কলকাতা ভিত্তিক হলদিরাম ভুজিয়াওয়ালা লিমিটেডের তরফ থেকে ঘোষণা করা হয়েছে যে, তাদের প্রাইভেট প্লেসমেন্ট রাউন্ড সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। আর এখানে প্যান্টোমাথ–এর ভারত ভ্যালু ফান্ড (বিভিএফ) সংখ্যালঘু অংশীদারিত্বের জন্য কোম্পানিতে ভারতীয় মুদ্রায় ২৩৫০ মিলিয়ন বিনিয়োগ করেছে। হলদিরাম ভুজিয়াওয়ালা লিমিটেড ‘প্রভুজি’ ব্র্যান্ডের অধীনে তাদের পণ্য বিক্রি করে।
এই প্রসঙ্গে বলে রাখা শ্রেয়, ভারতের দ্রুত বর্ধনশীল সেক্টরগুলির মধ্যে অন্যতম স্ন্যাকস মার্কেট, যার বাজার মূল্য ২০২৪ অর্থবর্ষে প্রায় ভারতীয় মুদ্রায় ৪২৬ বিলিয়ন টাকা। এই মূল্যই ২০৩২ অর্থবর্ষের মধ্যে ১১% বার্ষিক বৃদ্ধির হারে প্রায় ৯৫৫ বিলিয়ন টাকায় পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছে সংস্থা। এই বাজারে সুসংগঠিত অংশীদাররা, যাদের বাজারে উল্লেখযোগ্য শেয়ার রয়েছে, এই বৃদ্ধির মূল চালক হিসেবে কাজ করবে। পণ্য বৈচিত্র্যে ধারাবাহিক মনোযোগ, মান, সুবিধা এবং নিরাপত্তা মান বজায় রাখার প্রতি দৃঢ় প্রতিশ্রুতি তাদের আরও সম্প্রসারণের জন্য প্রস্তুত করবে।
স্ন্যাকস ও নোনতা খাবারের শিল্পে হলদিরাম ভুজিয়াওয়ালা লিমিটেডের ছয় দশকেরও বেশি সময়ের ঐতিহ্য রয়েছে। কোম্পানিটি ‘প্রভুজি’ ব্র্যান্ডের অধীনে তার পণ্য বিক্রি করে, যার একশোর বেশি পণ্য পোর্টফোলিও রয়েছে এবং যা বিশেষ করে পূর্ব ও উত্তর–পূর্ব ভারতের বাজারে শক্তিশালী ব্র্যান্ড হিসেবে পরিচিত সর্বস্তরে। এর পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গ ও উত্তর–পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিতে তাদের কুইক সার্ভিস রেস্তোরাঁ রয়েছে। আধুনিক ব্র্যান্ড ‘প্রভুজি’ এখন একটি জনপ্রিয় নাম হয়ে উঠেছে। যাকে এক আলাদা মাত্রাই দিচ্ছে কোম্পানির নতুন প্রজন্মের মার্কেটিং কৌশল। এর পাশাপাশি ব্র্যান্ডের অ্যাম্বাসেডর হিসেবে রয়েছেন বলিউডের কিংবদন্তি অভিনেতা শাহরুখ খান ও রশ্মিকা মন্দানা।
হলদিরাম ভূজিয়াওয়ালা লিমিটেডের ব্যবসায়ের শক্তিশালী মিশ্রণে নিজস্ব খুচরো বিক্রয় ও বিতরণ ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। কোম্পানির প্রায় ২০০০ ডিস্ট্রিবিউটরের একটি বিস্তৃত নেটওয়ার্ক রয়েছে, যা সারা দেশে ২,০০,০০০–এরও বেশি খুচরো বিক্রেতার কাছে পরিষেবা পৌঁছে দেয়। কোম্পানির ১৯টি নিজস্ব খুচরো দোকান ও ৬০টি ফ্র্যাঞ্চাইজি স্টোর রয়েছে, যা সরাসরি গ্রাহকদের কাছে পৌঁছাতে সহায়তা করে। বর্তমানে, কোম্পানির বাজারগুলির মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, ঝাড়খণ্ড এবং উত্তর–পূর্বাঞ্চল অন্তর্ভুক্ত। কোম্পানি তার উৎপাদন এবং পূর্ব ও উত্তর–পূর্ব ভারতের বাইরে বাজার সম্প্রসারণের লক্ষ্যে এই তহবিল ব্যবহার করবে। হলদিরাম ভুজিয়াওয়ালা লিমিটেডের ৩টি উৎপাদন ইউনিট রয়েছে, যেগুলির সম্মিলিত বার্ষিক উৎপাদন ক্ষমতা ৬,০৩৫ মেট্রিক টন।
