১৫ মে বিকাশভবন অভিযানের ঘটনায় ইন্দ্রজিৎ মণ্ডল ও সুদীপ কোনারকে তলব করা হয় বিধাননগর উত্তর থানায়। বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের নির্দেশ মেনেই সকাল ১০টা ২৫ নাগাদ বিধাননগর উত্তর থানায় হাজিরা দিতে আসেন ইন্দ্রজিৎ। বিকাশভবন অভিযানের ঘটনার দিন তিনি সেখানে উপস্থিত থাকায় তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক ধারায় মামলা রুজু হয়, তলব করা হয় বিধাননগর ( উত্তর) থানায়। এই ঘটনায় ইন্দ্রজিতের স্পষ্ট বক্তব্য়,’আন্দোলন ভাঙার জন্য একাধিক ধারায় মামলা দেওয়া হলেও আমাদের আন্দোলন দমানো যাবে না! যত ধারায় মামলা দেওয়া হোক না কেন, চাকরিহারা যোগ্য শিক্ষকদের আন্দোলনের পাশে আগামিদিনেও থাকব।’তবে হাজিরা দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার সময় এও জানান, ‘আমি ১৫ তারিখ বিকাশভবনে ছিলাম না। তদন্তের ক্ষেত্রে আগামীতেও পুলিশকে সহযোগিতা করব।’
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার চাকরিহারাদের বিকাশভবন অভিযান ছিল। অভিযোগ ওঠে, চাকরিহারা শিক্ষক, শিক্ষাকমর্কীরা পুলিশি বাধা টপকে ব্যারিকেড ভেঙে, কার্যত বিকাশভবনের সামনের গেটে ভেঙে ভিতরে ঢোকেন। সন্ধ্যা পর্যন্ত বিকাশভবনের ভিতরেই অবস্থান বিক্ষোভ চালাচ্ছিলেন তাঁরা। ভিতরে ছিলেন বিকাশভবনের কর্মীরা। রাতে পুলিশ গিয়ে লাঠিচার্জ করে চাকরিহারাদের তুলে দেয়। একাধিক চাকরিহারা আক্রান্ত হন। অভিযোগ, লাঠির আঘাতে চাকরিহারাদের হাতও ভেঙে যায়। সেই ঘটনা নিয়ে তীব্র সমালোচনা হয় বিভিন্ন মহলে। যদিও পরে কলকাতা পুলিশের তরফ থেকে সাংবাদিক বৈঠক করে দাবি করা হয়, পুলিশ বাধ্য হয়েই লাঠিচার্জ করেছে। এরপরই বেশ কয়েকজন চাকরিহারা শিক্ষককে তলব করা হয় বিধাননগর উত্তর থানার তরফ থেকে।
এরপরই পুলিশি তলবকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন আন্দোলনকারীদের একাংশ। যদিও সেই আর্জি খারিজ করে আদালত স্পষ্ট জানায়, পুলিশ ডাকলে তাঁদের যেতে হবে। সেই প্রেক্ষিতেই থানায় হাজিরা দিয়ে আন্দোলনকারী চাকরিহারারা বলছেন, তাঁরা আইন মেনে চলতে চান, পুলিশের সঙ্গে সহযোগিতাও করবেন। কারণ আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গ করে আন্দোলন এগিয়ে নিয়ে যাওয়া তাঁদের লক্ষ্য নয়। বরং আন্দোলন করে ন্যায্য চাকরি ফিরে পাওয়াই আসল উদ্দেশ্য।
এদিকে বিকাশ ভবন অভিযানের ঘটনার দিন এই শিক্ষকরা সেখানে উপস্থিত থাকায় তাঁদের একাধিক ধারায় মামলা দেওয়া হয়েছে। সেই সূত্রেই বিধান নগর নর্থ থানায় তলবও করা হয়েছে। তলবে সাড়া দিয়েও আন্দোলনকারীদের হুঁশিয়ারি, আন্দোলন ভাঙার জন্য একাধিক ধারায় মামলা দেওয়া হলেও তাঁদের দমানো যাবে না। যতই মামলা দেওয়া হোক, চাকরিহারা যোগ্য শিক্ষকদের আন্দোলন ততদিন চলবে, যতদিন না দাবি পূরণ হয়। স্পষ্ট বার্তা তাঁদের।