শীত বিদায়ের পর থেকেই বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছিল আলিপুর আবহাওয়া অফিস। সেই পূর্বাভাস মেনে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই আকাশের মুখ ভার ছিল। বেলা বাড়তেই মেঘে ছেয়ে যায়। বেলা সোয়া ১১টা থেকে আকাশ কালো করে কলকাতায় নামে ঝেঁপে বৃষ্টি। সঙ্গে ছিল বজ্রবিদ্যুৎ-এর ঝলকানি। সঙ্গে দোসর ঝোড়ো হাওয়া। তবে শুধু কলকাতা নয়, সকাল থেকে বৃষ্টি শুরু হয় পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমানে। সকাল থেকেই পশ্চিম বর্ধমানে মেঘলা আকাশ। সেইসঙ্গে শুরু হয় বৃষ্টিপাত।
এদিকে মাঘের শেষ থেকেই দক্ষিণবঙ্গ থেকে উধাও শীত। ঠাণ্ডার জায়গায় অনুভূত হতে থাকে গরমের আমেজ। তার জেরে দিনের বেলায় রীতিমতো ঘাম হচ্ছিল। কিন্তু জোড়া ঘূর্ণাবর্ত এবং সক্রিয় অক্ষরেখার প্রভাবে আচমকাই হাওয়া বদল। আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর আগেই জানিয়েছিল, বৃহস্পতিবার থেকে ঝেঁপে বৃষ্টি হবে কলকাতা-সহ পশ্চিমের কিছু জেলায়। বাদ পড়বে না নদিয়া, হাওড়া, উত্তর ২৪ পরগনাও। এদিন সকাল থেকেই সেই পূর্বাভাস সত্যি করে বৃষ্টি নামে রাজ্যজুড়ে। বেলা যত বেড়েছে বৃষ্টির দাপট ততই বেড়েছে। তবে এর প্রভাবে শীতের আমেজ ফেরার সম্ভাবনা নেই। বিক্ষিপ্তভাবে টানা চার দিন বৃষ্টি হলেও তাপমাত্রার বড়সড় পরিবর্তন হবে না। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নতুন করে উল্লেখযোগ্য ভাবে কমার সম্ভাবনা নেই বলে মনে করছেন আবহাওয়াবিদরা। আলিপুর আবহাওয়া দতফতরের পূর্বাভাস রবিবার পর্যন্ত বৃষ্টি চলবে। শনিবার বৃষ্টির পরিমাণ ও ব্যাপকতা বাড়বে।
ইতিমধ্যেই রাজ্যে জারি হয়েছে কমলা-হলুদ সতর্কতা। সকাল থেকেই বৃষ্টি হয় বাঁকুড়া-বর্ধমান জেলায়। বৃষ্টির সঙ্গে ঝড়-বজ্রপাতের আশঙ্কা। আবাহওয়া দফতর সূত্রে খবর, রবিবার পর্যন্ত এই আবহাওয়াই বজায় থাকবে। তার আগে হাওয়া বদলের কোনও সম্ভাবনা নেই।
অপরদিকে, উত্তরবঙ্গে দার্জিলিং-এর উঁচু পার্বত্য এলাকায় হতে পারে হালকা তুষারপাত। তুষারপাতের সম্ভাবনা থাকবে আগামী রবিবার পর্যন্ত। বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকবে সোমবার পর্যন্ত। জলপাইগুড়ি জেলায় বৃষ্টির সম্ভাবনাও থাকছে। এ দিকে, হুগলি-বর্ধমান-পশ্চিম মেদিনীপুর সহ একাধিক জেলায় ঝড়-বৃষ্টি শুরু হয়েছে। সঙ্গে পড়ে শিল।
তবে আবহাওয়ার এই খামখেয়ালিপনায় কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে আলু চাষিদের। চন্দ্রকোনায় এই সময় মাঠ থেকে জলদি আলু তথা পোখরাজ আলু তোলার কাজ চলছে। এমনিতেই নতুন আলু তুলতে গিয়ে দাম নেই, তার উপর আলু কেনায় আগ্রহ নেই ব্যবসায়ীদেরও। মাঠে মজুত রয়েছে নতুন আলু। অসময়ের ভারি বৃষ্টিতে আলুতে ক্ষতির আশঙ্কা করছেন চাষিরা। সঙ্গে প্রভাব ফেলবে আমের মুকুলেও।