এই প্রসঙ্গে মণীশ আগরওয়াল, ম্যানেজিং ডিরেক্টর, হলদিরাম ভূজিয়াওয়ালা লিমিটেড এই উপলক্ষে বলেন, ‘গত ৬০ বছরেরও বেশি সময় ধরে আমরা সুস্বাদু স্ন্যাকস ও মিষ্টি সরবরাহের মাধ্যমে এক বিশাল বিশ্বস্ত গ্রাহকভিত্তি তৈরি করেছি। আমাদের কোম্পানি ভারতীয় খাদ্যাভ্যাস ও রুচির ক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটিয়ে একটি পথপ্রদর্শক হয়ে উঠেছে।’
এর পাশাপাশি তিনি এও বলেন, ‘আমাদের শিল্প সম্পর্কে অর্জিত অভিজ্ঞতা এবং বিভিএফ–এর সহযোগিতা কাজে লাগিয়ে আমরা শেয়ারহোল্ডারদের জন্য মূল্য বৃদ্ধি এবং প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য কৌশলগতভাবে প্রস্তুত রয়েছি। এই অংশীদারিত্ব দীর্ঘমেয়াদী আর্থিক সুবিধা নিশ্চিত করতে একটি শক্তিশালী ভিত্তি গড়ে তুলবে এবং সকল স্টেকহোল্ডারের জন্য একটি সমৃদ্ধ ভবিষ্যত গড়ার প্রতিশ্রুতি রাখে।’
হলদিরাম ভুজিয়াওয়ালা লিমিটেডে তাদের বিনিয়োগ সম্পর্কে, মধু লুনাওয়াট, সিআইও, ভারত ভ্যালু ফান্ড বলেন, ‘হলদিরাম ভূজিয়াওয়ালা লিমিটেডের সাথে অংশীদার হতে পেরে আমরা আনন্দিত। ১৯৫৮ সালে একটি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের রূপে প্রতিষ্ঠার পর থেকে ছয় দশকেরও বেশি অভিজ্ঞতা অর্জনের মাধ্যমে কোম্পানিটি ভোক্তাদের আচরণ ও বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে গভীর জ্ঞান লাভ করেছে। নতুন প্রজন্মের আধুনিক ব্র্যান্ড ‘প্রভুজি’-র প্রতি তাদের দৃঢ় মনোযোগ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। খাদ্য, এফএমসিজি এবং ভোক্তা সামগ্রী খাতে আমরা অত্যন্ত আশাবাদী, এবং আগামী বছরগুলিতে হলদিরাম গুরুত্বপূর্ণ প্রবৃদ্ধি অর্জন করবে বলে আমাদের বিশ্বাস।’
সঙ্গে এও জানানো হয়েছে, মিড্–মার্কেট খাতে বিশিষ্ট ফান্ড হাউসগুলির মধ্যে অন্যতম, বিভিএফ মূলত লাভজনক এবং প্রবৃদ্ধি–পর্যায়ের কোম্পানিগুলিতে বিনিয়োগের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদী সাফল্যকে উৎসাহিত করতে কাজ করে। হালদিরামে বিনিয়োগটি বিভিএফ–এর ৬ষ্ঠ বিনিয়োগ এবং গত তিন মাসে ভোক্তা পণ্য খাতে তৃতীয় বিনিয়োগ। এর আগে, গত মাসেই বিভিএফ ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য সুরক্ষা ব্র্যান্ড বামটাম (মিলেনিয়াম বেবিকেয়ার লিমিটেড) এবং কনজিউমার ডিউরেবল কোম্পানি, অনিকেত মেটালস প্রাইভেট লিমিটেডে বিনিয়োগ করেছে।