গত ২৪ ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে মণিপুরে ১২টি বাঙ্কার ধ্বংস করল পুলিশ। একদিকে শান্তি এবং স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হলেও অন্যদিক থেকে বিচ্ছিন্নতাবাদীরা অশান্তিতে ইন্ধন দিচ্ছে এমনটাই দাবি পুলিশ এবং মণিপুরের প্রশাসনের। মণিপুর পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, বিভিন্ন এলাকায় অত্যাধুনিক অস্ত্র নিয়ে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে উগ্রপন্থী এবং বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। এর আগে দিনেই অভিযান চালিয়ে প্রচুর অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করে সেনা।
মণিপুরের পুলিশ সূত্রে খবর, কেন্দ্রীয় বাহিনীর সঙ্গে যৌথ অভিযান চালিয়ে ওই বাঙ্কারগুলি ধ্বংস করা হয়। গত ২৪ ঘণ্টায় মণিপুরের তামেঙ্গলং ইম্ফল পূর্ব, বিষ্ণুপুর, কাংপোকপি, চুড়াচাঁদপুর, কাকচিং জেলার এলাকায় অভিযান চালায় পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী। এরপরই পাহাড় এবং উপত্যকা এলাকায় ওই অভিযানেই এই বাঙ্কারগুলি নষ্ট করা হয়।
এরপরই মণিপুর পুলিশের তরফ থেকে একটি বিবৃতি দিয়ে এও জানানো হয়, ওই তল্লাশি অভিযানে ৬টি মর্টার সেল উদ্ধার করা হয়। এগুলির মধ্যে তিনটি ৫১ এমএম মর্টার সেল এবং বাকিগুলি ৮৪এমএম মর্টার সেল। সেগুলি সাহুমফাই এলাকার একটি ধান জমিতে রাখা ছিল। অন্যদিকে, বিষ্ণুপুর জেলার কাংভি এবং এস কলিতান গ্রামে কাছে একটি জায়গা থেকে উদ্ধার করা হয় একটি আইইডি বিস্ফোরক। এরপর ওই মর্টার সেল এবং বিস্ফোরক নিষ্ক্রিয় করা হয়।
এর পাশাপাশি মণিপুর পুলিশের তরফ থেকে এও জানানো হয়,কিছু এলাকায় উত্তেজনা থাকলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। সেই সঙ্গে কিছু এলাকায় বিক্ষিপ্ত অশান্তির ঘটনাও ঘটেছে।
প্রসঙ্গত, গত মাসের ৩ তারিখ থেকে অগ্নিগর্ভ হয় মণিপুর। সেখানে কুকি এবং মেইটি সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে সংঘর্ষের জেরে এখনও পর্যন্ত শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়। পাশাপাশি সাড়ে ছ হাজারের বাড়ি ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এদিকে সেখানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কারফিউ জারি করা হয়। সেই সঙ্গে ইন্টারনেটও বন্ধ করে দেওয়া হয়। তবে মণিপুরের বিভিন্ন এলাকায় কারফিউ শিথিল করা হলেও এখনও ইন্টারনেট বন্ধই আছে। মণিপুরের পুলিশ জানিয়েছে, কারফিউ না মানা, পরিত্যক্ত বাড়িতে চুরি করা এবং সেখানের অশান্তি করার অভিযোগে এখন পর্যন্ত ১৩৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই সময়ে প্রায় ১১০০টি আগ্নেয়াস্ত্র, ১৩৭০২ টি গুলি এবং প্রায় ২৫০ বোমা উদ্ধার করাও হয়েছে। এরই সঙ্গে মানুষের মনে আস্থা ফেরাতে বিভিন্ন এলাকায় ফ্ল্যাগ মার্চ এবং ‘এরিয়া ডমিনেশন’ করা হচ্ছে। এরই সঙ্গে সেখানে শান্তি ফেরাতে সাধারণ মানুষের সাহায্যও চেয়েছে পুলিশ। তারা জানিয়েছে, কোথাও কোন অশান্তি বা গুজবের খবর পেলেই বাসিন্দারা যেন ৯২৩৩৫২২৮২২ নম্বরে বা পুলিশের কেন্দ্রীয় কন্ট্রোল রুমে ফোন করেন।