নদীর তলা দিয়ে যান চলাচলের উদ্যোগ নিচ্ছে পোর্ট ট্রাস্ট

শহরবাসীর জন্য আরও সুখবর। আগামীদিনে নদীর তলা দিয়ে যান চলাচলের ব্যবস্থা গড়ে তোলারও উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে এই শহরে। নেপথ্যে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় বন্দর কর্তৃপক্ষ। সূত্রে খবর, পোর্ট ট্রাস্টের উদ্যোগে গঙ্গার তলদেশে তৈরি হবে নতুন টানেল। সেখান দিয়েই চলাচল করবে যানবাহন। মূলত পণ্যবাহী গাড়িগুলি চালানোর জন্য শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় বন্দর কর্তৃপক্ষ গঙ্গার নিচ দিয়ে সুড়ঙ্গ তৈরি করতে চাইছে। এই বিষয়ে সংস্থার এক শীর্ষ আধিকারিক জানান, ওই টানেল নির্মাণের জন্য বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্ট বা ডিপিআর তৈরির কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। সেই ডিপিআর তৈরি হয়ে গেলেই করা হবে পরবর্তী পদক্ষেপ। উল্লেখ্যে বেলজিয়ামের অ্যান্টোয়াপ বন্দরে নদীর তলা দিয়ে এই ধরনের একটি টানেল রয়েছে। সেই মডেলকে সামনে রেখেই গঙ্গার নীচেও সুড়ঙ্গ তৈরির পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

সূত্রে এও জানা যাচ্ছে, কয়েক বছর আগে গঙ্গার তলা দিয়ে সুড়ঙ্গ তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়। সেই জন্য সমীক্ষাও করানো হয় একটি বিশেষজ্ঞ সংস্থাকে দিয়ে। সমীক্ষার রিপোর্ট আসার পর বর্তমানে ডিপিআর তৈরির কাজ চলছে। এরপর প্রকল্প রূপায়ণের জন্য ডাকা হবে টেন্ডার। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, ৬ লেনের ওই টানেল তৈরি করতে খরচ হবে ২ হাজার কোটি টাকা। টানেলের মোট দৈর্ঘ্য হবে ১.৫ কিলোমিটার, তার মধ্যে ৮০০ মিটার থাকবে গঙ্গার নীচে। কলকাতা বন্দরের নেতাজি সুভাষ ডক সংলগ্ন এলাকা থেকে টানেলটি হাওড়ার শালিমার-বোটানিক্যাল গার্ডেনের কাছে উঠবে।টানেল থেকে বের হওয়ার পর পণ্যবাহী গাড়িগুলি কোনা এক্সপ্রেসওয়ের দিকে এগিয়ে যাবে। ফলে টানেলটি তৈরি হলে বন্দরে আসা ট্রাকগুলিকে আর খিদিরপুর এলাকার রাস্তা ব্যবহার করতে হবে না।

এদিকে কলকাতা বন্দরে যে সমস্ত পণ্যবাহী লরি যাতায়াত করে, সেগুলির বেশিরভাগই বিদ্যাসাগর সেতু ব্যবহার করে। কলকাতা শহরে বড় পণ্যবাহী ট্রাক চলাচলের ক্ষেত্রে বেশকিছু বিধিনিষেধ আছে। দিনের একটা নির্দিষ্ট সময়ে শহরের রাস্তা দিয়ে বড় ট্রাক চালানো যায় না। বিদ্যাসাগর সেতু দিয়ে রাতে ট্রাক ও লরিগুলিকে ছাড়া হয়। এরপর রাতে প্রচুর ট্রাক একসঙ্গে চলাচল শুরু করলে তৈরি হয় যানজট। সেক্ষেত্রে গঙ্গার তলা দিয়ে টানেল তৈরি হলে এই সমস্যা থাকবে না। বরং অনেক দ্রুত ট্রাকগুলি বন্দরে ঢুকতে এবং বের হতে পারবে। ফলে আরও গতি আসবে পণ্য পরিবহণে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

eight + 4 =