দীপাবলির পরের দিন কলকাতার অনেক জায়গাতেই বাতাসে বেড়েছিল দূষণের মাত্রা। তবে রবিবার থেকে বদলাচ্ছে ছবিটা। কলকাতায় যেখানে বাতাসের মান রবিবারও খারাপ ছিল, সেই এলাকাগুলিতে শনিবার রাতেও দেদার বাজি ফেটেছে বলে দাবি পরিবেশকর্মীদের। তবে রবিবার থেকে মহানগরের অধিকাংশ এলাকায় উন্নত হতে শুরু করে পরিস্থিতি। অন্যদিকে রাজধানী দিল্লির সর্বত্রই এ দিন বাতাসের মান ছিল খুব খারাপ।
কলকাতায় বাতাসের অবস্থার উন্নতির পিছনে বাজির দাপট কমে যাওয়াই অন্যতম কারণ বলে দাবি করছেন পরিবেশবিজ্ঞানীরা।কিন্তু দিল্লির এই অবস্থার জন্য মাত্রাতিরিক্ত যানবাহন, লাগোয়া হরিয়ানাতে নাড়া পোড়ানো এবং তাপমাত্রা কমে যাওয়ার হাত রয়েছে বলে দাবি বিশেষজ্ঞদের। কলকাতা এই সব সমস্যা থেকে অনেকটাই মুক্ত।
রবিবার সকাল থেকে কলকাতা সম্পর্কে কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের তথ্য বলছে, শনিবার বালিগঞ্জ থেকে শুরু করে বিধাননগর, যাদবপুর, ফোর্ট উইলিয়াম, রবীন্দ্র সরোবর, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল চত্বরে বাতাসের দূষণ সূচক (এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স বা একিউআই) ছিল ২০০ থেকে ৩৩০–এর মধ্যে। বালিগঞ্জ ছাড়া বাকি সব জায়গাতেই এ দিন একিউআই ঘোরাফেরা করেছে ১৫০ থেকে ১৮০–র মধ্যে। এই প্রসঙ্গে বলে রাখা শ্রেয়, দূষণ সূচক ১৫০ পেরোলেই তা ক্ষতিকর বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। পরিবেশবিজ্ঞানী তড়িৎ রায়চৌধুরীর বক্তব্য, ‘তাপমাত্রা কমলেই উত্তুরে হাওয়ার গতিবেগ বাড়ে। তেমনই শীতের সময়ে পশ্চিমি ঝঞ্ঝাও বারবার দিক পরিবর্তন করে। ফলে, বাতাসে আর্দ্রতা অনেক কমে যায়। সে কারণে ধূলিকণার মাত্রা স্বাভাবিকের তুলনার বাড়ে। দূষণের মাত্রাও বেড়ে যায় অনেকটাই।’
এই ইস্যুতে আগামী ক’মাস দূষণ নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের দাবি তুলছেন পরিবেশকর্মীরা।বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, শহরে শীতের সময়ে যত্রতত্র জিনিস পোড়ানোর কারণেই সবচেয়ে বেশি দূষণ ছড়ায়। ফুটপাথে কাঠকয়লা পুড়িয়ে রান্নাও এই বিষের জন্য দায়ী।এ প্রসঙ্গে কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (পরিবেশ) স্বপন সমাদ্দার বলেন, ‘রাস্তা ধোওয়ার জন্য যেমন স্প্রিঙ্কলার ব্যবহার হবে, তেমনই যত্রতত্র জঞ্জাল পোড়ানো ঠেকাতে নজরদারির জন্য বিশেষ টিম করা হয়েছে।’ হকারদের অনেককে দূষণ ঠেকানোর জন্য পরিবেশবান্ধব সামগ্রী দেওয়া হয়েছে বলেও দাবি পুরকর্তাদের।