ভোটকেন্দ্র পরিদর্শনে বেরিয়ে নজিরবিহীন ঘটনার সামনে পড়তে হল বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে। ‘আমাকে বাঁচান’, বিজেপি সাংসদকে সামনে পেয়ে আর্তি রাজ্য পুলিশের সশস্ত্র উর্দিধারীর। অথচ এঁদের হাতেই তুলে দেওয়া হয়েছিল ভোটারদের সুরক্ষা। এঁদের ওপরেই ভরসা করতে চেয়েছিলেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহা! পঞ্চায়েত ভোটে এমনই দৃশ্যের সাক্ষী হল গোটা রাজ্য।
ঘটনাস্থল দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার গঙ্গারামপুরের জয়দেবপুর নিম্ন বুনিয়াদী বিদ্যালয় বুথ নম্বর ১৭৬। ব্যাপক ছাপ্পা ভোট দেওয়ার অভিযোগ ওঠে সকাল থেকেই। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। এদিকে ঘটনাস্থল পৌঁছতেই সুকান্ত মজুমদারের কাছে হাতজোড় করে প্রাণরক্ষার আর্তি জানান। শিলিগুড়ি কমিশনারেটের পুলিশ কর্মী কৃষ্ণ মোহন ঝা জানান, ভিতরে ব্যাপক ছাপ্পা পড়ছে। তিনি আটকে গেলে তাঁকেও মারধর করা হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে প্রাণের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। হাতে আগ্নেয়াস্ত্র থাকলেও উপায় নেই তা ব্যবহারের। কারণ তার জন্য উপরওয়ালার নির্দেশ প্রয়োজন। প্রায় কাঁদো কাঁদো স্বরে সংবাদ মাধ্যমের সামনে কৃষ্ণ মোহন ঝাঁ জানান,’আমি তো বাইরের এখানকার লোকাল ছেলেদের চিনি না। তবে আমাকে জেলা পরিষদের মৃণালের নাম করে হুমকি দেওয়া হয় আপনি বাইরে যান। এখানে ছাপ্পা চলবে। আমি ছাপ্পা করতে দেব না বলায় এখানেই মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে। আমার গায়ে হাতও দিয়েছে।’
সুকান্ত মজুমদার প্রহৃত পুলিশকর্মীকে জিজ্ঞেস করেন তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন কিনা। তাতে ওই পুলিশ কর্মী কৃষ্ণ মোহন ঝা বলেন, তিনি জানানো সত্ত্বেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তাই তিনি বাধ্য হয়ে বিজেপি রাজ্য সভাপতির কাছে সাহায্যের আর্জি জানান। সংবাদমাধ্যমের সামনে তিনি বারবার বলেন, যা হচ্ছে হোক, তিনি মুক্তি চান। এখান থেকে সরতে চাওয়ার ইচ্ছে বারবার প্রকাশ করেন তিনি।
অভিযোগ, পুলিশ কর্মীর থেকে অভিযোগ শোনার পর ব্যালট বাক্সে জল ঢালবার অভিযোগ বিজেপির বিরুদ্ধে। ভোট বন্ধ হয়ে গেল গঙ্গারামপুর ব্লকের সুকদেবপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের জয়দেবপুর নিম্ন বুনিয়াদি বিদ্যালয় ১৭৫, ১৭৫ এ নম্বর বুথে। এ নিয়ে তীব্র উত্তেজনা সৃষ্টি হয় ভোটকেন্দ্রে। অভিযোগ, পুলিশ কর্মীর সঙ্গে কথা বলার পরই বিজেপির চরম পদক্ষেপ। পরবর্তীতে তৃণমূলের কর্মী সমর্থকরা ভোটগ্রহণ বন্ধ করে দেন। সেই সঙ্গে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় তৃণমূল জেলা সভাপতি। পরবর্তীতে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় গঙ্গারামপুর থানার আইসি সহ বিশাল বাহিনী। স্বাভাবিক ভাবেই এই ঘটনায় ছড়ায় ব্যাপক চাঞ্চল্যও।