দুই বিধায়কের শপথ বিতর্কে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া রাজভবনের। প্রসঙ্গত, নবনির্বাচিত দুই জয়ী বিধায়কের শপথ নিয়ে টানাপোড়েন নিয়ে উষ্মাপ্রকাশ করেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিকে বৃহস্পতিবার নবান্নের বৈঠকে মমতা দাবি করেন মহিলারা রাজভবনে যাওয়ার ক্ষেত্রে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। রাজ্যপালকে নিশানা করে তিনি বলেন, ‘জেতার পর একমাস ধরে বসে রয়েছেন আমার বিধায়করা। শপথ নিতে দিচ্ছেন না। মানুষ ওঁদের নির্বাচিত করেছেন। শপথ নিতে না দেওয়ার কী অধিকার রয়েছে ওঁর? স্পিকারকে দায়িত্ব দেবেন রাজ্যপাল, অথবা ডেপুটি স্পিকারকে দেবেন, তা না হলে নিজে বিধানসভায় আসবেন! রাজভবনে কেন যাবেন সবাই? রাজভবনের যা কীর্তি, তাতে মেয়েরা যেতে ভয় পাচ্ছেন। আমার কাছে অভিযোগ করেছেন তাঁরা।’ যদিও রাজভবনের পাঠানো সায়ন্তিকার চিঠিতে কোথাও সেকথার উল্লেখ ছিল না। সেক্ষেত্রে কীভাবে একজন জনপ্রতিনিধি প্রকাশ্যে একথা বলতে পারেন, বিবৃতিতে সেই প্রশ্ন তোলা হয়েছে।
এদিকে দুপাতার লম্বা বিবৃতিতে রাজভবনের তরফে দাবি করা হয়েছে, নবনির্বাচিত বিধায়কদের গত ২৬ জুন শপথের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। সেই মতো ব্যবস্থাপনাও করা হয়েছিল। তবে সায়ন্তিকা কিংবা রেয়াত দুজনের কেউই আসেননি। শপথ গ্রহণ বিধানসভাতেই হোক এমন দাবি জানিয়ে চিঠিও পাঠিয়েছিলেন বরাহনগরের নবনির্বাচিত বিধায়ক সায়ন্তিকা। সদ্যনির্বাচিত বিধায়কেরা রাজ্যপালকে জানিয়েছিলেন, তাঁরা শপথ বিধানসভাতেই নিতে চান। তার প্রেক্ষিতে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান বিধানসভায় স্থানান্তরিত করার ব্যাপারে ভাবনা চিন্তাও করছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। কিন্তু সেই আবহে মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, রাজভবনে মহিলারা যেতে ভয় পাচ্ছেন। মহিলারা নিরাপদ বোধ করছেন না! যদিও রাজভবনের বিবৃতিতে দাবি, নতুন বিধায়কেরা রাজভবনে যে চিঠি দিয়েছেন, তাতে তাঁদের রাজভবনে না আসা নিয়ে কিছু বক্তব্য ছিল না।
এদিকে শুক্রবার বিধায়কদের শপথ নিয়ে উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়কে ফোন করলেন রাজ্য বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। পুরো বিষয়টি তিনি উপরাষ্ট্রপতিকে জানান। বিষয়টি দেখার আশ্বাস দেন ধনখড়। এর আগে জটিলতা কাটাতে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকেও চিঠি দেন বিধানসভার স্পিকার। অন্যদিকে বৃহস্পতিবারের পর শুক্রবারও বিধায়ক রায়েত হোসেন সরকার এবং সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ধরনা অব্যাহত। এদিন বিধানসভা চত্বরে আম্বেদকরের মূর্তির নিচে ধরনায় বসেছেন দুই বিধায়ক।