আরপিএফ-এর তৎপরতায় ধরা পড়ল ভুয়ো রেল চাকরি দেওয়ার ব়্য়াকেট

গত ২১ নভেম্বর বেলা ১২টা ২০-তে পূর্ব রেলের ওল্ড কয়লাঘাট ভবনের পূর্ব দিকের প্রবেশ পথে কর্তব্য়রত রেলওয়ে পুলিশ ফোর্সের হেড কনস্টেবল সন্দেহজনকভাবে এক ব্যক্তিকে ঘোরাঘুরি করতে দেখেন। এরপর কর্তব্য়রত ওই হেড কনস্টেবল বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিতও করেন। ঘটনা জানতে পেরে এস আই, এ এস আই এবং এইচডি কনস্টেবল নিয়ে গঠিত আরপিএফ কর্মীদের একটি দল আরপিএফের পোস্ট কমান্ডারের তত্ত্বাবধানে ওই ব্যক্তিকে অনুসরণ করা শুরু করে। ওই সন্দেহভাজন ব্যক্তি যখন অন্য এক ব্যক্তির সঙ্গে গেটে প্রবেশ করে কয়লাঘাট চত্বরে প্রবেশ করার পথে আরপিএফের এই দলটি তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। জিজ্ঞাসাবাদের সময় ওই ব্যক্তি তাঁর পরিচয় হিসেবে জানায়, তিনি রজত দে সরকার। উত্তর ২৪ পরগনার নৈহাটির বাসিন্দা এবং অপর ব্যক্তির নাম সৌমেন হুই।  পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়ফার বাসিন্দা।

আরও জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, সৌমেন হুই জানান, এই ঘটনার প্রায় ২ থেকে ৩দিন আগে মেদিনীপুরে তার বন্ধু সুজিত বাগের মাধ্যমে রজত দে সরকারের সাথে তার পরিচয় হয়। এরপর সৌমেনবাবুর বন্ধু তাকে কয়লাঘাটে রজত দে সরকারের সঙ্গে দেখা করতে বলে এবং সঙ্গে এও জানায় যে রজতবাবু রেলে গ্রুপ-সি পদে টিকিট কাউন্টার অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসাবে রেলওয়েতে চাকরির ব্যবস্থা করতে পারে। সেই আশ্বাস পেয়েই কলকাতায় আসেন সৌমেনবাবু। এরপর রজতবাবুর সঙ্গে কয়লাঘাট বিল্ডিংয়ের পূর্ব দিকের গেটে দেখা করেন। এরপর রজতবাবু রজতবাবু কয়লাঘাট চত্বরের পাশে একটি ফাঁকা জায়গায় নিয়েও যান। রজতবাবু সৌমেনবাবুর বিশ্বাস অর্জনের জন্য একটি উপস্থিতির রেজিস্টার এবং চুক্তিপত্র দেখান। এরপরই রজতবাবু সৌমনবাবুর কাছ থেকে চাকরি করে দেওয়ার জন্য ৫০ হাজার টাকাও দিতে বলেন। পাশাপাশি এও বলেন যে বাকি ৫ থেকে ৬ লক্ষ টাকা চাকরি পাওয়ার পর দেওয়া হবে। তখনই সৌমেনবাবু রজতবাবুকে জানান, এত টাকাতাঁর কাছে নেই। এদিকে, আরপিএফ কর্মীরা ততক্ষণে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন এবং তাদের আটক করে। আরও জিজ্ঞাসাবাদে, অভিযুক্ত রজত দে সরকার আরপিএফ-এর কর্মী আধিকারিকদের সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারেনি এবং পরে স্বীকারও করেন যে তিনি একটি ভুয়ো রেলের চাকরি দেওয়ার চক্রের সঙ্গে অবৈধ ব্যবসায় জড়িত। পূর্ব রেলের ভিজিলেন্স বিভাগের দলও এই ঘটনার তদন্তে নামে এবং জাল চাকরির চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি খুঁজে পায়। পরে, রজত দে সরকার এবং সৌমেন হুইকে হেয়ার স্ট্রিট থানার হাতে তুলে দেওয়া হয়। সেখানে সৌমেনবাবু রজতবাবুর বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করেন এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে হেয়ার স্ট্রিট থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এদিনের এই ঘটনা প্রমাণ করে ইস্টার্ন রেলের সিকিউরিটির দায়িত্বে থাকা প্রত্যেকেই কতটা সজাগ। কোনও ধরনের বেনিয়মের ঘটনায় কত দ্রুত তাঁরা পদক্ষেপ করে।

এই সূত্রে পূর্ব রেল সবাইকে সতর্ক থাকার এবং অবৈধ চাকরির চক্রের শিকার না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। রেলওয়ে রিক্রুটমেন্ট বোর্ড (আরআরবি) এবং রেলওয়ে রিক্রুটমেন্ট সেল দ্বারা জারি করা আনুষ্ঠানিক বিজ্ঞপ্তির উপর ভিত্তি করে একটি সু-সংজ্ঞায়িত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে রেলওয়ের চাকরিগুলি সুরক্ষিত করা হয়। রেল রিক্রুটমেন্টে বোর্ডের তরফ থেকে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ স্বচ্ছ বলেও জানানো হয়েছে। সঙ্গে এর কোনও শর্টকাট নেই বলেও সতর্ক করা হযেছে।

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

one × three =