বিভিন্ন নথি কোথা থেকে পেলেন বাংলাদেশি শান্তা তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন

২০২৩ সাল থেকে যাদবপুরের বিজয়গড়ে ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে থাকছিলেন বাংলাদেশের মডেল। বাংলাদেশের নাগরিক হয়েও ভারতের ভোটার কার্ড ও আধার কার্ড বানিয়ে ফেলেছিলেন বাংলাদেশি মডেল শান্তা। এরপর তদন্নে নেমে এবার আরও তথ্য সামনে আসে। জানা গেছেব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন তিনি। তবে এসব এত নথি তিনি পেলেন কোথা থেকে, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ওই নথি তৈরির চক্রের হদিশ পেতে চাইছে লালবাজার।এদিকে কলকাতা পুলিশ সূত্রে খবর,  শান্তার বাড়ি বাংলাদেশের বরিশালে। বাংলাদেশের দুই নামী সংস্থার মডেল ছিলেন তিনি। একাধিক বিউটি প্রতিযোগিতায় নাম দিয়েছিলেন। কলকাতায় অ্যাপ ক্যাবের ব্যবসা করতে গিয়েই পুলিশের জালে ধরা পড়েছেন তিনি। পার্কস্ট্রিট থানার পুলিশ যাদবপুর থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার করে।

সূত্রের খবর, মেডিক্যাল পাসপোর্ট নিয়ে ভারতে এসেছিলেন শান্তা। ভারতে থাকার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও কলকাতায় থেকে যান। তাঁর কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া দুটি আধার কার্ডের একটির ঠিকানা কলকাতা। এবং অন্য আধার কার্ডের ঠিকানা বর্ধমান। কলকাতার পাশাপাশি বর্ধমানের ঠিকানা পেতে কে বা কারা সাহায্য করল, সে ব্যাপারেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে শান্তাকে, এমনটাই খবর পুলিশ সূত্রে

এখানে থেকে গাড়ির ব্যবসা করতে চেয়েছিলেন শান্তা। সেইজন্য তাঁর নথি বিভিন্ন জায়গায় দেওয়া হয়। সেই নথি দেখে সন্দেহ হতেই লালবাজারের নজরে আনা হয় বলে সূত্রের খবর। ট্রাভেল এজেন্সির সঙ্গে হোটেল ব্যবসার জন্য একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে ঋণেরও আবেদন করেছিলেন শান্তা। এমনকি, সেই ঋণ মঞ্জুরও করেছিল ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কটি। আর ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ পেতে তিনি কী নথি জমা দিয়েছিলেন, তা জানতে চাইছে পুলিশ। এর পাশাপাশি তাঁর হাত ধরে অবৈধভাবে কতজন বাংলাদেশি ভারতে এসেছেন এবং তাঁরা এখন কোথায় রয়েছেন, তাও জানতে তৎপর লালবাজার।

আর সেই কারণে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দারা শান্তা পালের সোশাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টও খতিয়ে দেখেছেন ৷ সেখান থেকে আরও নানা চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে পুলিশ। লালবাজার সূত্রের খবর, তাঁর সোশাল মিডিয়া পেজ ঘেঁটে দেখা গিয়েছে, ভারতে ভিসা জোগাড়ে বাংলাদেশিদের পরামর্শ দিতেন তিনি ৷ বিশেষ করে গত অগাস্টের পর যখন ভারতে বাংলাদেশি নাগরিকদের টুরিস্ট ভিসা দেওয়া হচ্ছিল না, তখন এদেশের আসার জন্য মেডিক্যাল ভিসার জন্য আবেদনের পরামর্শ দেন তিনি ৷

লালবাজার সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, আসান ট্রাভেলস কলকাতা অ্যান্ড বাংলাদেশ নামে সোশাল মিডিয়ায় একটি পেজ খুলেছিলেন শান্তা ৷ সেখানে নিজের ট্যুরিজম ব্যবসার প্রচার চালাচ্ছিলেন শান্তা পাল। এর পাশাপাশি হোটেল খোলার জন্য তিনি ভারতের কোনও রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক থেকে লোন নিয়েছিলেন কি না, ধৃতের ফেসবুক পোস্টের সূত্র ধরে তাও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।

তাছাড়া তিনি দিঘা থেকে শুরু করে আমাদের সিকিমের গ্যাংটক, সর্বত্র ঘুরেছেন ৷ সোশাল মিডিয়ায় তাঁর ভ্রমণের ছবি ও ভিডিয়ো পোস্ট করেছেন ৷ ট্রাভেল ব্লগার হিসেবে তিনি নাথু লা যান ৷ সেখানেই তিনি ভারতনেপালচিন সীমান্তের ছবিও তোলেন৷আর এখানেই শান্তার সঙ্গে জ্যোতি মালহোত্রার মিল পাচ্ছেন তদন্তকারীরা ৷ জ্যোতিও এভাবে ট্রাভেল ব্লগার হিসেবে ভারতের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতেন৷ সেখানকার ভিডিয়ো তুলতেন৷ তিনি গ্রেফতার হওয়ার পর জানা যায় যে সেই সব ভিডিয়োছবি তিনি পাকিস্তানে পাচার করতেন৷ আর এখানেই প্রশ্ন উঠেছে,  শান্তাও গুপ্তচর  কি না তা নিয়ে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

three × four =