পিয়ালিকে গ্রেফতার করা হয়েছে বেআইনি ভাবে, রাজ্য়কে ভর্ৎসনা বিচারপতি সেনগুপ্তের

সন্দেশখালির পিয়ালি দাস ওরফে মাম্পিকে বেআইনি ভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে। সাফ জানিয়ে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। একইসঙ্গে তাঁকে দ্রুত ছাড়ার নির্দেশ দিল উচ্চআদালত। মাম্পির গ্রেফতারি নিয়ে রাজ্য সরকার ও পুলিশকে ভর্ৎসনা করেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। তিনি আরও বলেছেন, মাম্পির বিরুদ্ধে ১৯৫ এ ধারায় দায়ের হওয়া অভিযোগ স্থগিত থাকবে। এই মামলার পরবর্তী শুনানি ১৯ জুন। মাম্পির গ্রেফতারি নিয়েও শুক্রবার প্রশ্ন তোলে হাইকোর্ট।

এদিন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত বিরক্তি প্রকাশ করে প্রশ্ন করেন, জামিন যোগ্য ধারার মধ্যে কী করে জামিন অযোগ্য ধারা দেওয়া হয় তা নিয়েও। সঙ্গে এও কটাক্ষের সুরে বলেন, পুলিশ ছেড়ে দিন, ম্যাজিস্ট্রেট কী করছিলেন? প্রশ্ন তোলেন, কেন কেস ডায়েরি দেওয়া হয়নি তা নিয়েও। এরপরই বিচারপতি সেনগুপ্ত ভর্ৎসনার সুরে জানান, রাজ্য এই কোর্টকে অবজ্ঞা করতে পারে কিন্তু সুপ্রিম কোর্টকে তো না। অথচ সুপ্রিম কোর্টের একাধিক অর্ডার আছে। ম্যাজিস্ট্রেট এমন মেকানিক্যাল ভাবে সেকশন অ্যাড আবেদনে সাড়া দিতে পারে না। এরই রেশ ধরে প্রশ্ন তোলেন, এখনও মহিলা জেলে! এই সবের পিছনে কে? কার মাথা দিয়ে বেরোল এই সব?’

এরপর বিচারপতি সেনগুপ্ত ক্ষুব্ধ হয়ে জানান, ‘আমি উদ্বিগ্ন ম্যাজিস্ট্রেটের আচরণ নিয়ে। ন্যূনতম কোর্ট অর্ডারগুলো এরা জানে না! কলকাতা হাইকোর্টের এমন ক্ষেত্রে ১০টা অর্ডার দেওয়া আছে। সুপ্রিম কোর্টের এই সংক্রান্ত অর্ডার সব থানার পুলিশ, এমনকী নিম্ন আদালতেও পাঠাতে হবে।’

প্রসঙ্গত, পিয়ালি দাসের বিরুদ্ধে ৪৪৮, ৩৪১, ৩২৩, ৩২৫ সহ বেশকিছু ধারায় মামলা দায়ের করে পুলিশ। প্রথমে তাঁকে সাক্ষী হিসেবে থানায় ডাকা হয়। তারপর ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে ১৯৫এ ধারায় পিয়ালির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে পুলিশ। এদিকে পিয়ালি ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আত্মসমর্পণের আবেদন জানান। কিন্তু তারপরেও তাঁকে গ্রেফতারির নির্দেশ দেয় বসিরহাট আদালত। এরপরই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন পিয়ালি দাস।

এই প্রসঙ্গে আদালতে মাম্পি দাসের আইনজীবী রাজদীপ মজুমদার জানান, মামলাটি সম্পূর্ণ জামিনযোগ্য। কিন্তু আগাম জামিনের আবেদন নাকচ করে উল্টে ১২ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে শীর্ষ আদালতের নির্দেশকেও অমান্য করা হয়েছে। জেলা পুলিশ সুপার, ওসি, তদন্তকারী অফিসার এমনকি নিম্ন আদালতের বিচারক সকলকেই হাইকোর্টে ডাকা উচিত বলে দাবি করেন মাম্পির আইনজীবী।

সম্প্রতি সন্দেশখালি সংক্রান্ত একাধিক ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে। যদিও কোনও ভিডিয়োরই সত্যতা যাচাই করেনি নিউজ ৩৬৫x২৪। ভাইরাল ভিডিয়োগুলির মধ্যে একটিতে বিস্ফোরক দাবি করেন এক মহিলা। তিনি দাবি করেন, সাদা কাগজে সই করিয়ে পরে সেখানে ধর্ষণের অভিযোগ লেখানো হয়েছিল এবং তা করিয়েছিলেন এই পিয়ালি দাস। সন্দেশখালির আন্দোলনের অন্যতম মুখ পিয়ালি দাসকে সেই ঘটনাতেই তলব করা হয়। কিন্তু হাজিরা না দিয়ে বসিরহাটের মহকুমা আদালতে আত্মসমর্পণ করেন মাম্পি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

four × 4 =