আর মাত্র দু’দিন, তার মধ্যেই মেটাতে হবে বকেয়া ডিএ, রাজ্য সরকার কতটা প্রস্তুত উঠল প্রশ্ন

হাতে আর মাত্র দুটো দিন। আর এই দু’দিনের মধ্যে রাজ্যের সরকারি কর্মচারিদের দিতে হবে ২০০৯ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত ২৫ শতাংশ বকেয়া ডিএ, এমনটাই নির্দেশ শীর্ষ আদালতের। এদিকে বুধবার দুপুর পর্যন্ত নবান্ন বা অর্থ দপ্তর থেকে কোনও নির্দেশিকা জারি হয়নি। এদিকে কানাঘুষো এও শোনা যাচ্ছে, বকেয়া ডিএ মেটানো নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশের পরিবর্তন চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করা হয়েছে। আদালত যে নির্দেশ দিয়েছে, তার কয়েকটি ক্ষেত্রে সুষ্পষ্ট ব্যাখ্যা চেয়েই আবেদন করা হচ্ছে রাজ্যের তরফ থেকে।কিন্তু সুপ্রিম কোর্টে যেহেতু ছুটি চলছে সেই কারণে এই আবেদন এখনও তালিকায় ওঠেনি। তবে পাশাপাশি দেশের সর্বোচ্চ আদালতের নির্দিষ্ট করে দেওয়া সময়ের কথা মাথায় রেখেই বকেয়া ডিএ বা মহার্ঘভাতা দেওয়ার বিষয়েও তোড়জোড় শুরু করেছে নবান্ন। এদিকে অপর একটি সূত্র জানাচ্ছে, ২৫ শতাংশ ডিএর ৮০ শতাংশ কর্মচারিদের দিয়ে বাকি ২০শতাংশ প্রভিডেন্ট ফান্ডে জমা করা হবে। এভাবে দিলে শীর্ষ আদালতের নির্দেশ অবমাননা করা হবে কিনা সে ব্যাপারেও আইনি পরামর্শ নিচ্ছে রাজ্য সরকার।

এদিকে ডিএ সংক্রান্ত কোনও নির্দেশিকা জারি না হওয়ায় রাজ্যের কর্মচারিরা এখনও ধোঁয়াশায়। এদিকে সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়ে রেখেছে , ২৭জুনের মধ‍্যে ২৫ শতাংশ ডিএ দিতে হবে রাজ্য সরকারকে।এ ব্যাপারে ১৫ জুনের মধ‍্যে বিজ্ঞপ্তি জারি করতেও বলা হয়েছিল।তবে বাস্তবে তা হযনি। তাই শেষ পর্যন্ত এই টাকা অ্যাকাউন্টে না আসা পর্যন্ত কোনও ভাবেই নিশ্চিন্ত হতে পারছেন না সরকারি কর্মচারিরা।

এই প্রসঙ্গে একটা তথ্য জানা থাকা জরুরি। রাজ্য সরকারি কর্মীদের ২৫ শতাংশ এই বকেয়া ডিএ দিতে গেলে রাজ্যের দরকার ১০ হাজার কোটি টাকা। ২৫ শতাংশ ডিএর ৮০ শতাংশ দিলে এখন দরকার প্রায় সাড়ে ৭ হাজার কোটি। এদিকে সূত্র মারফত্ খবর মিলছে, ইতিমধ্যেই রিজার্ভ ব্যাঙ্ক থেকে কয়েক হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে রাজ্য সরকার। এই প্রসঙ্গে রাজনৈতিক এবং অর্থনীতিবিদদের একাংশের ধারনা, খুব সম্ভবত ডিএ মেটাতেই এই ঋণ নিয়েছে সরকার। যদিও  সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের আহ্বায়ক ভাস্কর ঘোষ এ ব্যাপারে একমত নন। তাঁর ধারনা, এরকম কোনও সিদ্ধান্ত আদৌ নেওয়া হয়নি। নিছক একটা গুজব ছড়ানো হয়েছে। সরকারের তো লোন নেওয়ার দরকার নেই। কারণ, মুখ্যমন্ত্রী তো নিজেই ফেসবুকে লিখেছেন, রাজ্যের আর্থিক অবস্থা ভাল। আর এখানেই ভাস্করবাবুর প্রশ্ন, তাহলে এই ডিএ-এর টাকা মেটাতে কেন ১০ হাজার কোটি টাকা দেওয়ার জন্য ঋণ কেন নিতে হবে? এরই রেশ ধরে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের আহ্বায়কের হুঁশিয়রি, নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে এই ডিএ না মিললে তাঁরা আদালত অবমাননার মামলা করবেন। শুধু তাই নয়, বৃহত্তর এক আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দিয়ে রাখলেন। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

19 − two =