টাকা ফেরাতে হবে না প্রাথমিক শিক্ষকদের, নির্দেশ আদালতের

হাইকোর্টের সৌজন্যে স্বস্তির নিঃশ্বাস প্রাথমিক শিক্ষকদের। এতদিন ধরে চাকরি করে উপার্জন করা মাইনে থেকে টাকা ফেরত দিতে হবে না তাঁদের। নিজেদের পরিশ্রমের উপার্জিত টাকা এভাবে হাত ছাড়া না হওয়াতে স্বভাবতই খুশি প্রাথমিক শিক্ষকদের একাংশের।

সম্প্রতি শিক্ষা দফতর তাদের জারি করা একটি অর্ডারে এমন নির্দেশ দেয় যাতে শোরগোল পড়ে যায় প্রাথমিক শিক্ষক মহলে। শিক্ষা দপ্তর তাদের জারি করা এই অর্ডারে এমন নির্দেশ দেয় যাতে মাথায় হাত পড়ে প্রাথমিক শিক্ষকদের একাংশের। সেখানে বলা হয় ২০০৬ সালে নিযুক্ত প্রাথমিক শিক্ষকদের দু বছরের  ডিগ্রি না থাকা সত্ত্বেও তাঁরা সেই ডিগ্রিধারী ‘এ’ ক্যাটাগরির সমান মাইনে পেয়েছেন। অর্থাৎ তাদের যা প্রাপ্য, তার তুলনায় বেশি মাইনে পেয়েছেন তাঁরা।

রাজ্যের জারি করা এই নির্দেশ মানতে নারাজ শিক্ষকরা। সাম্প্রতিক সময়ে এই কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশেই দুর্নীতির অভিযোগে ২০১৬ সালে এসএসসি-র ২৭,৭৫৩ জনের নিয়োগের পুরো প্যানেলই বাতিল হয়ে গিয়েছিল। অযোগ্যদের ২০১৬ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত পাওয়া মাইনের পুরোটাই সুদ সমেত ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। এই কথা মাথায় রেখেই আরও চাপে পড়ে গিয়েছিলেন এই প্রাথমিক শিক্ষকেরা। যদিও সুপ্রিম কোর্টের দরজায় এখনও ২০১৬ সালের এসএসসি-র এই মামলাতে গোটা বিষয়টির উপর দেওয়া হাইকোর্টের নির্দেশে স্থগিতাদেশ রয়েছে। কিন্তু তাতেও নিশ্চিন্তে থাকতে পারছিলেন না তাঁরা । তাই সরকারের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে প্রাথমিক শিক্ষকদের সংগঠন ‘দ্যা টিচার্স সোসাইটি’ কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়। আর সেখানেই আপাতত মেল বড়সড় সাফল্য।

কলকাতা হাইকোর্ট পরিষ্কার নির্দেশ দিয়েছে, ২০০৬ সালে নিযুক্ত কোন প্রাথমিক শিক্ষককে এই দুই বছরের ডিগ্রি না থাকার জন্য কোনও মাইনে ফেরতের নির্দেশ মানতে হবে না। কিন্তু শিক্ষক সংগঠন এখানেই থেমে থাকতে রাজি নন। তারা গোটা সমস্যার একেবারে স্থায়ী সমাধান চান। আর তাই তাঁরা ২০০৬ সালে নিয়োগের পুরো প্যানেলকেই ‘এ’ ক্যাটাগরি ঘোষণা করার দাবি জানাতে চলেছেন। তাঁদের পরিষ্কার বক্তব্য, ভবিষ্যতে যাতে কোনো রকম কোনো জটিলতা সৃষ্টি না হয় তাই এই দাবি করছেন তাঁরা। আপাতত ২০০৬ এর সমস্যা মিটলেও, ২০১৬ সালের এসএসসি-র জট এখনও অব্যাহত। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সাময়িক স্বস্তি মিললেও, বেশ কিছুজনের চাকরি যে যেতে চলেছে সেটা এক প্রকার নিশ্চিতই বলা যায়। তাই আগামী জুলাই মাসের ১৯ তারিখের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন বঙ্গের শিক্ষক মহল থেকে শুরু করে শাসকপক্ষের সবাই । সম্ভবত ওই দিনই ২৭,৭৫৩ জন শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মচারির ভাগ্য নির্ধারণ হবে প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের ৩ সদস্যের  ডিভিশন বেঞ্চে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

six − two =