অবশেষে পুলিশের জালে সাদ্দাম। বুধবার গভীর রাতে পুলিশের হাতে ধরা পড়ে কুলতলির সাদ্দাম সর্দার। চুপড়িঝাড়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা থেকে সাদ্দামকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। সঙ্গে এও জানানো হয়েছে, নকল সোনা প্রতারণা চক্রের অন্যতম পাণ্ডা সাদ্দাম মাছের ভেড়ির চালাঘরে লুকিয়ে ছিল। বুধবারও পুলিশকে দেখে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে সাদ্দাম। কিন্তু এবার আর সুবিধা করতে পারেনি। পুলিশের জালে ধরা পড়ে নকল সোনা প্রতারণার মাথা। পুলিশ সূত্রে এ খবরও মিলেছে, বৃহস্পতিবারই তাকে বারুইপুর মহকুমা আদালতে পেশ করা হবে।
প্রসঙ্গত, সোমবার হাতের নাগাল থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল সাদ্দাম। তাঁকে তন্নতন্ন করে খুঁজছিল পুলিশ। গোপন সূত্রে খবর পেয়েই বুধবার রাতে কুলতলির চুপড়িঝাড়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় অভিযান চালায় পুলিশ। জানা গিয়েছে, সেখানে একটি মাছের ভেড়ির চালাঘরে লুকিয়ে ছিল সোনা পাচার চক্রের মাথা সাদ্দাম। রাত ১ টা ১৫ মিনিট নাগাদ চালাঘর ঘিরে ফেলে পুলিশ। তখন ঘুমোচ্ছিলেন সাদ্দাম। পুলিশকে দেখেই ফের পালানোর চেষ্টা করলেও তাকে হাতেনাতে ধরে ফেলে পুলিশ। সাদ্দামের আশ্রয়দাতা মান্নান খানকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এই মান্নান আবার এলাকার সিপিআইএম নেতা। এখনও পর্যন্ত অধরা সাদ্দামের ভাই সানু সর্দার।
প্রথম থেকেই পুলিশের ধারণা ছিল, সাদ্দাম বেশি দূর পালাতে পারেনি। আশেপাশের সবকটি থানাকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছিল আগেই। পাশাপাশি সিভিক ভলেন্টিয়ারদের কাছেও সাদ্দামের ছবি পাঠিয়ে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছিল। গোপন সূত্রে খবর পেয়েই বুধবার রাতে অভিযান চালায় পুলিশ। ধরা পড়ে সাদ্দাম।
এই প্রসঙ্গে বলে রাখা শ্রেয়, নামেই সোনার ব্যবসায়ী সাদ্দাম। আসল সোনার মূর্তির ছবি দেখিয়ে নকল মূর্তি বিক্রি থেকে শুরু করে ডাকাতি, নানা কুকীর্তির অভিযোগ রয়েছে এই সাদ্দামের বিরুদ্ধে। সোনার মূর্তি ও সোনা পাচার চক্রের খোঁজেই কুলতলির পয়তারাহাটে তল্লাশি অভিযান চালায় পুলিশ। সাদ্দামের বাড়ির কাছে পৌঁছতেই পুলিশকে লক্ষ্য করে চলে গুলি। তারই মাঝে উধাও হয়ে যান সাদ্দাম ও তাঁর ভাই। অভিযোগ, কার্যত পুলিশের হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় সাদ্দামকে। এই অভিযোগে দুই মহিলাকেও গ্রেফতার করে পুলিশ।
পরে সাদ্দামের বাড়িতে তল্লাশি চালাতে গিয়েই বেডরুমের খাট সরাতেই বেরিয়ে আসে গোপন সুড়ঙ্গ। কংক্রিটের ওই সুড়ঙ্গ গিয়ে সোজা মিলেছে মাতলা নদীর কাঁকড়া খালে।
তদন্তে এখনও পর্যন্ত জানা গিয়েছে, বিগত ১৫ বছর ধরে নকল সোনা বিক্রির ব্যবসা করত সাদ্দাম। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমেই মূলত নকল সোনার মূর্তি বিক্রির টোপ ফেলত। মূল টার্গেট ছিল ব্যবসায়ীরাই। নির্জন জায়গায় ডেকে, নকল মূর্তি দিয়ে বা স্রেফ ভয় দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নিত সাদ্দাম ও তাঁর শাগরেদরা। ১২ লক্ষ টাকার প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে সাদ্দামের বিরুদ্ধে। এছাড়াও রয়েছে ডাকাতি, রাহাজানি-সহ একাধিক মামলাও।