বুধবার রাতের হামলার কারণ খুঁজতে ফোন ডিটেলস খতিয়ে দেখা হচ্ছে ধৃতদের

বুধবার রাতে কারা হামলা চালিয়েছিল আরজি করে বা কী ছিল তাদের উদ্দেশ্য তা নিয়ে রাজনৈতিক কচকচানি শুরু হয়েছে ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পর থেকেই। লালবাজারও সবদিক খতিয়ে দেখছে। হামলার ঘটনায় বেশ কয়েকজন ধরা পড়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে একাধিক তথ্য পাওয়া গিয়েছে বলে লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে।

আরজি করে ‘তিলোত্তমা’-র নৃশংস পরিণতির প্রতিবাদে বুধবার রাত দখলের কর্মসূচির ডাক দিয়েছিলেন মহিলারা। সেই কর্মসূচি ছিল অরাজনৈতিক। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে কর্মসূচিতে সামিল হন মহিলারা। বুধবার রাতেই আরজি করে তাণ্ডব চালানো হয়। ভাঙচুর করা হয় হাসপাতালে। এই নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোর তৈরি হয়েছে। হামলার নিন্দা করেছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। শুক্রবার কলকাতার পুলিশ কমিশনার গোয়েন্দা ব্যর্থতা মেনে নেন। তিনি জানিয়েছেন, ‘আরজি করে সেদিন রাতে এত লোক ঢুকে পড়বে, আমরা আন্দাজ করতে পারিনি।’ তবে হামলার পরই তাণ্ডবকারীদের ধরতে পদক্ষেপ করে লালবাজার। বেশ কয়েকজন ধরা পড়েছে। জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত ভাঙচুরের ঘটনায় যাদের ধরা হয়েছে, সিসিটিভি ফুটেজে ছবি দেখেই ধরা হয়েছে। দমদম, হাওড়া থেকে ওইদিন রাতে আরজি করে এসেছিল তারা।

লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতরা জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, তারা এমনই আরজি করে গিয়েছিল। সবাই ভাঙচুর করছিল, তাই তারাও ভাঙচুর করে। তাদের এই যুক্তি বিশ্বাসযোগ্য নয় বলেই মনে করছে লালবাজার। পুলিশ সূত্রে খবর, লালবাজার মনে করছে, ভাঙচুর দেখে বোঝা যাচ্ছে, এটা পরিকল্পিত হামলা। এমনভাবে এই ঘটনা ঘটেছে, তাতে বোঝা যাচ্ছে চারদিকের রাস্তা অবরোধ হয়েছিল। যাতে কোনওভাবেই পৌঁছাতে না পারে পুলিশ। এরকম ঘটনা জঙ্গলমহলে দেখা যায়।

লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে, যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তাদের বেশিরভাগই বিভিন্ন দোকানে কাজ করে। পাড়ার লোক যাচ্ছে, তাই এসেছিল বলে জানিয়েছে তারা। আবার একটা সংগঠন ওখানে জমায়েতের কথা জানিয়েছিল। সেক্ষেত্রে এই সংগঠনের বিভিন্ন লোক বিভিন্ন জায়গা থেকে এসেছিল। পুলিশ মনে করছে, সেখানে জড়ো হওয়া ৭০০০ লোকের মধ্যে অনেকেই বিচার চাইতে এসেছিল। লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্যারিকেড ভাঙার সময় একটি রাজনৈতিক দলের লোকজন ছিল। কিন্তু তারা কেউ ভিতরে ভাঙচুরের দিকে যেতে পারেনি।

যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে,তাদের মোবাইল কল ডিটেইলস চেক করা হচ্ছে। যাদের ধরা হয়েছে, তাদের সঙ্গে কার যোগাযোগ আছে, সেটা জানার চেষ্টা করছে লালবাজার। কী পরিকল্পনা ছিল, সেটা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। শহরের বিভিন্ন জায়গায় যে জমায়েতের ডাক দেওয়া হয়েছিল, সেই দিকেও নজর রাখতে চাইছে লালবাজার।

এদিকে, ‘তিলোত্তমা’-র মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে ৬০ জনকে নোটিস পাঠানো হয়েছে বলে লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে। যারা ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপে ভুল তথ্য ছড়াচ্ছে তাদের নোটিস পাঠানো হয়েছে। দুইজন চিকিৎসককে তলব করা হতে পারে লালবাজারে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট নিয়ে ভুল তথ্য দেওয়ার জন্য তাদের ডাকা হতে পারে বলে লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

three × two =