তিলোত্তমা কাণ্ডে ডেথ সার্টিফিকেট নিয়ে প্রশ্নের মুখে আরজি কর কর্তৃপক্ষ

তিলোত্তমা-কাণ্ডে ফের কাঠগড়ায় আরজি কর কর্তৃপক্ষ। ঘটনার ছ’মাস পর‌ও মেয়ের ডেথ সার্টিফিকেট পেতে নাজেহাল বাবা-মা। কারণ, সেখানে বেশ কিছু নথির সমস্যা রয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। ফলে এই ডেথ সার্টিফিকেট নিয়ে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও কলকাতা পুরনিগমের বক্তব্যে তুঙ্গে বিতর্ক।

এম‌এসভিপি-র দাবি, চিকিৎসাধীন রোগীর মৃত্যু হলে তবেই ডেথ সার্টিফিকেট ইস্যু করে হাসপাতাল। তাঁর বক্তব্য, হাসপাতালে মৃত অবস্থায় কোন‌ও রোগীকে আনা হলে, সে ক্ষেত্রে ডেথ সার্টিফিকেট ইস্যু করে পুরসভা। হাসপাতাল চত্বরে কোন‌ও রোগীর মৃত্যু হলে, সে ক্ষেত্রেও পুরসভাই ডেথ সার্টিফিকেট ইস্যু করে বলে জানান তিনি। এদিকে, উল্টো কথা বলছেন কলকাতা পুরসভার বরো ওয়ানের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিরা। কেএমসি-র এক্সিকিউটিভ হেলথ অফিসারের দাবি, তিলোত্তমার দাহ সংক্রান্ত নথি, ময়নাতদন্তের কাগজে মৃত্যুর স্থান হিসেবে লেখা রয়েছে আরজি করের নাম। তাই ডেথ সার্টিফিকেট দেবে আরজি কর।

আর এখানেই ফের প্রশ্ন উঠল স্বাস্থ্য দফতরের পরিকাঠামো নিয়ে। পুরনিগমের সঙ্গে তাদের যে বোঝাপড়ার অভাব রয়েছে তা ডেথ সার্টিফিকেট তৈরির পদ্ধতিতেও স্পষ্ট। এই প্রসঙ্গে তিলোত্তমার বাবা বলেন, নিয়ম মেনে মেয়ের মৃত্যু ঘোষণা করা হয়নি, তাই ডেথ সার্টিফিকেট ঘিরে জটিলতা তৈরি হয়েছে। এই ঘটনায় এ প্রশ্নও উঠছে যে, ডেথ সার্টিফিকেট তৈরি না হলে কোর্ট নথিতে কীভাবে তার উল্লেখ করা হবে তা নিয়েও।

এদিকে তিলোত্তমা মামলায় এমার্জেন্সি মেডিক্যাল অফিসার পলি সমাদ্দারের বয়ানে ডেথ সার্টিফিকেট ইস্যুর উল্লেখ রয়েছে। কোর্টে ইএম‌ও জানিয়েছেন, টালা থানার এস‌আই-এর হাতে ডেথ সার্টিফিকেট দিয়েছেন তিনি। প্রশ্ন হল কোর্টের নথিতে উল্লিখিত ওই ডেথ সার্টিফিকেটের তাহলে কিসের ভিত্তিতে তা নিয়ে তৈরি হয়েছে এক বড় প্রশ্নচিহ্ন।

আর এখানেই তিলোত্তমার বাবার দাবি, শুরু থেকেই যে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে, এই ঘটনা তার প্রমাণ‌। সঙ্গে এ প্রশ্নও তোলেন, ‘ডেথ সার্টিফিকেট তৈরি না হলে এমার্জেন্সি মেডিক্যাল অফিসার কোর্টে কী ভাবে বলেন, ডেথ সার্টিফিকেটের নথি তিনি টালা থানার এস‌আইকে দিয়েছেন?’ এই প্রসঙ্গে তিলোত্তমার মা বলেন, ‘সারা দেশবাসী দেখুক, বিচার তো পেলাম না। এখন ডেথ সার্টিফিকেট‌ও পাচ্ছি না। কোন রাজ্যে বাস করছি! আমার মেয়েকে কেন মৃত অবস্থায় আনা হয়েছে বলা হচ্ছে। আমার মেয়ে তো ওখানে কর্তব্যরত অবস্থায় খুন হয়েছে। ঘটনা তো বাইরে ঘটেনি?’

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

two + 19 =