশ কর্মীকে পুনর্বহাল করার বিষয়ে দিল্লি পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কয়েক দিন আগেই। গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর সংসদের নিরাপত্তা লঙ্ঘনের ঘটনায় সিআরপিএফ-এর ডিজি অনীশ দয়াল সিংয়ের নেতৃত্বে গঠিত একটি কমিটির প্রাথমিক তদন্তে নিরাপত্তার ত্রুটির বিষয়টি সামনে আসার পর দিল্লি পুলিশের আট নিরাপত্তা কর্মীকে বরখাস্ত করা হয়েছিল।