আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ঘটনায় এবার মুখ খুললেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা তথা কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধি। বুধবার এই বিষয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় রাহুল গান্ধি একটি পোস্টও করেন। তিনি অভিযোগ করেছেন, নির্যাতিতা মহিলাকে ন্যায়বিচার দেওয়ার পরিবর্তে অভিযুক্তদের বাঁচানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এই প্রেক্ষিতে হাসপাতাল এবং স্থানীয় প্রশাসনের উপর গুরুতর প্রশ্ন উঠছে বলে জানান তিনি। প্রসঙ্গত, পশ্চিমবঙ্গের শাসন ক্ষমতায় আছে তৃণমূল কংগ্রেস। ইন্ডিয়া জোটের অন্যতম শরিক দল। তাই জোট ধর্ম রক্ষার্থেই পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিরুদ্ধে তিনি নীরব বলে অভিযোগ উঠছিল। মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্ট এই মামলার তদন্তভার সিবিআইকে দিয়েছে। তার একদিন পরই এই ঘটনার বিষয়ে মন্তব্য করেন রাহুল গান্ধি।
আরজি কর প্রসঙ্গে রাহুল লেখেন, ‘কলকাতায় এক জুনিয়র ডাক্তারকে ধর্ষণ ও হত্যার নৃশংস ঘটনায় গোটা দেশ হতবাক। যেভাবে পরতে পরতে তাঁর বিরুদ্ধে হওয়া নিষ্ঠুর এবং অমানবিক কাজকর্মগুলি প্রকাশিত হচ্ছে, তাতে চিকিৎসক সম্প্রদায় এবং মহিলাদের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতার পরিবেশ তৈরি হয়েছে।’ রাহুল আরও বলেছেন, এই ঘটনার ফলে ভাবতে হচ্ছে, মেডিকেল কলেজের মতো জায়গায় যদি ডাক্তাররা নিরাপদ না থাকেন, তাহলে বাবা-মায়েরা কীভাবে তাঁদের মেয়েদের পড়াশোনা করতে বাইরে পাঠাবেন? নির্ভয়া মামলার পর ধর্ষণ সংক্রান্ত আইন কঠোর করা হয়েছিল। তারপরও এই ধরনের অপরাধ রোধ করা যাচ্ছে না কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা।
এরই পাশাপাশি হাথরস থেকে উন্নাও, কাঠুয়া থেকে কলকাতা – মহিলাদের বিরুদ্ধে এই ধরনর অপরাধের ঘটনা ক্রমেই বাড়ছে। কীভাবে এই অপরাধ বন্ধ করা যায়, সেই বিষয়ে প্রতিটি রাজনৈতিক দল এবং সমাজের প্রতিটি অংশকে নিয়ে গুরুতর আলোচনার আহ্বান জানান তিনি। এই ঘটনার দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন কংগ্রেস নেতা। তিনি লিখেছেন, ‘এই অসহ্য যন্ত্রণাযর সময়, আমি নিহতের পরিবারের পাশে আছি। যে কোনও মূল্যে তাদের ন্যায়বিচার পাওয়া উচিত এবং অপরাধীদের এমন শাস্তি দেওয়া উচিত যাতে এটি সমাজে একটি উদাহরণ তৈরি হয়।’
রাহুল গান্ধির এই মন্তব্যের কড়া প্রতিক্রিয়া আসে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষের পক্ষ থেকে। হাথরস, উন্নাও, কাঠুয়ার ঘটনার সঙ্গে এই ঘটনাকে এক করে দেখা উচিত নয় বলে জানিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘রাহুল গান্ধির বাবা রাজীব গান্ধি প্রধানমন্ত্রী থাকার সময় রাজস্থানে ভারতের শেষ সতীদাহর ঘটনা ঘটেছিল। রাজীব গান্ধি কি পদত্যাগ করেছিলেন? রূপ কানোয়ারকে জীবন্ত চিতায় তুলে দেওয়া হয়েছিল। হাথরস, উন্নাওয়ের ক্ষেত্রে যোগী সরকার কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। বরং নির্যাতিতার আত্মীয়দের হত্যা করা হচ্ছিল। এখানে মুখ্যমন্ত্রী ব্যবস্থা নিয়েছেন। তিনি ফাঁসি চেয়েছেন। অভিষেক এনকাউন্টার চেয়েছে। আসলে রাহুল গান্ধির দল সাতাত্তরের পর পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় নেই। কেন্দ্রেও ক্ষমতায় নেই অনেকদিন। তাই দায়িত্বজ্ঞানহীনের মতো মন্তব্য করতে ওঁর অসুবিধা হয় না।’