কুড়ি মাইক্রনের নিচে প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ দিলে বিক্রেতাকে ৫০০ টাকা আর ব্যবহারকারীকে ৫০ টাকা জরিমানা করতে চায় কলকাতা পুরসভা। আসন্ন পুজোর মরশুম পার হলেই এমনই কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে বলেই জানা গেছে কলকাতা পুরসভা সূত্রেই। তবে এরপর স্বাভাবিক ভাবে যে প্রশ্নটা সবার মাথায় আসে তা হল, হঠাৎ পুজোর পরে কেন? কেন-ই বা এই মুহূর্তেই নেওয়া হচ্ছে না এই কড়া ব্যবস্থা?
এর ব্যাখ্যা দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট বিভাগের মেয়র পারিষদ স্বপন সমাদ্দার। তিনি জানান, ‘পুজোর মরশুমে আমরা সচেতনতামূলক প্রচার চালাতে চাইছি। প্লাস্টিক ব্যবহারে জরিমানার আইনি সংস্থান থাকলেও তা এখনও চালু করা হয়নি। জনতার সচেতনতার উপর ভরসা রাখতে চাই আমরা। সচেতনতা তৈরি না হলে পুজোর পরে কুড়ি মাইক্রনের নীচে প্লাস্টিক ব্যাগ বন্ধে জরিমানার সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে বাধ্য হব।’
এদিকে পরিবেশ বিভাগ সূত্রের খবর, লাগাতার সচেতনতামূলক প্রচার চালিয়ে কুড়ি মাইক্রনের নিচে প্লাস্টিক ব্যাগ বন্ধে অনেকটাই সফল হয়েছিল পুরসভা। এরপর কোভিড অতিমারি ও লকডাউন পর্বে তা ছন্দ হারায়। বিভিন্ন সংস্থা, রাজনৈতিক দল থেকে পাড়ার ক্লাব, অনেকেই তখন সাহায্য পৌঁছে দিতে এই ব্যাগ ব্যবহার করেছিল।অতিমারির পরে আর সে ভাবে আর প্লাস্টিক ব্যাগ নিয়ে সচেতনতা প্রচার হয়নি। তারই জেরে কলকাতায় ফের ফিরেছে পাতলা প্লাস্টিক ব্যাগের ব্যবহার।
পরিবেশ আন্দোলনের সঙ্গে যাঁরা য়ুক্ত রয়েছে তাঁদের বক্তব্য, ‘জরিমানাতেও শহরে কুড়ি মাইক্রনের নীচে প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ বন্ধ করা যাবে না। তাই এই ব্যাগকে উৎসেই বিনাশ করতে হবে। এই কারখানাগুলি বন্ধ করতে হবে প্রশাসনকেই।’
এদিকে পরিবেশবাদী সংগঠন ‘সবুজ মঞ্চ’-এর তরফ থেকে এও জানানো হয়েছে, কুড়ি মাইক্রনের নীচে প্লাস্টিক ব্যাগ তৈরি করে, এমন প্রায় ৭০টি ইউনিট চিহ্নিত করেছিলেন তাঁরা। প্রশাসনের কাছে সেই তালিকা জমাও দেওয়া হয়। কিন্তু প্রশাসনের কাছ থেকে তেমন কোনও সাড়া মেলেনি। সবুজ মঞ্চের সদস্যদের বক্তব্য, ‘প্লাস্টিক দূষণ রোধ আইনে পরিষ্কার বলা আছে, উৎপাদক, ক্রেতা এবং বিক্রেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। আর পুরসভা বলছে ক্রেতা এবং বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা। ব্যবস্থা যদি নিতেই হয় তা হলে তিন পক্ষের বিরুদ্ধেই নিতে হবে। তবে সুফল মিলবে।’