প্লাস্টিক আতঙ্ক হিমাচল প্রদেশের কাসোলে। কারণ, পাহাড়ি এলাকায় বাড়ছে প্লাস্টিক আবর্জনার স্তূপ। প্লাস্টিকের ব্যাগ, জলের বোতল, চিপসের প্যাকেট আরও অনেক কঠিন বর্জ্যে চাপ বাড়ছে পাহাড়ের ওপর। পশুরাও সেই আবর্জনার মধ্যেই খাবারের খোঁজ করছে। এই পরিস্থিতির হাত থেকে বাঁচতে নেওয়া হল অভিনব উদ্যোগ। ‘ডিপোজিট রিফান্ড’ বা ‘রিটার্ন ইওর ট্র্যাশ’ স্কিম। এই প্রসঙ্গে হিমাচল প্রদেশের মন্ত্রী হর্ষবর্ধন চৌহান জানিয়েছেন, ‘এই প্রকল্পের লক্ষ্য শুধু আবর্জনা কমানো নয়। পর্যটক ও বিক্রেতাদের মধ্যে পরিবেশ সচেতনতা জাগানো।’ আশা করা যায় এতে পাহাড়ি এলাকায় প্লাস্টিক ব্য়বহারে পর্যটকরাও সতর্ক হবেন।
এই প্রসঙ্গে বলে রাখা শ্রেয়, প্লাস্টিক ও অন্যান্য নন-বায়োডিগ্রেডেবল বর্জ্য নিয়ন্ত্রণে চালু হচ্ছে ‘ডিপোজিট রিফান্ড স্কিম ২০২৫’, যার আওতায় এখন থেকে নির্দিষ্ট কিছু পণ্যের সঙ্গে বাড়তি টাকা জমা রাখতে হবে- যদি সেই খালি প্যাকেট আবার ফেরত দেওয়া হয় তাহলে জমা রাখা টাকাও ফেরত পাবেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি। প্রকল্পটি প্রাথমিকভাবে জনপ্রিয় পর্যটন এলাকাগুলিতে ‘পাইলট’ প্রকল্প হিসেবে শুরু হবে। প্লাস্টিকের বিভিন্ন পণ্য, অ্যালুমিনিয়াম ক্যান, ফ্লেক্সিবল প্লাস্টিক ও মাল্টি-লেয়ারড প্যাকেজিংয়ের ক্ষেত্রে এই নিয়ম কার্যকর হবে।
পর্যবেক্ষণের জন্য ব্যবহার করা হবে কিউ আর কোড স্ক্যানিং। বিক্রেতা সেই কোড অনুযায়ী ক্রেতার কাছ থেকে ‘ডিপোজিট ফি’ বাবদ টাকা নেবেন, যা প্যাকেট ফেরত দিলেই আবার ক্রেতাদের ফিরিয়ে দেওয়া হবে। পরিবেশ রক্ষায় ইতিমধ্যেই ৫০০ মিলির ‘পিইটি’ দিয়ে তৈরি প্লাস্টিক বোতল নিষিদ্ধ করছে হিমাচলের প্রশাসন। আগামী ১ জুন থেকে এই নিয়ম কার্যকর হবে। এর আগে ১৯৯৫ সালে হিমাচলের সরকার ‘নন-বায়োডিগ্রেডেবল বর্জ্য (নিয়ন্ত্রণ) আইন’ চালু করেছিল। ২০০৯ সালে ভারতের প্রথম রাজ্য হিসেবে প্লাস্টিক ও পলিথিন ক্যারি ব্যাগ নিষিদ্ধ করে হিমাচল। পরবর্তীতে ২০১৮ সালে থার্মোকলের কাপ, প্লেট, গ্লাস, চামচ ব্যবহার নিষিদ্ধ করে রাজ্য সরকার।
এদিকে সরকারি তথ্য অনুযায়ী, সিমলায় প্রতি মাসে প্রায় ২ হাজার ৮০০ টন এবং মানালিতে প্রায় ১ হাজার ১০০ টন কঠিন বর্জ্য জমা হয়। পর্যটনের মরশুমে এর পরিমাণ দ্বিগুণ হয়ে যায়। অনেক পাহাড়ি শহরে এখনও পর্যন্ত বর্জ্য নিষ্পত্তির ব্যবস্থা নেই, ফলে রাস্তাঘাটের পাশে জমে থাকে আবর্জনার স্তূপ, নদী-নালায় জল জমে পরিবেশ দূষিত হয়। ঘুরতে গিয়ে প্রকৃতির ক্ষতি না করেই তার সৌন্দর্য উপভোগ করুন। হিমাচলের এই উদ্যোগ দেশের অন্যান্য পাহাড়ি পর্যটন কেন্দ্রগুলির কাছে একটি দৃষ্টান্ত হয়ে উঠতে পারে।