ট্য়াংরা হত্যাকাণ্ডে চার্জশিট জমা পুলিশের

বুধবারই কলকাতা পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়েছিল ট্যাংরা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় চার্জশিট জমা দিতে চলেছেন তাঁরা। এর ঠিক একদিন পরই বৃহস্পতিবার শিয়ালদহ আদালতে পুলিশ এই চার্জশিট জমা দেয়। তাতে খুন,খুনের চেষ্টার ধারা যুক্ত করা হয়েছে। অর্থাৎ দোষ প্রমাণ হলে মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হবে দুই ভাই বা কোনও এক ভাইয়ের। ছোট ভাই প্রসূন আগেই অবশ্য খুনের কথা স্বীকার করেছিলেন। তবে এও জানা গেছিল, তাঁকে যোগ্য সঙ্গত দিয়েছিলেন দাদাও। এক্ষেত্রে অনুমান,সাজা হলে ছোট ভাইয়ের তুলনায় বড় ভাইয়ের কম হবে। কিন্তু দুজনেই যে ঘটনার সঙ্গে যুক্ত তা স্পষ্ট।
একই পরিবারের তিন সদস্যের খুনের ঘটনা নাড়িয়ে দিয়েছিল বঙ্গ সমাজকে। সেই ঘটনাতেই ৯৯ ডিনের মাথায় অবশেষে চার্জশিট দিল পুলিশ। আদালত সূত্রে খবর, প্রধান অভিযুক্ত হিসেবে রাখা হয়েছে দে পরিবারের দুই ভাই প্রণয় এবং প্রসূনকেই। এই প্রসঙ্গে বলে রাখা শ্রেয়, ইতিমধ্যে গ্রেফতার হয়েছেন প্রণয় এবং প্রসূন দে।
গত ফেব্রুয়ারি মাসে ট্যাংরায় দে পরিবারের দুই স্ত্রীর হাতের শিরা ও গলা কেটে এবং কিশোরী মেয়েকে শ্বাসরোধ করে খুন করে নাবালক ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে গাড়ির দুর্ঘটনা ঘটিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন বড় ভাই প্রণয় ও ছোট ভাই প্রসূন। ঘটনার বেশ কয়েকদিন পর্যন্ত এরা সকলেই হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। তবে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর প্রথমে গ্রেফতার করা হয় প্রসূনকে। এরপর এই মে মাসেই হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেতেই গ্রেফতার হন বড় ভাই প্রণয়কেও।
ট্যাংরা কাণ্ডের তদন্তে উঠে আসে, বিপুল টাকা দেনা হয়েছিল দে পরিবারের। ব্যবসাও খুব ক্ষতি হয়েছিল। বাজারে অন্তত ১৫ কোটি টাকা ধার ছিল তাঁদের। তা শোধ দেওয়ার কোনও পথ খুঁজে পাচ্ছিলেন না তাঁরা। সেই কারণেই গোটা পরিবার আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেয়। যদিও পরবর্তী সময়ে জানা যায়, বাড়ির মহিলা সদস্যদের খুন করা হয়েছে। তবে কিশোরীটির  মৃত্যুর কারণ ছিল খাদ্যে বিষক্রিয়া। তবে দুই গৃহবধূ রোমি এবং সুদেষ্ণার মৃত্যু হয়েছিল হাতের শিরা কাটার ফলে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে। এই ঘটনার পর রোমির বাবা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তার ভিত্তিতেই পুলিশ তদন্ত শুরু করে। আপাতত মূল অভিযুক্ত দুই ভাই জেল হেফাজতে রয়েছেন। আর পরিবারের বাকি সদস্য ওই কিশোরের স্থান হয়েছে হোমে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

10 + nine =