কসবা কাণ্ডের পর মুখ খুলে এখন দলের অন্দরেই রোষের মুখে রাজন্যা। টিএমসিপি–র প্রাক্তন নেত্রীকে এখন একের পর এক তোপ দাগছেন শাসক নেতৃত্বের একাংশ। রবিবার অতীনকন্যার পর রাজন্যার নাম না করে এবার তোপ দাগতে দেখা গেল জুঁই বিশ্বাসকে। নিজের সামাজিক মাধ্যমে তিনি লেখেন, ‘যোগ্যতা বিচারের জন্যও যোগ্যতা লাগে। যাঁরা একে মাথায় তুলেছিলেন, তাঁদের যোগ্যতা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে। না নেত্রী হওয়ার যোগ্যতা রয়েছে, না অভিনেত্রীর। দুদিনে এসেই নেত্রী? কোভিড কিংবা প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে এদের মুখ কেন দেখতে পাওয়া যায় না। শুধু ব্যক্তিগত এজেন্ডা নিয়ে রাজনীতি করতে আসা।’
কসবার ঘটনার পর রাজন্যার ঘটনা প্রসঙ্গে জুঁই এও জানান, ‘ঘটনাটি আমি তিন চারদিন ধরে টিভির পর্দায় দেখছি। দলের একজন কর্মী, জনপ্রতিনিধি হিসাবে এটা অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা।’এরপরই এই ইস্যুতেই জুঁই এ প্রশ্নও তোলেন, ‘যদি কোনও মহিলার সঙ্গে এই ধরনের ঘটনা ঘটে, তাহলে এতদিন চুপ করে ছিলেন কেন? তিনি তো একজন পড়াশোনা করা মহিলা। নেত্রী বলছেন নিজেকে, তিনি নিজেকেই যদি রক্ষা করতে না পারেন, তাহলে নেত্রী হিসাবে বাকিদের জন্য কী করবেন? প্রশ্ন দুই, তিনি কেন এতদিন চুপ ছিলেন?’ পাশাপাশি এও বলেন, ‘যৌন হেনস্থা হলে মহিলাদের জন্য দেশে আইন রয়েছে। তিনি আইনের দ্বারস্থ হতে পারতেন।’ সঙ্গে এও বলেন, ‘হতেই পারে তিনি পরে মুখ খুলেছেন। কিন্তু তারও একটা নির্দিষ্ট সময় রয়েছে। যদি তিনি সত্যিই নিগৃহীত হন, তাহলে তখনই কেন দলকে জানাননি?’
এই একই সুর ছিল অতীন কন্যা প্রিয়দর্শিনী ঘোষের গলাতেও। তিনিও প্রশ্ন তুলেছিলেন, ‘এতদিন কেন চুপ ছিলেন রাজন্যা? কেন দলকে জানাননি? দল বা প্রশাসনের কাছে না গিয়ে মিডিয়ার কাছে মুখ খুলে ‘মুখ’ হওয়ার চেষ্টা করছেন কেন?’
উল্লেখ্য, কসবা কাণ্ডের পর রাজন্যা মন্তব্য করেছিলেন, কসবাকাণ্ডে মূল অভিযুক্তের মতো আরও অনেকেই রয়েছেন।যদিও রাজন্যার বক্তব্য তিনি নাকি তখনই দলকে জানিয়েছিলেন। এর পরই রাজন্যা এও জানান, ‘আমি জানি প্রশ্ন উঠছে, আমি তখন কেন বলিনি, এখন কেন বলছি? আসলে আমি তখনই দলকে বলেছি। আমাদের দলে এরকম অনেক মেয়ে রয়েছে, যাদের সঙ্গে এটা হয়েছে। আমি তাদের ভয়েস হিসাবে বলছি। এমন নয় যে, একার বক্তব্য বলছি। আমি আমার উচ্চ নেতৃত্বকে জানিয়েছি।’
এই প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘হঠাৎ নেতা–নেত্রী হয়ে গেলে, এমনটাই হয়। যে যার মতো আসছে, যে যার মতো চলে যাচ্ছে। নেত্রী তাদের সামলাতেই ব্যস্ত। প্রশাসন কোথায় কেউ জানে না।’