রাতভর বৃষ্টি দক্ষিণবঙ্গের জেলায়, তবে বৃহস্পতিবার থেকে ফিরছে গরম

রাতভর বৃষ্টি হয়েছে কলকাতা-সহ সংলগ্ন জেলাগুলিতে। মঙ্গলবার সকাল থেকে অংশত মেঘলা আকাশ। তবে এই বৃষ্টির জেরে গত কয়েকদিনের গরম কাটিয়ে আপাতত স্বস্তি নেমেছে কলকাতা-সহ গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের জেলাগুলিতে। তবে এই স্বস্তি খুব বেশিদিনের নয় বলেই জানিয়ে দিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর। মাঝে আর একটা দিন। বৃহস্পতিবার থেকে ফের দক্ষিণবঙ্গের জেলায় জেলায় বাড়বে গরম, অস্বস্তি। তবে বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে। ভারী বৃষ্টি হতে পারে উত্তরবঙ্গের উপরের দিকের পাঁচ জেলা দার্জিলিং, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার ও জলপাইগুড়িতে। ইতিমধ্যেই তিস্তা, তোর্সা, জলঢাকা-সহ উত্তরের নদীগুলির জলস্তর বাড়তে শুরু করেছে। ভারী বৃষ্টি হলে বিপদ আরও বাড়বে। বুধবার পর্যন্ত রাজ্যজুড়ে হালকা মাঝারি বর্ষার বৃষ্টি হওয়ার কথা। উপকূল সংলগ্ন জেলাগুলিতে দুই এক পশলা ভারী বৃষ্টি হতে পারে।

মঙ্গলবার সকালে কলকাতায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৫.৪ ডিগ্রি। সোমবারের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৯.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসে আপেক্ষিক আর্দ্রতার পরিমাণ ৮৫ থেকে ৯৭ শতাংশ। এই মুহূর্তে মৌসুমী অক্ষরেখা রয়েছে পোরবন্দর, আহমেদাবাদ, উদয়পুর নারনাউল ও ফিরোজপুরের উপর। আগামী দু’দিনে দক্ষিণ পশ্চিম মৌসুমী বায়ু গুজরাত, রাজস্থানের আরও কিছু অংশ, হরিয়ানা, পঞ্জাবের বাকি অংশে ঢুকে পড়বে। অন্যদিকে এই মুহূর্তে ছত্তিশগড়ে একটি নিম্নচাপ অবস্থান করছে। ক্রমশ তা মধ্যপ্রদেশের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আবহাওয়া অফিস সূত্রে খবর,আগামী কয়েকদিনে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে তাপমাত্রা নামবে। এদিকে রাতভর প্রবল বর্ষণে বিধ্বস্ত মুম্বই, ঠানে-সহ অন্যান্য মহারাষ্ট্রের শহরতলি। আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস, ২৯ জুন থেকে ২ জুলাই পর্যন্ত ভারী বর্ষণ চলবে মুম্বইয়ের শহরতলি এলাকাগুলিতে। ফলে স্থানীয়ভাবে দেখা দিতে পারে আ‍ঞ্চলিক বন্যা। মুম্বই এবং এর সংলগ্ন থানে ও পালঘর জেলায় সোমবার কমলা সতর্কতা বা অরেঞ্জ অ্যালার্ট জারি করেছে আবহাওয়া দপ্তর। হাল্কা থেকে মাঝারি বৃষ্টি চলবে পুণাতেও বুধবার পর্যন্ত। জমিয়ে বর্ষা চলছে মরুরাজ্য রাজস্থানেও। আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস, আগামী কয়েক দিন বৃষ্টি চলবে রাজস্থানের আজমের, আলওয়ার, বনসওয়ারা, ভরতপুর, ভিলওয়াড়া, বুঁদি, চিত্তোরগড়, ঢোলপুর, দুঙ্গারপুর, জয়পুর এলাকাগুলিতে। আজমের, ভিলওয়াড়া, টঙ্ক-সহ কিছু জেলায় অরেঞ্জ অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে।

বর্ষণ চলছে ভূস্বর্গেও। জম্মু কাশ্মীরের বেশ কিছু অংশে সোমবার বৃষ্টি চলেছে। ধসে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন জম্মু কাশ্মীর জাতীয় সড়কে। পাশাপাশি বৃষ্টি চলছে এবং বর্ষণের পূর্বাভাস রয়েছে দিল্লি ও সংলগ্ন এলাকা, মধ্যপ্রদেশ এবং গুজরাতেও।

লাগাতার ভারী বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হিমাচল প্রদেশও। হড়পা বানে প্রাণ হারিয়েছেন কমপক্ষে ৬ জন। আহত অন্তত ১০। হড়পা বান এবং ধসের জেরে বন্ধ চণ্ডীগড়-মানালি হাইওয়ে। আটকে পড়েছেন পর্যটকরা। দুর্যোগ থেকে রেহাই পায়নি দেশের উত্তর পূর্বাঞ্চলও। অসমের ডিব্রুগড়ে প্রবল বর্ষণ চলেছে। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস, মঙ্গলবারও ডিব্রুগড়ে দু’ এক পশলা বৃষ্টি হতে পারে। আকাশ থাকবে আংশিক মেঘাচ্ছন্ন। তবে অসমের বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। বিপদসীমার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ব্রহ্মপুত্র এবং অন্যান্য নদীর জল কমতে শুরু করেছে। এদিকে অসমে বন্যা পরিস্থিতিতে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৫ জন। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ৫ লক্ষের বেশি মানুষ। ভেসে গিয়েছে বিস্তৃত চাষের জমি।

 

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fourteen − ten =