আলু অত্যন্ত প্রিয় এক সবজি। সে ফুচকাই বলুন বা কোনও সবজি, সব জায়গাতেই আলুর অবাধ ব্যবহার। সুতরাং আলুকে ‘সর্বঘটের কাঁঠালি কলা’ বললেও ভুল হবে না।আলুর গুণও কিন্তু অনন্য। এতে রয়েছে একাধিক উপকারী উপাদান। এই খাবারে আছে কার্ব, ফাইবার, ভিটামিন সি, ভিটামিন বি৬, পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়ামের মতো উপকারী ভিটামিন ও খনিজ। ফলে আলু খেয়ে একাধিক রোগ এড়ানো সম্ভব।
এদিকে আলু নিয়েই নানা ধারণা চালু রয়েছে। যেমন, অনেকেই বলে থাকেন যে, আলু খেলে নাকি ওজন বাড়ে, আর সেই ভয়েই অনেকে আলু খাওয়া ছেড়ে দেন। এখন প্রশ্ন হল, আদৌ কি আলু খেলে ওজন বাড়ে কি না তা নিয়ে। তবে এখনকার পুষ্টিবিদদের মতে, আলুকে খারাপ ভাবার কোনও কারণ নেই। বরং এই সবজি খেলে একাধিক জটিল অসুখকে দূরে রাখা যায়।। কারণ আলুতে রয়েছে ভিটামিন সি। এই ভিটামিন কিন্তু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সক্ষম। এছাড়া আলু খুবই সহজপাচ্য খাবার। অর্থাৎ এই খাবার খেলে পেটের সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা কম। আবার হার্ট সুস্থ রাখার কাজেও কিন্তু আলু সিদ্ধহস্ত। তাই এই সবজি নিয়ে অযথা ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই।
তবে আলুতে রয়েছে অনেকটা পরিমাণে ক্যালোরি ও কার্বোহাইড্রেট। এই দুই উপাদান ওজন বাড়াতে পারে। তাই আলু খেলে মেদ বৃদ্ধির আশঙ্কা থেকেই যায়।সঙ্গে বাড়তে পারে ভুঁড়ির বহরও। তবে এর একটা উল্টো দিকও রয়েছে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে আলু কিন্তু অনেকটা সময় পেট ভর্তি রাখতেও সাহায্য করে। তাই আলু খেলে সহজে খিদে পায় না। তাই সেই দিক থেকে দেখতে গেলে ওজন কমাতেও সাহায্য করতে পারে আলু। তবে এই উপকার পেতে গেলে কতটা পরিমাণে আলু খাচ্ছেন সেই দিকে নজর রাখতে হবে। ফলে আলু বন্ধ করার মানেই হয় না। বরং আলু খেতে হবে হিসেব মেনে। এক্ষেত্রে দিনে ৫০ গ্রামের মতো আলু খেলে তেমন কোনও সমস্যাই হবে না। এমনকী ওজন বাড়ার আশঙ্কাও আর থাকবে না। তাই দিনে দুই থেকে তিন পিস ছোট আলুর টুকরো চলতেই পারে। এমনকী ওয়েট লস ডায়েটেও এই পরিমাণ আলু রাখা যায়।
এদিকে সমাজের প্রচলিত ধারণা রয়েছে, আলু সিদ্ধ করে জল ফেলে দিলে এর গুণ বৃদ্ধি পায়। এমনকী এভাবে খেলে নাকি ওজন বা সুগার বাড়ার আশঙ্কাও থাকে না! তবে এই ধারণা ভুল বলেই জানাচ্ছেন এখনকার ডায়েটিশিয়ানরা। কারণ, এই সম্পর্কে কোনও গবেষণাতেই কিছু জানা যায়নি। তাই যাঁরা এভাবে আলু খেয়ে ভাবছেন সব সমস্যার সমাধান করে ফেলবেন, তাঁরা ভুল করছেন।
এদিকে আলুতে রয়েছে স্টার্চ। তাতে সুগার বাড়াতে পারে ঠিকই। তবে কম পরিমাণে খেলে এর থেকে তেমন একটা সমস্যা নেই বললেই হয়।। তাই ডায়াবিটিস থাকলেও চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ২ থেকে ৩ পিস আলু খেতেই পারেন। তবে এক্ষেত্রে আলুর খোসা না ছাড়িয়ে খেলে বেশি উপকার মিলবে। খোসা শুদ্ধ আলু খেলে সুগার এবং ওজন দুইই বাড়ার আশঙ্কা থাকে কম।