যাদবপুরের উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করতে হাসপাতালে বিক্ষোভরত পড়ুয়াদের প্রতিনিধিরা

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য ভাস্কর গুপ্ত অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। শনিবার তাঁর সঙ্গে দেখা করতে গেলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিক্ষোভরত পড়ুয়াদের ৪-৫ জনের একটি প্রতিনিধি দল। এর আগে শুক্রবার তাঁকে দেখতে হাসপাতালে গেছিলেন যাদবপুরের ঘটনায় আহত ছাত্র ইন্দ্রানুজ রায়ের বাবা।

গত শনিবার তৃণমূলপন্থী অধ্যাপকদের সংগঠন ওয়েবকুপার বার্ষিক সম্মেলনে যোগ দিতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। সেখানে মন্ত্রীকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান যাদবপুরের বামপন্থী, অতি বামপন্থী সংগঠনের সদস্যেরা। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে একাধিক ছাত্র আহত হন বলেই অভিযোগ। এই ঘটনার দায় উপাচার্যের বলে তাঁকে বৈঠকে বসার জন্য ডেডলাইন দিয়েছিল ছাত্ররা। তবে অসুস্থতার কারণে তিনি সময় দিতে পারেননি।

এরপরই যখন বিক্ষোভরত ছাত্ররা আরও বড় আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিচ্ছে সেই সময়ই জানা যায়, উপাচার্যের শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয়েছে এবং তিনি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। গত মঙ্গলবার সকালে তাঁর রক্তচাপ মাত্রাতিরিক্ত বেড়ে গিয়ে ১৭০-৯০ পর্যন্ত পৌঁছে যায়। চিকিৎসকদের আশঙ্কা ছিল, এতে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হতে পারে। তাই তাঁকে বাইপাসের ধারের এক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এদিকে আজ ছাত্ররা উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ায় প্রশ্ন উঠেছিল যে তারা কোনও দাবি-দাওয়া রাখবে কিনা। যদিও প্রতিনিধি দলের তরফে বলা হয়েছে, সৌজন্যের খাতিরেই তারা অসুস্থ উপাচার্যকে দেখতে এসেছিলেন। কোনও দাবি করতে আসেননি।

এদিকে চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, ধীরে ধীরে উন্নতি হচ্ছে তাঁর। আপাতত স্থিতিশীল বলা যায়। তাঁর চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাস জানান, ২০১৫ সালে তাঁর বড় স্ট্রোক হয়েছিল। তাই এই বিষয়টি ভাবার রয়েছে। সেই প্রেক্ষিতে ওষুধ চলছে এবং চিন্তা যাতে উনি কম করেন, তার চেষ্টা করছেন তাঁরা। স্বস্তির বিষয়, এমআরআই-তে খারাপ কিছু আসেনি। আর বাকি যে পরীক্ষাগুলো করা হয়েছিল তাও খারাপ নয়।

একইসঙ্গে চিকিৎসক এও জানান, ‘আমরা আস্তে আস্তে প্রেশার কমাই। কম করে ১০ থেকে ১৪ দিন তো সময় লাগবে তাঁকে সম্পূর্ণ সুস্থ করতে।’ তবে রক্তচাপ স্বাভাবিক না হওয়ার কারণ সম্পর্কে স্পষ্ট কিছু বলেননি তিনি। শুধু জানান, যা ঘটেছে বা ঘটছে তার জন্য ক্রমাগত চিন্তা করা একটা ফ্যাক্টর। আরও নানা কারণ থাকতে পারে। তবে মূলত ওই কারণেই কিনা, তা বলা যায় না।

যাদবপুরের ঘটনা যে বড় প্রভাব তাঁর শরীরের ওপর ফেলেছে তা কার্যত স্পষ্ট। এক্ষেত্রে তাঁকে টিভি থেকে, মোবাইল থেকে, এই বিষয় নিয়ে লোকের সঙ্গে আলোচনার থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বলে জানান তাঁর চিকিৎসক।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

14 − three =