আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসক ধর্ষণ ও খুনের মামলায় সিবিআইয়ের তদন্ত বারংবার প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছেন নির্যাতিতার বাবা–মা।আর এবার সুপ্রিম কোর্টে তাঁদের অভিযোগ, ৭ মাস ধরে তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কিত রিপোর্ট সিবিআই জমাদেয়নি।
উল্লেখ্য, গতবছর ৯ অগস্ট আরজি করের সেমিনার হলে নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছিল ট্রেনি জুনিয়র ডাক্তারকে। পরিবারের অভিযোগ, তাদের মেয়েকে খুনে একজন জড়িত নয়।আরও অনেকে জড়িত রয়েছে।এই আবহে সুপ্রিম কোর্টে মামলাটির পরবর্তী শুনানি আগামী ৭ অক্টোবর।
এদিকে সম্প্রতি এ অভিযোগও করা হয়, আরজি কর মামলায় তদন্তকারী অফিসার বিনীত গোয়েলের ব্যাচমেট। এই নিয়ে নির্যাতিতার আইনজীবীকে এ প্রশ্নও তুলতে দেখা গিয়েছিল, ‘বিনীত গোয়েল সিবিআই–এর তদন্তকারী অফিসারের ব্যাচমেট বলেই কি তাঁর বিরুদ্ধে কোনও তদন্ত হচ্ছে না?’ এরপরই সিবিআইয়ের তরফ থেকে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়, কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলের বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। ফলে কার্যত ক্লিনচিট দেওয়া হয়েছে বিনীত গোয়েলকে।
অন্যদিকে আরজি কর খুনের মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়া সঞ্জয় রায় আবার সম্প্রতি নিম্ন আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে আবেদন করেছেন। সঞ্জয় রায়ের দাবি, তাকে বেকসুর খালাস দিতে হবে এই মামলায়। উল্লেখ্য, এর আগে আরজি কর কাণ্ডে শুধুমাত্র সঞ্জয় রায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছে আদালতে। ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় শুধুমাত্র সঞ্জয়কে দোষী হিসেবে চিহ্নিত করেই চার্জশিট পেশ করেছিল সিবিআই। এরই প্রেক্ষিতে সিবিআই তদন্তে ‘অসন্তোষ‘ প্রকাশ করেছিলেন নির্যাতিতার মা–বাবা। উল্লেখ্য, গত ২০ জানুয়ারি শিয়ালদা আদালতে আরজি কর মামলায় চিকিৎসক ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা সঞ্জয় রায়কে আমৃত্যু কারাদণ্ডের সাজা শোনান বিচারক অনির্বাণ দাস। এদিকে আমৃত্যু কারাদণ্ডের পাশাপাশি ৫০ হাজার টাকা জরিমনা দিতে হবে সঞ্জয় রায়কে। এর আগে গত ১৮ জানুয়ারি আদালতের তরফ থেকে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৬৩ (ধর্ষণ), ৬৪ (ধর্ষণের সময় এমন ভাবে আঘাত করা, যাতে মৃত্যু হয়), ১০৩ (১) নং (খুন) ধারায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল। এই আবহে সঞ্জয়কে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৬৪ ধারার আওতায় সশ্রম যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, ৬৬ ধারায় আওতায় আমৃত্যু কারাদণ্ড এবং ১০৩ (১) ধারার আওতায় সশ্রম যাবজ্জীবনের সাজা ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানার নির্দেশ দেন বিচারক। এদিকে বিচারক নির্দেশ দিয়েছিলেন, নির্যাতিতার পরিবারকে ১৭ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে রাষ্ট্রকে। বিচারক বলেছিলেন, এই মামলা বিরলের থেকে বিরলতম নয়। যদিও সঞ্জয়ের ফাঁসির দাবিতে আদালতে জোর সওয়াল করতে দেখা গিয়েছিল সিবিআইকে।